মনোজ
প্র: ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’র প্রথম সিজ়নের সাফল্যের পরে এ বার কি আপনি আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী?
উ: আত্মবিশ্বাসী ঠিক নই, তবে একজন অভিনেতা হিসেবে এটুকু বলতে পারি যে, দ্বিতীয় সিজ়ন খুব ভাল করে তৈরি করা হয়েছে। তবে টিম হিসেবে আমরা কখনওই পুরোপুরি সন্তুষ্ট হই না। আত্মতুষ্টি অনেক সময়ে দম্ভে পরিণত হয়। আমরা কৃতজ্ঞ যে, দর্শক অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর দ্বিতীয় সিজ়নের জন্য।
প্র: মনোজ বাজপেয়ী যখনই কোনও চরিত্রে অভিনয় করেন, তখনই সেটা দর্শকের কাছে খুব বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। সেই চরিত্রের সঙ্গে তাঁরা নিজেদের একাত্ম বোধ করেন...
উ: আপনার প্রশ্নের মধ্যেই আমার জবাব লুকিয়ে আছে। এখনও পর্যন্ত আমার কেরিয়ারে এমন চরিত্রই বেশি করেছি যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজে রিলেট করতে পারেন। ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর শ্রীকান্তকেও আমি সে ভাবেই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। সে যেন সাধারণ মানুষের মধ্যে সহজে মিশে যেতে পারে। আর শ্রীকান্তের চরিত্রটাও সেই কারণেই লোকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছে।
প্র: পরিচালক রাজ এবং ডিকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কী রকম হল?
উ: ওঁরা দু’জনে শুধু ভাল পরিচালকই নন, খুব ভাল মানুষও বটে। সেটে দু’জনেই খুব সজাগ থাকেন। যখন যেমন দরকার, সেই অনুযায়ী দু’জনের মধ্যে একজন ড্রাইভিং সিটে বসে পড়েন। শুটিং চলাকালীন সেটে দু’জনের বোঝাপড়া দেখার মতো!
প্র: দ্বিতীয় সিজ়নে সমান্থা অক্কিনেনী যোগ দিয়েছেন কাস্টে। ওঁর সঙ্গে অভিনয় করে কেমন লাগল?
উ: একজন অত্যন্ত সপ্রতিভ অভিনেত্রী সমান্থা। অসম্ভব পরিশ্রমীও বটে। দক্ষিণ ভারতে খুব জনপ্রিয় ও। আমার মনে হয়, এ বার সমান্থা আছে বলে দক্ষিণ ভারতের বহু দর্শকও এই সিরিজ়ের প্রতি আকৃষ্ট হবেন।
প্র: ফ্যামিলি ম্যান হিসেবে মনোজ বাজপেয়ী নিজে কী রকম?
উ: অনেকটা শ্রীকান্তের মতোই (হাসি)! পরিবার আর কাজের মধ্যে সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করি। আমার পরিবার খুব বড় নয়, কিন্তু আমরা প্রত্যেকেই একে অন্যের খুব ক্লোজ়। এখন মেয়ের দেখাশোনা করাই আমাদের অগ্রাধিকার। ওর পড়াশোনা, ভালমন্দ বিচারের বোধ— সব কিছুই আমাদের দায়িত্ব। স্ত্রী হল আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আর হ্যাঁ, শ্রীকান্তের মতো আমিও মিথ্যে কথা বলি না।
প্র: গত এক বছরে পৃথিবী অনেকটাই বদলে গিয়েছে। অতিমারি আপনাকে ব্যক্তিগত ভাবে কতটা পাল্টে দিয়েছে?
উ: সকলের চিন্তাধারায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। আমি নিজে বিগত কয়েক বছর ধরেই আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করেছি। এই অশান্ত সময়ে আরও বেশি করে আধ্যাত্মিক চিন্তায় ডুবে থাকি। পাশাপাশি কাজও চালিয়ে যাচ্ছি। আমার কাছে সাফল্যের সংজ্ঞা অনেক দিনই পাল্টে গিয়েছে। যত দিন আমরা সচল থাকি, এই সাফল্য আর প্রাচুর্যের মেয়াদও ততদিনই।
প্র: এই লকডাউনে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন কী ভাবে?
উ: সারা দিন পরিবারের সঙ্গে থাকা, একসঙ্গে সব কাজ করা, মেডিটেশন করা, ভাল সিরিজ় দেখা, ফোনে আড্ডা দেওয়া... এই সব নিয়েই আমার সময় কেটে যায় লকডাউনে। গত বছর লকডাউনে আমি পাহাড়ে ছিলাম। সেটা বড় ভাগ্যের ব্যাপার ছিল। এ বছরও আবার শুটিংয়ের কাজে পাহাড়ে আসার পরেই লকডাউন হয়ে গেল। প্রকৃতিকে উপভোগ করেছি আর প্রাণ ভরে অক্সিজেন নিয়েছি।
প্র: এখন ওটিটি-র রমরমা। ছবিমুক্তির আগের শুক্রবারের উত্তেজনা কি কখনও ফিরে আসবে?
উ: সময় লাগবে, তবে আসবে। একজন অভিনেতা হিসেবে আমি চাইব, সব মাধ্যমই থাকুক পাশাপাশি। আরও ভাল ভাল কাজ হোক। আমার বিশ্বাস, বড় পর্দায় ছবি দেখতে দর্শক আবার সিনেমা হলে ফেরত আসবেন। কিন্তু সেটা কবে, তা আপনার মতোই আমিও জানি না।