‘আমার ছবি না চলতে পারে, কিন্তু আমি ব্যর্থ নই’

কেরিয়ারের প্রসঙ্গে এটাই ছিল সুস্মিতা সেনের জবাব। শহরে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি তিনিকেরিয়ারের প্রসঙ্গে এটাই ছিল সুস্মিতা সেনের জবাব। শহরে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি তিনি

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

ষোলো বছর বয়সে প্রথম র‌্যাম্পে হেঁটেছিলেন, আজ ৪৩ বছর বয়সেও ষোড়শীর এনার্জি অনুভব করেন সুস্মিতা সেন। ছবি: তন্ময় সেন

তাঁর প্রথম পরিচিতি র‌্যাম্প। বলিউডে সিঙ্গল মাদারের তালিকায় তাঁর নাম প্রথম দিকে। নিজের শর্তে জীবন যাপনের আর এক নাম সুস্মিতা সেন। শহরে এসেছিলেন একটি ফ্যাশন শোয়ের শো-স্টপার হয়ে। সাক্ষাৎকারের শুরুতেই শর্ত রাখা হল প্রেম, বিয়ে, ব্যক্তিজীবন নিয়ে তাঁকে কোনও প্রশ্ন করা যাবে না। অথচ ইনস্টাগ্রাম খুললেই প্রেমিক রহমান শলের সঙ্গে তাঁর ওয়র্কআউটের ভিডিয়ো চোখ এড়িয়ে যায় না। এমনকি, সম্প্রতি মেদঝরানো, ছিপছিপে চেহারার সুস্মিতা যে টেবিলে বসে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন, তার অদূরেই সোফায় বসেছিলেন খোদ রহমান। শোয়ে দর্শকাসনে, বাইট দেওয়ার সময়ে সুস্মিতার চেয়ে খানিক দূরে সর্বত্রই দেখা গেল প্রেমিকপ্রবরকে। অগত্যা প্রশ্ন করতেই হল!

Advertisement

বিয়ে করেননি... কথাটা শেষ করতে না দিয়ে সুস্মিতা শুধরে দিলেন ‘‘এখনও অবধি বিয়ে করিনি।’’ ‘এখনও’ শব্দটার উপরে এত জোর দিলেন অভিনেত্রী, মনে হল এই বছরেই তাঁকে কনের সাজে দেখা যেতে পারে। বলিউডে কান পাতলে তেমন গুঞ্জন অবশ্য শোনাই যাচ্ছে। তবে এত দিন বিয়ে করেননি কেন? সংসারী হতে ভয় পান? সাংবাদিকের চোখে চোখ রেখে এক গাল হেসে বললেন, ‘‘এখনও অবধি নিজের গর্ভে সন্তানধারণ করিনি। তা বলে বাচ্চা তো ভয় পাই না!’’

গত বছর সুস্মিতার আইকনিক গান ‘দিলবর দিলবর’-এর নতুন ভার্সনে নেচে ঝড় তুলেছিলেন নোরা ফতেহি। কিন্তু নোরা কি তাঁর উচ্চতা ছুঁতে পেরেছেন? বললেন, ‘‘এটাই আমরা ভুল করি। সব কিছুর তুলনায় চলে যাই। দুটো গানের পরিবেশন সম্পূর্ণ আলাদা। আমার গানে বেলি ডান্স ছিল না। নতুন ভার্সনে নোরা খুব ভাল বেলি ডান্স করেছে। তবে আমার মতে, যে কোনও ক্রিয়েটিভ এক্সপ্রেশন স্বতন্ত্র। অতীত বা ভবিষ্যতের কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। আমি খুব খুশি, নতুন প্রজন্মের কাছে এই গানকে নতুন ভাবে তুলে ধরার জন্য।’’

Advertisement

মডেল, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মেন্টর হিসেবে সুস্মিতার যে নামডাক, অভিনয়ের কেরিয়ারে সেই সাফল্য পাননি তিনি। ছবির ক্ষেত্রে যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে কি আপনি খুশি? জোর গলায় বললেন, ‘‘যা করেছি, তার এতটুকুও বদলাতে চাই না। আসলে আমাদের জীবন অনেক কিছুর সমষ্টি। তার মধ্যে রয়েছে সম্পর্ক, কেরিয়ার, সামাজিক কর্তব্য আবার নিজের প্রতি দায়িত্বও। অনেকেই একমুখী জীবনে বাঁচেন, সেটা তাঁদের পছন্দ। কিন্তু প্রথম থেকেই আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম, আমি বহুমুখী হয়ে বাঁচব। অনেক কিছু করতে গিয়ে কোনওটা ক্লিক করে, কোনওটা নয়। কিন্তু আমি আমার সাফল্য বা ব্যর্থতা তা দিয়ে মাপি না। আমার ছবি না-ই চলতে পারে, তা বলে আমি ব্যর্থ নই।’’

যে র‌্যাম্প তাঁর পরিচিতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সেখানেই ফিরে ফিরে পাওয়া যায় তাঁকে। ‘‘ষোলো বছর বয়সে প্রথম র‌্যাম্পে হেঁটেছিলাম। সেটাই ছিল লাইভ দর্শকের সঙ্গে আমার প্রথম যোগসূত্র স্থাপন। আমি এখন ৪৩। যত বার র‌্যাম্পে ফিরি, সেই ষোড়শীর এনার্জি অনুভব করি। আর এটায় কিন্তু কোনও এডিটিং বা কারেকশন নেই। নিজের পরিচিতির গর্ব নিয়ে যখন কেউ র‌্যাম্পে হাঁটেন, তাঁর মুখে-চোখে আলাদা ঔজ্জ্বল্য ধরা পড়ে,’’ বললেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী।

সুস্মিতা বরাবরই চেনা ছকের বাইরে। দুই মেয়ে রেনে আর আলিশা তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী। কথায় কথায় জানালেন, বড় মেয়ে রেনেও গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে চান। সে ক্ষেত্রে তাঁর সুপারমমের চেয়ে ভাল মেন্টর যে আর কেউ হবেন না, তা নিঃসন্দেহে বলাই যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement