বিক্রমের সঙ্গে ভবিষ্যতে কী হবে জানি না

প্রায়ই তাঁর দেখা না পাওয়া। ডিপ্রেশন। নতুন বয়ফ্রেন্ড। এত দিনের যাবতীয় সব উত্তর না দেওয়া প্রশ্নের জবাবে অবশেষে শ্রাবন্তী! তাঁর সামনে মোবাইল রেকর্ডার অন রাখা ইন্দ্রনীল রায়প্রায়ই তাঁর দেখা না পাওয়া। ডিপ্রেশন। নতুন বয়ফ্রেন্ড। এত দিনের যাবতীয় সব উত্তর না দেওয়া প্রশ্নের জবাবে অবশেষে শ্রাবন্তী!

Advertisement
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০১
Share:

আপনি কোথায় বলুন তো? শ্রাবন্তীকে তো দেখাই যায় না?

Advertisement

এই তো আমি...

Advertisement

সে তো আজকে। বাকি সময় তো শ্রাবন্তী হাওয়া।

কেন সবাই এই রকম বলছেন বলুন তো? ইন্টারভিউয়ের আগে আনন্দplus-এ আপনার সিনিয়র সহকর্মীও একই কথা বললেন। এখানেই আছি। কোথাও যাইনি। পুজোতে দুটো রিলিজ। ‘কাটমুণ্ডু’ আর দেবের সঙ্গে একটা ছবি।

দুটো রিলিজ ঠিকই কিন্তু শ্রাবন্তী মানেই সেটে ইয়ার্কি। ফোটোশ্যুটে অন্যদের লেগ পুলিং। বিভিন্ন গলা করে অন্যকে নকল করা। সেই মেয়েটি কোথায় গেল? দ্যাট ‘ফান গার্ল’।

‘ফান’ আমি আজকেও। মাঝখানে সত্যি একটা খারাপ সময় গিয়েছিল। আমি বিশ্বাস করি সুখের পর দুঃখ, দুঃখের পর সুখ। কালের নিয়ম এটা। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। আজকে আমি হ্যাপি।

খারাপ সময় মানে যখন সেপারেশনটা হল রাজীবের সঙ্গে?

হ্যাঁ, সেই সময়টা।

আপনাদের ডিভোর্স কি হয়ে গিয়েছে?

না, এখনও হয়নি। পরের বছর মে মাসে। মে ২০১৬।

আজকে তবু আপনি হাসিখুশি। মাঝখানে তো ভীষণ লো ছিলেন?

হ্যাঁ, অসম্ভব লো ছিলাম। ডিপ্রেশন হয়ে গিয়েছিল।

বেরোলেন কী করে ডিপ্রেশন থেকে?

ওটা থেকে মানুষ ঠিকই বেরিয়ে আসে। কিন্তু ডিপ্রেশন একটা হয়ই। যদি কেউ বলে ডিভোর্সের পর ডিপ্রেশন হয়নি, তা হলে সে মিথ্যে কথা বলছে। আমার তো অনেক বছরের বিয়ে ভেঙে গেল। প্রায় দশ বছরের। খুব টাফ ছিল ওই সময়টা।

আজকে তো কাটিয়ে উঠেছেন?

একেবারে। একেবারেই কাটিয়ে উঠেছি। ফ্যানরা সাপোর্ট করেছে। পাঁচ বছর কোনও কাজ না করার পরও আমি ইন্ডাস্ট্রি ও আমার ফ্যানেদের কাছে যে ভালবাসা পেয়েছি, সেটাই আমাকে এই ডিপ্রেশন কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। আমার টুইটারে প্রায় আড়াই লাখের ওপর ফলোয়ার আমাকে সাহায্য করেছে।

রাজীবের সঙ্গে দেখা হয়?

ওই প্রিমিয়ার-ট্রিমিয়ারে দেখা হয়। হাই, হ্যালো, কেমন আছ। ব্যস। পরিচালক হিসেবে অবশ্য ওকে আমি রেসপেক্ট করি।

মানুষ হিসেবে?

আর মাথায় আনি না পিছনের কথা। ওই ‘ফেজ’ থেকে বেরিয়ে এসেছি পুরোপুরি।

ছেলে কখনও বলেনি বাবার সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে নিতে?

না, ছেলে বলেনি। ওদের লাইফ খুব ফাস্ট। ওরা নিজেদের জগতে থাকে। ও আমার ভীষণ ক্লোজ। আমি কী পরব, কোন ড্রেসটায় আমাকে ভাল লাগছে সব ও-ই বলে দেয়।

একটু রিল্যাক্স করুন প্লিজ। ভীষণ তাড়াহুড়ো করে উত্তর দিচ্ছেন।

(হেসে) না, আমি রিল্যাক্সড। বলুন।

এ বার কিছু প্রশ্ন আপনাকে করতে চাই যা লোকে বলছে...

ব্যস!...

ব্যস না। কোনও প্রশ্ন আপনি যদি বাদ দিতে বলেন বাদ দেব। কিন্তু জিজ্ঞেস তো করতে হবে।

আচ্ছা বলুন।


লোকে বলে এই যে শ্রাবন্তীকে দেখা যাচ্ছে না তার একটা কারণ আছে।

যেমন?

আপনার নতুন বয়ফ্রেন্ড বিক্রম। কোথায় যাবেন, কী করবেন—সব নাকি উনি ঠিক করে দেন।

একদম বাজে কথা। আমি আগে যেমন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারতাম আজও মারি। হ্যাঁ, পার্টিতে যাওয়া কোনও দিন পছন্দ করতাম না। আজও করি না। সেই ব্যাপারে আমি ঘরকুনো। পার্টিতে যাবার থেকে বাড়িতে বসে টিভি দেখা, চাইনিজ খাওয়া আমার বেশি পছন্দের। আর তা ছাড়া আমাদের একটা গ্যাং অব গার্লস আছে...

গ্যাং অব গার্লস?

হ্যাঁ। আমি, মিমি, সায়ন্তিকা, নুসরত আর তনুশ্রী। আমাদের একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও আছে। আমরা হাউজ পার্টি করি। কোনও ইভেন্টে যাওয়ার আগে কে কী পরেছি আলোচনা করি। তাই কেউ আমার লাইফটা কনট্রোল করছে এটা কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।

বিক্রমের পুরো নাম কী?

আপনি এগুলো লিখবেন?

আপনারা একসঙ্গে আউটডোরে যাচ্ছেন। সবাই জানে উনি আপনার বিশেষ বন্ধু। আর আপনি নিজেও তো কোনও দিন কিছু লুকোননি। ইউ হ্যাভ বিন অনেস্ট। তা হলে এখানে এত রাখঢাক কেন?

হ্যাঁ, অনেস্টি তো আমার প্রথম দিন থেকেই ছিল। আসলে এখনও বিক্রমের সঙ্গে সেই রকম কিছু ভাবিনি। ভবিষ্যতে কী হবে আমি জানি না। তবে হ্যাঁ, বিক্রম ইজ মোর দ্যান আ ফ্রেন্ড। আমার বিশেষ বন্ধু।

পুরো নামটা এখনও বললেন না।

বিক্রম শর্মা।

ওঁর সঙ্গে আলাপ কী ভাবে?

বিক্রম আমার দিদির বন্ধু।

আলাপ কি রাজীবের সঙ্গে সেপারেশনের পরে?

হ্যাঁ, সেপারেশনের পরে।

বিক্রমও কি বেহালায় থাকেন?

না, বিক্রম থাকে হাওড়ায়। ওরা মারোয়াড়ি। ও ভীষণ ক্যামেরা শাই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কিছুই জানে না।

উনি কী করেন?

ওদের ভুবনেশ্বরে মাইনসের ব্যবসা আছে।

লোকে বলে আজকে শ্রাবন্তীকে সাইন করাতে গেলে রেমুনারেশন কী হবে, সেটাও নাকি বিক্রম ঠিক করে দেন?

এগুলো কারা বলছে বলুন তো? আমার সামনে এসে বললে খুব ভাল হয়। আমি দেখতে চাই তাদের। আসলে কেউ একটু ভাল থাকলেই কী করে তার জীবন দুর্বিষহ করা যায় তার ফন্দি আঁটে মানুষ। আমি একটা ব্যাপার পরিষ্কার বলতে চাই, একটাই জীবন, সেই জীবনে আমার ভাল থাকার অধিকার আছে। আমি না কারও ব্যাপারে গসিপ করি, না পরনিন্দা করি। নিজে ভাল ভাবে থাকতে চাই। আর কেউ যদি গসিপ চালিয়ে যেতে চায়, তাদের বলব বেস্ট অব লাক।

স্ট্রং উত্তর...

হ্যাঁ। বিশ্বাস করি তাই বললাম। কালকে আমার কিছু হলে এই ইন্ডাস্ট্রির যে মানুষগুলো আমাকে নিয়ে গসিপ করছে, তারা কি আমাকে দেখতে আসবে? আমার বাবা-মায়ের কিছু হলে কি দেখতে আসবে? আমার ছেলেকে দেখতে আসবে? আসবে না তো। তা হলে তারা কী বলল তা নিয়ে ভাবতে যাব কেন? আমার একটাই লাইফ। আমি ভাল করে বাঁচব।

একটা জিনিস লক্ষ করেছেন! মিমি আর সায়ন্তিকা ছাড়া সব নায়িকার সঙ্গে এখন ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক। নায়িকারা কি নায়কদের সঙ্গে প্রেম করা ছেড়ে দিলেন?

আমার তো মনে হয় নায়িকাদের এখন নায়িকাদের সঙ্গে প্রেম...

ইয়ার্কি মারবেন না। লজিকটা কি এই যে, হিরোদের কবে বক্স অফিস পড়ে যাবে কে জানে? বিজনেসম্যানরা অনেক স্টেবল।

আমি কিন্তু ও সব ভেবে কোনও দিন কিছু করিনি। কোনও দিন ভাবিনি, এ বিজনেসম্যান, এ হিরো, একে পটাতে হবে। ও সব ভাবনা আমার মাথায় আসেও না। আমি যাকে বিয়ে করেছিলাম, সে কিন্তু সেই সময় শুধু অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ছিল।

এ বার একটু কাজের কথায় ফিরি। ‘গয়নার বাক্স’, ‘বুনো হাঁস’য়ে এত প্রশংসিত হওয়া সত্ত্বেও অন্য ধারার ছবি আর করছেন না কেন?

করছি তো। কৌশিকদার (গঙ্গোপাধ্যায়) পরের ছবি ‘ধূমকেতু’ করছি। সৃজিতদার (মুখোপাধ্যায়) সঙ্গেও কথা হয়েছে। আমি আসলে সব ধরনের ছবি করতে চাই। আমার মশালা ফিল্মও দারুণ লাগে।

কিন্তু মশালা ফিল্ম করলে অভিনেত্রী শ্রাবন্তী কি খুশি হন?

হ্যাঁ, হয় তো।

মশালা ফিল্মে সলিড একটা ইনট্রোডাকশন, দুটো কান্না আর আউটডোরে নাচ ছাড়া হিরোইনদের কী করার থাকে?

(হাসি) তাও মশালা ছবি দারুণ লাগে।

‘কাটমুণ্ডু’ কি মশালা ছবি?

‘কাটমুণ্ডু’ একদম মশালা ছবি। রাজদা অনেক দিন ধরেই বলে রেখেছিল। পুরো এন্টারটেনিং। সবার অভিনয় দর্শকের ভাল লাগবে। আমার রোলটা তো ফাটাফাটি। আর তা ছাড়া ‘কাটমুণ্ডু’ করার প্রধান কারণ আমি রাজদাকে মানুষ হিসেবে ভীষণ ভালবাসি

মিমি জানেন আপনার এই ভালবাসার কথা?

হ্যাঁ, হ্যাঁ, মিমিও আমার খুব ভাল বন্ধু।

শুনলাম নতুন গাড়ি কিনেছেন আপনি?

হ্যাঁ কিনেছি। আমার বড় দানবের মতো ওই এসইউভি গাড়ি খুব পছন্দের।

এটাও শুনছিলাম বিক্রম নাকি আপনাকে গাড়িটা কিনে দিয়েছেন?

হুমমম্। আজ সকালেও ইএমআই কেটেছে। প্রত্যেক মাসে পঁচিশ হাজার টাকা ইএমআই দিই গাড়ির জন্য। আমার ফ্ল্যাটের ইএমআইও আমাকেই দিতে হয়। আমি কোনও দিন আমার বাবার কাছ থেকেই টাকা নিইনি। মায়ের কাছ থেকে চুরি করেছি যদিও। তবে গাড়ির গসিপটা আমার কানেও এসেছিল...

কী গসিপ ছিল?

যে আমি পোর্শে কিনেছি। মানুষের কি কোনও কাজ নেই! তবে আমি আর নেগেটিভিটি রাখতে চাই না জীবনে। শুধু ভাল থাকতে চাই। ঝিনুককে (আমার ছেলে) খুশি দেখতে চাই।

ঝিনুকের কোন ক্লাস হল?

ঝিনুকের ক্লাস সিক্স। এখন ধ্যানজ্ঞান আমার কেরিয়ার আর ঝিনুক। বাকি দেখা যাবে ভবিষ্যতে...

থ্যাঙ্ক ইউ। খুব চাপের তো হয়নি ইন্টারভিউটা?

(হেসে) কে বলল?... প্রচুর চাপ...

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement