এর আগে কোনও ছবির টাইটেল বা এন্ড ক্রেডিট দেখতে দেখতে হেসে গড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে দর্শককে? বোধহয় না। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ, সব ছবিতে ডেডপুল থাকে না!
বছরে খান পাঁচেক সুপারহিরো ছবি আসে। কিন্তু তাদের সঙ্গে ডেডপুলের তুলনা করলে চলবে না। সে ‘সুপার’ হতে পারে, কিন্তু ‘হিরো’ হতে চায় না। তাতে কী-ই বা এসে যায়! ‘ডেডপুল’ ফ্র্যাঞ্চাইজি যে বেশ লম্বা চলবে, তা দুটো ছবিতেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
নিজেকে নিয়ে মজা করা, খুব বোকা কাজগুলো প্রচণ্ড স্মার্ট ভাবে করতে পারে কি আর কোনও সুপারহিরো? অধিকাংশ সুপারহিরোই সুদর্শন। আর ডেডপুল তার জ্বলা-পোড়া মুখ নিয়েই তুমুল রোম্যান্টিক! এত দিন টোনি স্টার্কের মুচমুচে সংলাপে হাততালি পড়ত। এ বার মার্ভেল পরিবারের আর এক সদস্যই তাকে জোর প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে দিচ্ছে।
‘ডেডপুল টু’ যথার্থ সিকুয়েল। প্রথম ছবিতে ডেডপুলের ঠিকুজি কোষ্ঠী দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয়তে সে পুরোদস্তুর অ্যাকশনে। তবে গল্পে শুধুই অ্যাকশন নেই। সুপারহিরো ছবিতে আবেগ সাধারণত তলানিতে থাকে। ‘ডেডপুল টু’ কিন্তু তা নয়। আবেগ আর মজা ঠিকঠাক মাপে মিলিয়েছেন পরিচালক ডেভিড লিচ। তিনি বোধহয় ঠিকই করে নিয়েছিলেন, বলে বলে ছয় মারবেন। অ্যাভেঞ্জার্সদের রেয়াত করেননি, লোগানকে নিয়ে ঠাট্টা করেছেন। সবচেয়ে মোক্ষম প্যাঁচ দিয়েছেন যেখানে কেব্লের কীর্তিকলাপ দেখে ডেডপুল বলছে, ‘‘তুমি নিশ্চিত যে, তুমি ডিসি ইউনির্ভাস থেকে আসনি?’’ এর পর ডেডপুলকে না ভালবেসে থাকা যায়?
ডেডপুল টু পরিচালনা: ডেভিড লিচ অভিনয়: রায়ান রেনল্ডস, মোরেনা ব্যাকারিন, জস ব্রোলিন ৭/১০
গল্প শুরু হয় রিভেঞ্জ ড্রামার দিকে ইঙ্গিত করে। সন্তানসম্ভবা অবস্থায় ডেডপুল তথা উইলসনের প্রেমিকা ভেনেসা মারা যায়। ক্রমশ গল্প অন্য দিকে বাঁক নেয়। এক্স-মেন সদস্য হতে অনিচ্ছুক ডেডপুল এক্স-ফোর্স তৈরি করে। সে সব না হয় হলে গিয়ে দেখাই ভাল। চিত্রনাট্যের কিছু কিছু জায়গা এলোমেলো লাগতে পারে। কিন্তু ডেডপুল নিজগুণে সবটাই সামলে নিয়েছে।
অ্যাকশন সিকোয়েন্সও দু্র্দান্ত। ডেডপুলের ভাষায়, ‘‘সিজিআই-এর ক়ল্যাণে দারুণ কিছু অ্যাকশন দেখতে পাবেন আপনারা।’’ গা শিউরে ওঠা অ্যাকশন দৃশ্যে ছন্দ মেলানো মিউজ়িক। পুরো ট্যারেন্টিনো স্টাইল!
প্রেম, অ্যাকশন, মজা সবের প্যাকেজ ডেডপুল। কে জানে বলিউড অনুপ্রাণিত কি না! প্রথম ছবিতে ‘মেরা জুতা হ্যায় জাপানি ছিল’। এই ছবিতে ‘স্বদেশ’-এর ‘ইয়ে রাস্তা’। ডেডপুলের জার্নিতে ডোপিন্দর (কর্ণ সোনি) নিজেকে দিব্যি সামিল করে নিয়েছে। ভাল লাগে ডমিনোকেও (জ্যাজ়ি বিট্জ়)।
হলিউড সোজাসাপটা ছবিও থ্রিডি-তে তৈরি করে। সেখানে ‘ডেডপুল টু’ টুডি-তে তৈরি করে দর্শকের মজা খানিক মাটি করতে উদ্যত কেন হল, কে জানে! ডেডপুল স্বতন্ত্র ঠিকই, কিন্তু রায়ান রেনল্ডসকে স্বরূপে ফিরিয়ে আনা যায় না কি? মার্ভেলের দস্তুর মেনে ছবির শেষে ফ্র্যাঞ্চাইজির তিন নম্বর ছবির ইঙ্গিত দেওয়া আছে। দর্শক অপেক্ষায় থাকবেনই। কারণ, ডেডপুল মানে এন্টারটেনমেন্ট, এন্টারটেনমেন্ট, এন্টারটেনমেন্ট...