সন্দীপ্তা।
প্র: ছোট পর্দায় কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফের টেলিভিশনে ফিরলেন কেন?
উ: মেগা সিরিয়াল না করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছিলাম। হঠাৎই ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি-উত্তর পর্ব’ ধারাবাহিকে সারদামণির চরিত্রটি করার সুযোগ এল। এর আগে পিরিয়ড ড্রামায় অভিনয় করিনি। বাঙালির মনে মা সারদা এমন ভাবে বিরাজ করছেন, সেই চরিত্রে অভিনয় করাটা সকল অভিনেত্রীর কাছেই চ্যালেঞ্জিং। অভিনেত্রী হিসেবে অন্য রকম কাজ করার খিদেও অনেকটা মিটবে। আর মেগা করতে গিয়ে ওয়েব সিরিজ় ও ছবির কাজে যেন অসুবিধে না হয়, চ্যানেেলর সঙ্গে তেমনই কথা হয়েছে। মেগার মেয়াদ ছ’-সাত মাস। সব মিলিয়ে ‘না’ বলার অবকাশ ছিল না।
প্র: এক দিকে ওয়েব সিরিজ়ে সাহসী চরিত্রে, অন্য দিকে ছোট পর্দায় মা সারদা। দর্শকের মানিয়ে নিতে অসুবিধে হবে না?
উ: আমার মনে হয় না, কোনও অসুবিধে হবে বলে। যখন ‘দুর্গা’, ‘টাপুর টুপুর’ করেছি, লোকে সন্দীপ্তাকে চিনত না। সিরিয়ালের চরিত্রের নামেই আমাকে ডাকা হত। কিন্তু এখন বহু চরিত্রে আমাকে দেখে ফেলেছেন দর্শক। তাঁরা জানেন, সন্দীপ্তা সেন সারদামণির চরিত্রটি করছেন। আর যাঁরা রাণী রাসমণি দেখেন, তাঁদের অধিকাংশই ওয়েব সিরিজ় দেখেন না। দুটো মাধ্যমের দর্শক অনেকটাই আলাদা। দুটো জায়গায় কাজ করতে পারার সুবিধে, অনেক ধরনের দর্শকের কাছে পৌঁছনো যায়। একজন অভিনেত্রী নানা রঙের চরিত্র করবেন, এটাই কাম্য।
প্র: কী ভাবে প্রস্তুত হচ্ছেন সারদা মায়ের চরিত্রের জন্য?
উ: ছোটবেলা থেকেই সারদামণির বাণী শুনে এসেছি। ‘শতরূপে সারদা’ বইটি পড়ছি। আরও কয়েকটি বই পড়া বাকি আছে। সিরিয়ালের লেখিকা রাখিদির (শাশ্বতী ঘোষ) কাছ থেকেও পরামর্শ নিয়েছি। অনেক কিছু শিখলাম, রামকৃষ্ণ চরিত্রাভিনেতা সৌরভ সাহার কাছ থেকে। আর প্রথম দিন সেটে মা কালীর মূর্তিটি দেখেই চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছি।
প্র: রাণী রাসমণির চরিত্রে দিতিপ্রিয়া রায় যে ভাবে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলেন, বাড়তি চাপ অনুভব করছেন কি?
উ: মানসিক চাপ নিলে কাজের ক্ষতি হয়। এই চরিত্রটা আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং। অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়াটাই এই মুহূর্তের লক্ষ্য। দিতিপ্রিয়ার রানি রাসমণির চরিত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা নেই আমার। ও চার বছর ধরে এতটাই নিখুঁত কাজ করেছে, সেখানে আমার সঙ্গে কোনও তুলনাই আসতে পারে না। কাজটা কতটা ভাল করা যায়, তার জন্য একশো শতাংশ এফর্ট দেব। এর বাইরে আর কিছু ভাবছি না।
প্র: অন্যকে মানসিক চাপমুক্ত রাখতে কাউন্সেলিংও শুরু করেছেন...
উ: বহু বছর ধরেই সাইকোলজিস্ট হিসেবে কাজ করে আসছি। এ বার আর্থিক দিক দিয়ে অক্ষম মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। বিনা পয়সায় তাদের জন্য অনলাইনে ‘শেয়ার উইথ সন্দীপ্তা’য় থেরাপি করছি। সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় মেন্টাল হেলথ নিয়েও প্রচার করি, যাতে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষ সচেতন হন।
প্র: আপনার ডেবিউ ছবির শুটিংও শুরু হবে এই মাসে?
উ: আমার ডেবিউ ছবি মৈনাক ভৌমিকের ‘একান্নবর্তী’-র শুটিং শুরু হবে কিছু দিনের মধ্যেই। ওটাও আমার কাছে নতুন জার্নি। দু’-তিনটে ওয়েব সিরিজ়ের কথাও হয়ে আছে। সেগুলো ফাইনাল হয়ে গেলে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
প্র: রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম পরিচালিত ছবিতে ঋত্বিক চক্রবর্তীর বিপরীতে আপনার নাম শোনা গিয়েছিল...
উ: সে ছবি নিয়ে এখনও কোনও কথা এগোয়নি।
প্র: ওয়েব সিরিজ়ের জন্য ওজন বাড়িয়েছিলেন। এখন আবার কমানোর জন্য যোগাসন শুরু করেছেন নাকি?
উ: অঞ্জন দত্তের ‘মার্ডার ইন দ্য হিলস’ সিরিজ় করতে গিয়ে চরিত্রের প্রয়োজনে পাঁচ কেজির মতো ওজন বাড়াতে হয়েছিল। তাই মাস দুয়েক আগেই যোগাসনের ক্লাসে ভর্তি হই। কিন্তু লকডাউন হওয়ায় অনলাইনেই আমার কার্ডিয়ো ও পাওয়ার যোগব্যায়ামের সেশন চলছে। অনেকটাই ওজন কমেছে। সিরিয়াল বা ছবির চরিত্রটির জন্য ওজন কমানোর দরকার ছিল (হাসি)।
প্র: সন্দীপ্তা মানে পায়ের তলায় সরষে। করোনা আবহে সোলো ট্রিপ না হওয়ায় মন খারাপ করে?
উ: সোলো ট্রিপে যাওয়ার ইচ্ছে সব সময়ে রয়েছে, কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠছে না। অবসরে পুরনো ছবি দেখেই মানসভ্রমণ করি। ফেব্রুয়ারিতে দার্জিলিং গিয়েছিলাম ওয়েবের শুটিংয়ে। সময়ের আগেই শুটিং শেষ হওয়ায় অনেকটাই অবসর মিলেছিল বেড়ানোর। পরিস্থিতি ঠিকঠাক হলে আবার বেরিয়ে পড়ব ঝোলা নিয়ে।
ঈপ্সিতা বসু