—ফাইল চিত্র।
প্রায় একশো বছর আগে ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ময়ূরভঞ্জে’ গ্রামের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের উল্লেখ করেছিলেন নগেন্দ্রনাথ বসু। ১৯৯৯ সালে সুবর্ণরেখার নদী বাণিজ্য সংক্রান্ত গবেষণায় এই এলাকায় এসেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রয়াত অশোক দত্ত।
তাঁকে তখন সে কথা বলেছিলেন দাঁতন হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নরেন বিশ্বাস। আগ্রহের সঙ্গে ওই গ্রামে ঘুরতে গিয়ে অশোকবাবু একটি ঢিবি দেখতে পান। ২০০৩ সালে ওই ঢিবি খনন করতে গিয়ে আবিষ্কার করেন এক বৌদ্ধবিহার। সাড়া পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। তারপরে বেশ কয়েকবার খননের পরে গোটা হারিয়ে যাওয়া একটি সংস্কৃতিরই সন্ধান পাওয়া যায় দাঁতনের মোগলমারিতে।
শুধু বৌদ্ধ বিহার নয়, এখান থেকে পাওয়া গিয়েছে প্রাচীন একটি জনপদের নানা পরিচয়। সেই তথ্য ছড়িয়েও পড়েছে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। পর্যটকেরাও ভিড় জমাচ্ছেন ওই বৌদ্ধবিহারে। আসছেন গবেষকেরা।
সকলের জন্য তাই এই বিহার আবিষ্কার, পুরাতাত্ত্বিক সামগ্রী উৎখনন থেকে এখন পর্যন্ত সমস্ত টুকরো-টুকরো চিত্রের কোলাজ করে তথ্য নির্ভর চলচ্চিত্র তৈরি হল। আজ, ১০ মে কলকাতায় বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভার অডিটোরিয়ামে ওই তথ্যচিত্রটি মুক্তি পাবে। ‘প্রত্নরত্ন’ নামের এই তথ্যচিত্রটির উদ্বোধন করবেন উপেন বিশ্বাস। প্রায় ২৫ মিনিটের তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছেন পরিচালক অভিষেক গঙ্গোপাধ্যায়।
অভিষেকবাবু বলেন, “সত্যি বলতে আমি কয়েকজন পরিচিতকে নিয়ে মোগলমারি ঘুরতে গিয়েছিলাম। গিয়ে মনে হল, এই সব ছবি ধরে রাখা দরকার। ওই দিনই একবেলায় শ্যুটিং করে এই তথ্যচিত্র তৈরি করেছি।” তাঁকে সাহায্য করেছেন মোগলমারি বুদ্ধিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক অতনু প্রধান।
তথ্যচিত্রে ভ্রমণ পিপাসু অভিনেত্রী মধুমিতা চক্রবর্তীর গাইড হিসাবে দেখা গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা অতনুকে। অতনুর কথায়, “২০০৩ সাল থেকে আমি এই বৌদ্ধবিহারের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি।
সব কিছু এত দিন খবরের কাগজে, ম্যাগাজিনে, বইয়ে পড়েছি। নিজেও লিখেছি। কিন্তু এ বার তথ্যচিত্রে এই বিহার স্থান পাওয়ায় বিশ্বব্যাপী তা ছড়িয়ে পড়বে বলে আশাবাদী। নিজেও এর একটি অংশ হতে পেরে খুব খুশি লাগছে।” তথ্যচিত্রটির ভাষা ইংরেজি।
অভিষেক বলেন, “ইতিহাস আমাদের শিক্ষক। তাই ইতিহাসকে ধরে রাখতে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণকে সবসময় সজাগ হতে হবে।”