হরিয়ানার রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে। সেখান থেকেই হয়ে উঠেছিলেন আটের দশকের সুপারহিট নায়িকা-গায়িকা।
পণ্ডিত যশরাজের ভাইজি বলিউডের সুপারহিট এই গায়িকা-নায়িকা। এই নায়িকার দুই ভাই সুরকার যতীন-ললিত।
দিদিও ছিলেন বলিউডের বিখ্যাত নায়িকা-গায়িকা। দিদির পরই তিনিও এলেন অভিনয়ের জগতে।
রাজেন্দ্র কুমারের প্রযোজনা সংস্থায় তৈরি ‘লাভ স্টোরি’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন এই নায়িকা। বিপরীতে সুপারস্টার রাজেন্দ্র কুমারের ছেলে কুমার গৌরব। রাতারাতি জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে যান এই জুটি।
১৯৮১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি ছিল সুপারডুপার হিট। ‘পারফেক্ট লিপস’ বলে একটা সময় ডাকতেন এই অভিনেত্রীকে তাঁর অনুরাগীরা। ইনি সুলক্ষ্মণা পণ্ডিতের বোন বিজয়েতা।
‘লাভ স্টোরি’ ছবির শুটিংয়ের সময়ই বিজয়েতা পণ্ডিতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে কুমার গৌরবের। দু’জনে বিয়ে করবেন বলেও স্থির করেন।
বিজয়েতাকে ঘরের বউ করায় তীব্র আপত্তি ছিল রাজেন্দ্র কুমারের। তাই মাঝপথেই প্রেমে ইতি পড়ে।
প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় কিছু দিন অবসাদে ভুগলেও ফের ১৯৮৫ সালে ‘মহব্বতেঁ’ ছবি সুপারহিট হওয়ায় আবারও জনপ্রিয় হন অভিনেত্রী। অনিল কপূরের সঙ্গে প্রশংসিত হয় তাঁর জুটি।
‘চিরদিনই তুমি যে আমার, যুগে যুগে আমি তোমারই।’ বহু বছরের পুরনো গানের লাইন, বাঙালির কাছে মারাত্মক জনপ্রিয়। এই গানের নায়িকা তো তিনিই।
প্রসেনজিতের সঙ্গে জুটিতে তাঁর এই হিট বাংলা ছবি ‘অমরসঙ্গী’ (১৯৮৭) কাঁপিয়েছিল তামাম বাংলা।
বিজয়েতার মিষ্টি হাসি একদা ভুলিয়েছিল ভারতীয় দর্শককে। ‘বিউটিফুল স্মাইল’ নামেও ডাকা হত তাঁকে।
১৯৮৬ সালে ‘কার থিফ’ ছবিটি ফ্লপ হলেও পরিচালক সমীর মালকিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। বিয়ে করেন দু’জনে।
কিন্তু সম্পর্ক স্থায়ী হল না। বিচ্ছেদ হয়ে যায় কয়েক মাসের মধ্যেই। এর পর অভিনয় ছেড়ে দিয়ে গানেই মনোনিবেশ করেন তিনি।
‘জিতে হ্যায় শান সে’ (১৯৮৬), ‘দিওয়ানা তেরে নাম কা’ (১৯৮৭), ‘জলজলা’ (১৯৮৮), ‘পেয়ার কা তুফান’ (১৯৯০) ছবিগুলিতে তাঁর অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কেটেছিল।
সে ভাবে অভিনয় আর না করলেও বলিউডে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তিনি আজও সুপরিচিত। ‘যো জিতা ওহি সিকন্দর’ (১৯৯২) কিংবা ‘কভি হাঁ কভি না’ (১৯৯২), সাজিশ (১৯৯৮), দেব (২০০৪), চিনাগিরি (২০০৫)-র মতো বহু ছবিতে গান গেয়েছেন তিনি।
পরবর্তীতে তিনি বিয়ে করেন সঙ্গীত পরিচালক-সুরকার আদেশ শ্রীবাস্তবকে। অভিনয় থেকে একেবারে সরে এসেছিলেন প্রসেনজিত, সঞ্জয় দত্ত, গোবিন্দা, মিঠুনের নায়িকা।
২০০৭ সালে স্বামীর পরিচালনায় প্রকাশিত হয় তাঁর পপ গানের অ্যালবাম ‘পেয়ার কা ইজহার’। মাধুরী দীক্ষিত সেই অ্যালবামের অত্যন্ত প্রশংসা করেছিলেন।
পরবর্তীতে পরিবার, মূলত সন্তানদের সঙ্গেই সময় কাটান অভিনেত্রী।