প্রয়াত বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
প্রয়াত চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার নিজের বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর। সকাল ৬টায় ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে। অনেকদিন ধরেই তিনি কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। চলছিল ডায়ালিসিস। কিডনির সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বার্ধক্যজনিত সমস্যা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
‘স্বপ্নের দিন’ ও ‘উত্তরা’ ছবির জন্য পরিচালক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর ৫টি ছবি সেরা ছবির শিরোপা পেয়েছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রতিযোগিতায়। বাংলার সেরা ফিচার ফিল্মের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে তাঁর আরও দু’টি ছবি— ‘দূরত্ব’ এবং ‘তাহাদের কথা’।
চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করলেও তাঁর চলাচল ছিল সাহিত্য জগতেও। কবি বুদ্ধদেবের কলমে উঠে এসেছে একাধিক কবিতা, যা নিয়ে আজও চর্চা হয়। তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘রোবটের গান’, ‘ছাতা কাহিনি’, ‘গভীর আড়ালে’ ইত্যাদি।
দক্ষিণ পুরুলিয়ার আনারাতে শৈশব কেটেছে বুদ্ধদেবের। অর্থনীতি নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনা ও সাহিত্য জগৎ থেকে পরিচালক হয়ে ওঠার পিছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি। চার্লি চ্যাপলিন, ইঙ্গমার বার্গম্যান, আকিরা কুরোসাওয়ার সঙ্গে পরিচয় ঘটে সেখানেই।
তিনি অবসর নেওয়ায় বিশ্বাসী ছিলেন না। এমনকি মার্চ মাসেও তিনি নতুন চিত্রনাট্য লিখছিলেন। এক মহিলা গোয়েন্দার গল্পের সুতো বুনছিলেন বুদ্ধদেব।
পরিচালকের প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকবার্তা জানিয়েছেন। মমতা লিখেছেন, ‘বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ছবি তাহাদের কথা, বাঘ বাহাদুর, উত্তরা, চরাচর, মন্দ মেয়ের উপাখ্যান, কালপুরুষ ইত্যাদি। তাঁর মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।আমি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। তাঁর কাজের মধ্যে দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রের ভাষায় কবিতার জন্ম দিয়েছেন।’