গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসবাদের পর অবশেষে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) দফতর থেকে বের হলেন দীপিকা পাড়ুকোন । যদিও সারা এবং শ্রদ্ধার এখনও জেরা চলছে।
শনিবার সকাল পৌনে দশটা নাগাদ মুম্বইয়ের কোলাবা অ্যাপালো বন্দরের এভলিন গেস্ট হাউসে এসআইটি-র দফতরে মাদক কাণ্ডে জিজ্ঞাসবাদের জন্য পৌঁছন দীপিকা। বের হন বিকেল চারটে নাগাদ। দীপিকা পৌঁছনর কিছুক্ষণ পরেই এনসিবি দফতরে ঢুকতে দেখা যায় সুশান্তের ম্যানেজার করিশ্মা প্রকাশকে। গতকালও করিশ্মাকে জেরা করেছিল এনসিবি। এই মুহূর্তে দীপিকা এবং তাঁর ম্যানেজার করিশ্মাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা চলছে।
এনসিবি সূত্রের খবর, জেরায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) কাছে দীপিকা স্বীকার করেছেন হোয়াটসঅ্যাপের সেই গ্রুপে মাদক নিয়ে ‘ডি’ এবং ‘কে’-র যে কথোপকথন হয়েছিল তা আদপে দীপিকা (ডি) এবং করিশ্মারই (কে) চ্যাট। একই সঙ্গে দীপিকা এ-ও বলেছেন, মাদক নিয়ে আলোচনা করলেও, তিনি নিজে মাদক নেন না। কোনও দিন নেননি।
মাদককাণ্ডে দীপিকার নাম জড়িয়ে যাওয়ার নেপথ্যে মূলত বছর তিনেক আগের এক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। গত সোমবার এনসিবির হাতে আসে ওই চ্যাট। তাতে দেখা গিয়েছিল, ‘ডি’ এবং ‘কে’ নামে দুই ব্যক্তির মধ্যে মাদক নিয়ে বেশ কিছু কথাবার্তা হয়েছে। কখনও ‘ডি’, ‘কে’র কাছে হ্যাশ চেয়েছে আবার কখনও বা ‘কে’ তাঁকে হ্যাশের জোগানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বলিউডের একাংশ দাবি করেছিলেন ওই ‘ডি’ এবং ‘কে’ যথাক্রমে দীপিকা করিশ্মা।
A post shared by Viral Bhayani (@viralbhayani) on
আরও পড়ুন: মাদক সংক্রান্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন দীপিকাই!
ঘটনা আরও জটিল হয়ে যায়, যখন এনসিবি’র বারেবারে জিজ্ঞাসবাদের ফলে সুশান্তের প্রাক্তন ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহা কার্যত এনসিবি’র কাছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথা স্বীকার করে নেন। জয়ার কথার সূত্র ধরে জানা যায়— করিশ্মা, জয়া এবং দীপিকা, এই তিনজনের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল। জয়াই খুলেছিলেন গ্রুপটি। অ্যাডমিন ছিলেন দীপিকা এবং সদস্য ছিলেন করিশ্মা। ‘ফাঁস’ হওয়া সেই চ্যাট আদপে ওই গ্রুপেরই।
এ দিন দীপিকাও জেরায় সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বলেই এনসিবি সূত্রে খবর। প্রশ্ন, তিন বছর আগের এক চ্যাটের ভিত্তিতে ঠিক কতটা খেসারত দিতে হবে বলিউডের এই ‘এ লিস্টার’কে? আপাতত কয়েক ঘণ্টা ধরে এনসিবি অফিসে জেরা চলছে তাঁর।
শনিবার সকালে একেবারে সাদামাটা পোশাকেই এনসিবি-র দফতরে পৌঁছন দীপিকা। তারকা সুলভ কোনও কিছুই দেখা যায়নি তাঁর অভিব্যক্তিতে। কালো চশমায় চোখও ঢেকে রাখেননি। করোনা কালে সতর্কবিধি মেনে মুখ ঢাকা ছিল মাস্কে। এমনকি এ দিন যে গাড়িতে চেপে তিনি এনসিবি-র দফতরে পৌঁছন, তা-ও ছিল যথেষ্ট সাদামাটা। কোটি কোটি টাকার একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হলেও, এ দিন ‘হুন্ডাই’-এর একটি সাধারণ এসইউভি মডেলকেই বেছে নেন দীপিকা। সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর মতো তথাকথিত ’ফ্লপ’ নায়িকার দামি ও বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার নিয়ে এর আগে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। গাড়ির ব্যবহারে মানুষের ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে, তা বিলক্ষণ জানতেন দীপিকা। তাই যে গাড়িতে চেপে এনসিবির দফতরে যাবেন, তা নিয়ে বাড়তি আলোচনা চাননি বলেই তিনি সাধারণ গাড়ি বেছে নেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দীপিকা -করিশ্মার পাশাপাশি মাদক যোগে আজ সারা আলি খান এবং শ্রদ্ধা কপূরকেও জেরা করছে এনসিবি।