রাজকুমার রাও একটা মিস্ট্রি, কিন্তু লেজেন্ড নয়

নিজের সম্পর্কে এটাই তাঁর পর্যবেক্ষণ। বছরের সবচেয়ে বেশি চর্চিত বলিউড অভিনেতার মুখোমুখি আনন্দ প্লাস নিজের সম্পর্কে এটাই তাঁর পর্যবেক্ষণ। বছরের সবচেয়ে বেশি চর্চিত বলিউড অভিনেতার মুখোমুখি আনন্দ প্লাস

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০০:১৯
Share:

রাজকুমার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

রিয়্যাল লাইফ রাজকুমার রাও আর ‘নিউটন’ চরিত্রটির মধ্যে মিল কোথায় জানেন? দু’জনেই কর্মনিষ্ঠ ও দায়িত্ববান। কাজের প্রতি প্যাশন না থাকলে কি কোনও অভিনেতা পায়ে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায়, ক্রাচের ভরসায় ছবির প্রচারে আসেন? (ফরহা খানের শোয়ে পায়ে চোট পেয়েছিলেন)। উপরন্তু ভক্তদের আবদার মেটাতে এক পায়ে দাঁড়িয়ে সেলফিও তোলেন! তিনি পারেন। কারণ অভিনয়কে ভালবাসেন।

Advertisement

রাজকুমারের নতুন অভিযান ‘বোস: ডেড অর অ্যালাইভ’ ওয়েব সিরিজ। তার প্রচারে সম্প্রতি শহরে এসেছিলেন। পাশে ছিলেন তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম সফল পরিচালক হনসল মেটা, যিনি এই সিরিজের ক্রিয়েটিভ প্রযোজকও।

Advertisement

প্র: ক্যালেন্ডারে তারিখগুলো মার্ক করেছেন?

উ: না, ওটা করিনি (চওড়া হাসি)। আমি আমার কাজ নিয়ে খুশি। কিন্তু আমি ‘এই মুহূর্তে’ বিশ্বাসী। যা হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে মেতে থাকতে চাই না। এই যেমন, ‘বোস...’-এর প্রচারে কলকাতায় এসেছি। এটাও কম গর্বের বিষয় নয়!

প্র: বছরের শুরু থেকে শেষ, দর্শকের মুখে একটাই নাম...

উ: কাজের প্রতি আমার যে নিষ্ঠা, তা দর্শক চিনেছেন। তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তবে যখন কোনও ছবি বা সিরিজ করি, বক্স অফিস বা দর্শকের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবি না। নিজের কাজ করে যেতে চাই (হাসি)।

প্র: টাইপকাস্ট হবেন না, এটাই কি আপনার মন্ত্র?

উ: হ্যাঁ, সেই চেষ্টা আছে। এক জিনিস বারবার করতে চাই না। অভিনেতা হিসেবে আমার মনে হয়, সেটা একঘেয়েমি তৈরি করে।

প্র: তার মানে সচেতন ভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?

উ: হ্যাঁ, সেটা বলতে পারেন। অভিনেতা হিসেবে নিজের ক্ষমতা যাচাই করতে চাই। তাই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিই। তাই ‘বোস...’, তাই ‘ওমের্তা’ (হাসি)।

প্র: পরদার বাইরে রাজকুমার কেমন মানুষ?

উ: হি ইজ আ ম্যান, আ মিস্ট্রি বাট নট আ লেজেন্ড (জোরে হাসি)! সত্যি বলছি, আমি ভীষণ সাধারণ। আপনি যে কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আপনার বন্ধুরা যতটা সাধারণ, আমিও ঠিক ততটাই।

(রাজকুমারের সূত্র ধরে যোগ করলেন হনসল মেটা)

হনসল: আমার দেখা সবচেয়ে সিম্পল মানুষ রাজকুমার। ও যে বছর জাতীয় পুরস্কার পেল, একটা ছবির শ্যুট করছিল। সেখান থেকে সোজা চলে এসেছিল অনুষ্ঠানে। অন্য কেউ হলে বলত, আমি এখন আরাম করব, সাক্ষাৎকার দেব। ওর সে সব নেই। ভাল অভিনেতা তাই এত স্বীকৃতি পেয়েছে। স্বীকৃতির লোভে রাজকুমার অভিনয় করে না।

প্র: মানুষের কোন তিনটি গুণ আপনার ভীষণ পছন্দের?

উ: পরিশ্রমী মানুষ পছন্দ করি। যারা অন্যের কথা আগে ভাবে, তেমন মানুষদের শ্রদ্ধা করি। আর কাজের প্রতি প্যাশন আছে এমন মানুষ পছন্দ করি। তা সে পরিচালক, অভিনেতা হোক বা সরকারি চাকুরিজীবী। বলতে পারেন, ‘নিউটন’ চরিত্রটা আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্য’ই এখন আমার জীবনের লক্ষ্য

প্র: আর কোন তিনটি বিষয় অপছন্দের?

উ: কাজের ক্ষেত্রে আলসেমি একদম বরদাস্ত করি না। আর অসৎ-মিথ্যেবাদী মানুষদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলি।

প্র: ‘ট্র্যাপড’-এর জন্য ওজন কমিয়েছিলেন। ‘বোস...’-এর জন্য মাথার অর্ধেক চুল কেটেছিলেন, ওজন বাড়িয়েছেন... প্রসেসটা উপভোগ্য নাকি কষ্টদায়ক?

উ: নিঃসন্দেহে উপভোগ করি। এটাই চেষ্টা থাকে যে, আমার চরিত্রগুলোর লুক, চালচলন আলাদা হবে। ‘নিউটন’-এর চুল যে কোঁকড়ানো হবে আর চোখ পিটপিট করবে, ওটা আমিই বলেছিলাম।

প্র: ওহ! ওটা আপনার ইনপুট ছিল?

উ: হ্যাঁ। তবে পরিচালক অমিতের (মসুরকর) অনুমতি নিয়ে সেটা করা হয়েছিল (হাসি)।

প্র: দর্শকের নজরে থাকার জন্য কি বিগ ব্যানারে কাজ করা প্রয়োজন?

উ: না, আমার সেটা মনে হয় না। ভাল গল্প বলতে হবে। তা হলে দর্শক এমনিই দেখবেন। সত্যি কথা বলতে, হিন্দি ছবির ক্ষেত্রে একটা বড়সড় পরিবর্তন আমরা দেখছি। না হলে ‘নিউটন’-এর মতো ছবি বক্স অফিস ও সমালোচক, দু’পক্ষকেই খুশি করতে পারত না।

প্র: সুভাষচন্দ্র বসুর চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে সবচেয়ে কঠিন কাজ কী মনে হল?

উ: আসলে ছবির শ্যুট শেষ হওয়ার পর মনে হল কঠিন কাজটা বাকি। ওই চরিত্রটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা বন্ধ করতে হবে। এটা কঠিন কাজ ছিল। এই পা নিয়ে প্রচারে আসতে হবে, এটাও বেশ কঠিন।

প্র: শ্যুটিংয়ের সময়ে কিছু মনে হয়নি?

উ: সকলে এই প্রজেক্ট নিয়ে ভীষণ মগ্ন ছিলাম, তাই কিছু মনে হয়নি। তবে শ্যুটিংয়ের সময়ে কলকাতার গরমে বেশ কষ্ট হয়েছিল।

প্র: অফস্ক্রিন বয়ফ্রেন্ড হিসেবে কত নম্বর দেবেন নিজেকে?

উ: দশে কুড়ি (মুচকি হাসি)।

প্র: পত্রলেখার কাছ থেকে পাওয়া সেরা কমপ্লিমেন্ট?

উ: এই প্রথম বার ও বলল, সুভাষের চরিত্র করেছি বলে আমাকে খুব হিংসে করেছে (হাসি)। তবে সেটা শিল্পী হিসেবে।

প্র: কলকাতার কী কী পছন্দ ?

উ: পত্রলেখা বাঙালি। বাঙালি সংস্কৃতির অনেক কিছু আমি জানি। ভাল লাগে দুর্গাপুজো, এখানকার মানুষ, তাদের আতিথেয়তা। খাবার তো অবশ্যই! বিবেকানন্দ পার্কের চাট খেয়েছি। সঙ্গে মিষ্টিও (হাসি)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement