গ্ল্যামারাস নায়িকা, হট, নিখুঁত সুন্দরী— এই সবকটা বিশেষণই তাঁর জন্য ব্যবহার করা হত।
১০ বছর বয়সে মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেন তিনি।
মুম্বইয়ে জন্ম হলেও বেড়ে উঠেছেন চেন্নাইয়ে। রক্ষণশীল পঞ্জাবি পরিবারের মেয়েটি কিন্তু নিজেকে ‘তামিল বাই হার্ট’ বলতেই ভালবাসতেন। মায়ের দিক থেকে রতি অগ্নিহোত্রীর দাদু একজন পর্তুগিজ ছিলেন।
দিদি অনিতা হয়েছিলেন ‘মিস ইয়ং ইন্ডিয়া’। আর তিনি নিজে, রতি অগ্নিহোত্রী, আশির দশকের অন্যতম সেরা নায়িকা। সেই সময়ই তিনি নাকি ছবিতে কাজের জন্য তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন।
দক্ষিণী তারকা ভাগ্যরাজের প্রথম ছবি ‘পুঢিয়া ভারুপুকাল’-এর মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন রতি। সেই ছবি দক্ষিণ ভারতের তারকা বানিয়ে দেয় তাঁকে।
তিন বছরে ৩২টি ছবিতে কাজ, যাকে বলে সুপারহিট নায়িকা তিনি। চিরঞ্জীবী, কমল হাসন, রজনীকান্ত প্রত্যেকের নায়িকা হয়েছিলেন তিনি।
তাঁর ছবি ‘মারোচরিত্র’ রিমেক হয় ১৯৮১ সালে। হিন্দিতে নাম হয়, ‘এক দুজে কে লিয়ে’।
রোমিও-জুলিয়েটের গল্প অবলম্বনে ছবিটি তৈরি করা হয়েছিল। পরিবারের বাধা সত্ত্বেও ভালবেসেছিল তারা, পরে আত্মহত্যা করে যুগল। বেশ কয়েকটি সর্বভারতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছিল, ছবির জনপ্রিয়তা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল, বাস্তব জীবনেও অনেক প্রেমে ব্যর্থ যুগল নাকি একই ভাবে আত্মহত্যা করেছিল ছবি মুক্তির পরে।
এই ছবির জন্যই রতি অগ্নিহোত্রী সেরা অভিনেত্রীর সম্মান পেয়েছিলেন, সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয় ছবিটি। ৪৩টি সুপারহিট হিন্দি ছবির নায়িকা রতি।
‘শৌকিন’, ‘ফর্জ অউর কানুন’, ‘কুলি’, ‘তওয়াইফ’ ছবিগুলির জন্য দর্শকরা তাঁকে মনে রাখবে। সঞ্জয় দত্ত নাকি তাঁর প্রেমে পড়েছিলেন, এমনটাও সেই সময়ে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
বাসু চট্টোপাধ্যায়ের ‘শৌকিন’ ছবিতে সুইম স্যুট পরা নিয়ে সে সময় বিতর্কও হয়েছিল।
বাবার মৃত্যুর পর তিনি খুব ভেঙে পড়েছিলেন। তবুও ছবির কাজ চালিয়ে যান।
১৯৮৫ সালে ব্যবসায়ী ও স্থপতি অনিল ভিরানির সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তবে বিয়েটা সুখের হয়নি। তাঁকে নিয়মিত অত্যাচার করা হত বলে অভিযোগ করেছিলেন রতি। ছবির কাজ ছেড়ে দেন সেই সময়।
ছবি ছেড়ে দিয়ে রেকি শেখেন তিনি। ‘হিলিং থেরাপি’র জন্য বলিউডে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন এক সময়।
ছবি ছেড়ে দিলেও ছবির প্রস্তাব তাঁর কাছে ছিলেই। তাঁর ছেলে তনুজ বড় হওয়ার পর ২০০২-০৩ সালে ‘কুছ খাট্টি কুছ মিঠি’-তে অভিনয়ে ফেরেন তিনি। তনুজের সঙ্গে তাঁর এক সময়ের নায়ক কমল হাসনের মেয়ে অক্ষরার সম্পর্কের গুঞ্জনও ছিল বলিউডে।
‘ইয়াঁদে’, ‘দেব’, ‘মঞ্জু’, ‘আনওয়ার’ ছবিগুলিতে পরবর্তীতে পার্শ্বচরিত্রে কাজ করেন তিনি। মঞ্চ ও হিন্দি ধারাবাহিকেও কাজ করেন তিনি। ক্যানসার, এডস-সহ বিভিন্ন রোগীদের সাহায্যার্থে বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।
অনেক সমস্যা সত্ত্বেও স্বামীর কাজেও সাহায্য করেছেন বহু বছর। ডিজাইনের কাজও শিখেছিলেন। প্রায় ৩০ বছর এক সঙ্গে থাকার পর গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনেন তিনি। দাম্পত্যে ছেদ পরে ২০১৫ সালে। বর্তমানে রেকি নিয়েই মূলত ব্যস্ত তিনি।