চুমু খাব না? ইমরান এমন প্রোভোক করল...

দিল্লিতে জন্ম, বড় হওয়া বেঙ্গালুরুতে। দক্ষিণী ছবিতে ন’বছর অভিনয় করলেও, বছর ছাব্বিশের কৃতি খরবন্দা ঠিক করেছিলেন কখনও অন-স্ক্রিন চুমু খাবেন না। কিন্তু, সেই ধারণাটা পাল্টে গেল বলিউডে পা রেখে।

Advertisement

সায়ন আচার্য

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০২
Share:

দিল্লিতে জন্ম, বড় হওয়া বেঙ্গালুরুতে। দক্ষিণী ছবিতে ন’বছর অভিনয় করলেও, বছর ছাব্বিশের কৃতি খরবন্দা ঠিক করেছিলেন কখনও অন-স্ক্রিন চুমু খাবেন না। কিন্তু, সেই ধারণাটা পাল্টে গেল বলিউডে পা রেখে। প্রথম ছবি, ‘রাজ:রিবুট’য়েই তাঁর উল্টো দিকে যে ইমরান হাশমি! মুম্বই থেকে যখন সায়ন আচার্য-র সঙ্গে কথা বলা শুরু করলেন, বোঝা গেল, ইমরানকে চুমু খাওয়ার রেশটা এখনও কাটেনি...

Advertisement

ভূতে ভয় পান?

Advertisement

(একটু থেমে) ভূত! হ্যাঁ, ভীষণ ভয় পাই। তবে, আমার বেশি ভয় করে আত্মাকে। অনেকেই এসব মানেন না, কিন্তু আমি মানি। পুনর্জন্মেও বিশ্বাস করি। আসলে, আমি বোধহয় একটু ভীতু। (হেসে) সেই জন্যই ভূতে ভয়।

কিন্তু শুনেছি, আপনি নাকি ভীষণ সাহসী?

মানে? কে বলল?

ইমরান হাশমি-র বিপরীতে বলিউডে অভিষেক। ‘রাজ: রিবুট’য়ে আপনার চুম্বন দৃশ্য তো এখন তুমুল জনপ্রিয়। এটা সাহস নয়?

(হেসে) আমি ভাবছিলাম, কখন ইমরানকে নিয়ে প্রশ্ন করবেন। চুমু খাওয়াটা সাহস হিসেবে ধরা হলে, সেটা আমার আছে। তবে হ্যাঁ, যেহেতু কোনও দিন চুম্বন দৃশ্যে আগে অভিনয় করিনি, একটু ভয় তো ছিলই। কিন্তু ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতেই ইমরান এমন প্রোভোক করল, যে...

কীভাবে প্রোভোক করলেন?

(একটু থেমে) আসলে আমি একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু, শ্যুট শুরু হওয়ার পরই ইমরান বলল, ‘‘সেকি, তুমি চুমু খেতে পার না? এ বাবা!’’ এবং বিশ্বাস করুন, ওই একটা কথায় কাজ হয়ে গেল। মনে হল, ঠিকই তো। এটা আর কি এমন কাজ? তারপর, প্রতিটা দৃশ্য এক টেকে ওকে হয়ে গেল। পরে ইমরান বলল, ও আসলে আমাকে প্রিপেয়ার করছিল।

(একটু থেমে) এখন মনে হচ্ছে, এতদিন কেন যে এই সব দৃশ্য করিনি! আগে শুধু মনে হত, বাবা-মা কি ভাববে, কিন্তু এখন দেখলাম...

কি?

বাবা-মাও ট্রেলরটা দেখেছেন। এবং শুধু তাই নয়, ওঁদের নাকি ভালোও লেগেছে। ছবিটা করার আগে অবশ্য আমি খুব চিন্তায় ছিলাম। একেই মধ্যবিত্ত, রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে, তার উপর আবার, ছবিতে হিরো ইমরান হাশমি (হাসি)।

মনে হচ্ছিল, বাবা-মা বাড়ি থেকে বার না করে দেয়। কিন্তু এখন সিনেমাটা দেখার পর, বাবা-মা-ই পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন।

আর ইমরান?

ইমরান তো বেশ খুশি। আসলে এই প্লেবয় ইমেজের বাইরের ইমরান মানুষটা খুব মজার, খুব অনেস্ট। শট ওকে হওয়ার পর, আমাকে কনগ্র্যাচুলেট করল। এবং ওর এই ফ্রেন্ডলিনেস এর জন্যই আমার আড়ষ্টতা কেটে গেছে। এবং নাও, আই আম রেডি ফর মোর।

চুম্বন দৃশ্যের ভয়টা কাটল তার মানে?

ডেফিনিটলি। আর, আজকাল তো সব ছবিতেই চুম্বন দৃশ্য থাকে। ওগুলো খুব ন্যাচারাল ব্যাপার। পরের ছবিতে আমিও চুম্বন দৃশ্য করতে চাই। তবে, খুব খুল্লমখুল্লা বডি শো-টা এখনও করতে পারব না।

কেন?

(একটু হেসে) আরে, সব এক সঙ্গে হয় নাকি? আর, গুডি গুডি ইমেজটা ভাঙতেও তো সময় লাগে!

দক্ষিণী ছবিতে আপনি বরাবরের ‘ভালো মেয়ে’। কিন্তু বলিউডে ইনিংস শুরু করলেন হরর ছবিতে। ভয় করেনি?

হ্যাঁ, ভয় তো ছিলই। আসলে আমি প্রথমে রাজি হইনি ছবিটা করতে, কারণ প্রথমে মনে হয়েছিল যে প্রথমেই হরর ছবি করাটা ঠিক কিনা। কিছুটা সন্দেহ ছিল। কিন্তু স্ক্রিপ্টটা পড়ার পর মনে হল, লোকের ভালো লাগবে ছবিটা। ব্যস, করে ফেললাম। তবে হ্যাঁ, শ্যুটিংয়ের সময় রোজ কেঁদেছি জানেন!

ভূতের ভয়ে?

(হেসে) না, না। আসলে, আমার চরিত্রটা একটু রুড। অনেক গালিগালাজ আছে, যেগুলো আমি দিতে চাইনি। আসলে, বাড়িতে ওই ভাবে কোনওদিন কথা বলিনি তো, তাই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। পরিচালক বিক্রম ভট্ট পাশে না থাকলে ছবিটা শেষই করতে পারতাম না।

প্রতিটা শট দেওয়ার পর, আমি সকলের কাছে গিয়ে সরি বলতাম, অত গালাগালি দেওয়ার জন্য। আমি ভীষণ রোম্যান্টিক, কোনওদিন উঁচু গলায় কথা বলতে পারি না। সেই আমিই কিনা অত গালাগালি দিচ্ছি! আসলে ওটা তো কৃতি নয়, ভূত দিচ্ছিল! (জোরে হাসি)

রোম্যান্টিক তো বুঝলাম। প্রেম করেন?

না, আমি সিঙ্গল। (হেসে) কলেজে পড়ার সময় অবশ্য একবার প্রেমে পড়েছিলাম। কিন্তু সে তো কবেই ব্রেক-আপ হয়ে গেছে। তারপর আর কেউ তো প্রেমই হল না।

সাত বছর ধরে দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করছেন। এত ফ্যান। কেউ প্রোপোজ করেনি বলছেন?

তা কেন? কত ফ্যান মেলই তো পাই। কেউ বলে আমি নাকি তার স্বপ্নের নায়িকা, আবার কেউ বলে ডেটে যেতে। কিন্তু, সেটা তো আর প্রেম নয়। ফ্যানরা এত পছন্দ করে বলেই আমি বলিউডে আসতে পেরেছি, কিন্তু সবার সঙ্গে তো আর প্রেম করা যায়না। স্বপ্নের পুরুষটা কে এখনও খুঁজছি...

কোনও ক্রাশ নেই?

(এক নিঃশ্বাসে) অব কোর্স আছে। ফারহান আখতার। ওঁর পরিচালনা আর অভিনয়ের আমি অন্ধ ভক্ত। ইস, যদি ওঁর সঙ্গে একবার দেখা হত...আচ্ছা, নেক্সট প্রশ্ন...

রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে। পড়াশোনায় ভালো। সিনেমায় এলেন কী ভাবে?

জানেন, আমার একটা ছবি দেখে, এক প্রযোজক আমায় সিনেমায় কাস্ট করতে চান। আমার বয়স তখন পনেরো। মা সঙ্গে সঙ্গে না করে দেন। কিন্তু অভিনয়ে আসাটা পুরোটাই অ্যাক্সিডেন্ট। আমি বেঙ্গালুরুতে বি কম পড়ার পর, জুয়েলারি ডিজাইনিং নিয়ে পড়া শুরু করলাম। আর সঙ্গে টুকটাক মডেলিং।

এরই মধ্যে একদিন এক পরিচালক ফোনে তেলুগু ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব দিলেন। বাড়ির ভয়ে আমি না করলাম, কিন্তু পরে দেখা গেল, মা-বাবাই আমাকে উৎসাহ দিলেন। শুরুটা এ ভাবেই...

তার পরেও ন’বছর লাগলো বলিউডে পৌঁছতে...

(একটু হেসে) হ্যাঁ, তা লাগলো। কিন্তু আমি নিজেই একটা সময়ে বাড়ি ছেড়ে মুম্বইতে সেটল হতে চাইনি। মনে হয়েছিল, আরও কিছুদিন দেখি। এই করেই হয়ে ওঠেনি। সবে তো কুড়ি দিন হল মুম্বইতে শিফট করেছি। জানেন, একা থাকাটা খুব মুশকিল। কেবল মনে হচ্ছে বাড়ি চলে যাই, আর একটা কথা বলি?

বলুন...

জানেন, এর আগে কখনও বাড়ির বাইরে একা থাকিনি। যেখানেই যেতাম, বাবা-মা সঙ্গে যেতেন। এখন তো পুরোটোই নিজের সংসার। সব দিকে নজর রাখতে হয়। ভাগ্যিস, রান্নার দিদি এসে রেঁধে নিয়ে যাচ্ছে! (হাসি)

আচ্ছা, সিনেমায় ফিরছি। ‘রাজ’' সিরিজের এর আগের দুটো ছবি তো তেমন চলেনি। এবারে চাপটা নিশ্চয়ই বেশি ছিল...

(একটু উত্তেজিত হয়ে) না, না। ‘রাজ থ্রি’ কিন্তু চার বছর আগেও চুরাশি কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। মাইন্ড ইট, ওটা কিন্তু ফ্যামিলি ফিল্ম ছিল না। তা সত্বেও অতটা ব্যবসা করা মুখের কথা নয়।

আর এবারে তো পুরোটাই নতুন। গল্প, অভিনেতা—সকলেই নতুন। আর ইমরান কেও একটা ফ্রেশ লুকে দেখছেন দর্শকরা, পছন্দও করছে। পরিশ্রম যখন করেছি, তখন খামোকা চাপ নিতে যাব কেন?

আপনার পছন্দের অভিনেত্রী কে?

বলিউডে সে ভাবে কেউ নেই... (একটু ভেবে) দীপিকা পাডুকোন। তবে, আমার প্রিয় অভিনেত্রীর নাম, জুলিয়া রবার্টস। ওঁর একটা ছবিও মিস করিনি। ইস, যদি ওরকম অভিনয় করতে পারতাম। তবে আপাতত, ওই সব কিছু না ভেবে, নিজের কাজটা করে যেতে চাই। তারপর, কে প্রিয়, কার সঙ্গে অভিনয় করতে চাই--এসব নিয়ে কথা বলব।

বলিউডে বড় ব্রেক। এর পর...

আমার সঙ্গে ‘বিশেষ ফিল্মস’-এর তিনটি ছবির চুক্তি আছে। আরও একটা ছবির কথা চলছে। আর দক্ষিণী ছবি তো আছেই। আপাতত সেই নিয়েই ব্যস্ত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement