দীপিকা পাড়ুকোন, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, অনুষ্কা শর্মা থেকে বিদ্যা বালন— বিয়ের দিন বা রিসেপশনে প্রত্যেকেই সেজেছেন একজনেরই পোশাকে। বলিউড ব্রাইডাল মানেই বাঙালি ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। সব্যসাচীর পোশাকে কেমন সেজেছিলেন নায়িকারা। তাঁদের ডিজাইনার পোশাকের দামই বা কেমন ছিল?
সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের অন্ধ ভক্ত দীপিকা পাড়ুকোন। মডেল হয়ে প্রথমেই তিনি চেয়েছিলেন সব্যসাচীর পোশাকেই সাজবেন বিয়ের দিন। সিন্ধ্রি মতে বিয়ের দিন দীপিকার পরনে ছিল সব্যসাচীর তৈরি লেহেঙ্গা। বেশ কিছু রত্নখচিত এটির ওড়নারই দাম নাকি প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা। জুয়েলারিও ছিল সব্যসাচীরই। কোঙ্কণি মতে বিয়ের দিন দীপিকার মাথার ওড়নাটি ছিল সব্যসাচীর ডিজাইন করা।
বেঙ্গালুরু রিসেপশনের দিন দীপিকা পাড়ুকোন পরেছিলেন মায়ের দেওয়া গোল্ডেন একটি শাড়ি। সেই দিন দীপিকার স্টাইলিস্ট ছিলেন সব্যসাচী। পান্না ও মুক্তোর সনাতনী গয়নাও তাঁরই বেছে দেওয়া।
মুম্বইয়ের মিনি রিসেপশনে দীপিকা পাড়ুকোনের ‘ফ্রিদা কাহলো’-লুকটিও সব্যসাচীরই দেওয়া। চিরচেনা ফ্লোরাল মোটিফের বোহো চিক লেহেঙ্গার ডিজাইনে ঝড় তুলেছিলেন ‘পিকু’ নায়িকা। এ দিন দীপিকা ছিলেন ‘হেড টু টো’ সব্যসাচী।
প্রিয়ঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাসের হিন্দু মতে বিয়ের প্রথায় সময় প্রিয়ঙ্কারও পরনে ছিল সব্যসাচীরই শাড়ি। না কাটা হিরে, পোখরাজ, জাপানি মুক্তো, ২২ ক্যারেট সোনা বসানো শাড়িটি ৩৭২০ ঘণ্টা ধরে তৈরি করেছেন কলকাতার ১১০ জন শিল্পী। মোঘল আমলের ৮৪.৫০ ক্যারেটের ন্যাসপাতি আকারের হিরে বসানো হার ও ৬.০৭ হিরের দুলও সব্যসাচীর বিশেষ ডিজাইনের।
‘কাই পো চে’ নায়িকা অমৃতা পুরী গত নভেম্বরে বিয়ের সময় আইভরি টোনের লেহেঙ্গা পরেছিলেন, সঙ্গে ছিল কুন্দন গয়না, কালেরি ও চূড়া। সেটিও সব্যসাচীরই ডিজাইনের। এই লেহেঙ্গার সঙ্গে অনুষ্কা শর্মার বিয়ের লেহেঙ্গার মিল পেয়েছিলেন অনেকেই। ১১০০ রকমের সিল্কের সুতো ব্যবহার করা হয়েছিল এতে। এর দাম প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।
সোহা আলি খানও বিয়ের দিন বেছে নিয়েছিলেন সব্যসাচীর ওপিয়াম কালকেশনের আইভরি গোল্ড ডাস্ট লেহেঙ্গা। সঙ্গে ছিল কমলা দোপাট্টা ও ভারী গয়না। দোপাট্টাটি ছিল সোহার মা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের অনুরোধে।বলি সূত্রে খবর, এর দাম প্রায় ১০ লক্ষের কাছাকাছি।
বিদ্যা বালনের পরনে ছিল উজ্জ্বল লাল রঙের বেনারসী শাড়ি। সঙ্গে ছিল সোনার গয়না।
অভিনেত্রী আসিন থোট্টুমকল বেছে নিয়েছিলেন শ্যাম্পেন গোল্ডেন-বেইজ জারদৌসি লেহেঙ্গা। ভারী গয়নাও ছিল আসিনের পোশাকের সঙ্গে মানানসই। আসিনের লেহেঙ্গার দাম ছিল প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।
সাগরিকা ঘাটগে সাত পাকে বাঁধা পড়েন ক্রিকেটার জাহির খানের সঙ্গে। বিয়ের দিন সাগরিকা পরেছিলেন মুক্তো ও ২২ ক্যারেট সোনা-সহ, না কাটা হিরের গয়না। এমব্রয়ডারি জারদৌসি ব্লাউজের সঙ্গে ছিল এক্কেবারে লাল রঙের সিল্কের শাড়ি। শাড়িটির দাম ছিল দুই লক্ষের খানিকটা বেশি।
রিসেপশনের দিন সাগরিকা বেছে নিয়েছিলেন সোনালি-সাদা রঙের বেনারসী লেহেঙ্গা। ছিল মহেশ্বারী সিল্কের দোপাট্টা। গলায় ও কানে হিরে ও সোনার ভারী গয়না।
নাফিসা আলির কন্যা পিয়া সোধিও বেছে নিয়েছিলেন সব্যসাচীরই তৈরি নীলচে লেহেঙ্গা। ইন্দো-ভিক্টোরিয়ান ডিজাইনের বিশেষ আরি-তারি জারদৌসি কাজ ছিল এতে। এটির দাম ছিল প্রায় ছয় লক্ষের কাছাকাছি।
গোলাপি রঙের সুতোর এমব্রয়ডারি লেহেঙ্গা, ফ্লোরাল মোটিফ ডিজাইন এই দিয়ে শুরু হয়েছিল অনুষ্কা শর্মার মেহেন্দি অনুষ্ঠানের সাজ। এর পর বিয়ের দিন অনুষ্কা পরেছিলেন হালকা গোলাপি রঙের লেহেঙ্গা। এটির দাম ছিল ২৫-৩০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। সোনা-রুপোর সুতোর সঙ্গে মুক্তোও বসানো ছিল এতে। গয়না-সহ অনু্ষ্কার পোশাকের দাম ছিল ৭৫ লক্ষের কাছাকাছি।
রিসেপশনের দিন অনুষ্কার পরনে ছিল সনাতনী লাল বেনারসী শাড়ি। আর অন্য রিসেপশনে অনুষ্কা পরেছিলেন একটি গাউন। সেই গাউনটির দাম ছিল প্রায় ৭০ লক্ষের কাছাকাছি।
বিপাশা বসু বিয়ের দিন পরেছিলেন সোনালি-লাল বেনারসী লেহেঙ্গা। এটির দাম ছিল প্রায় চার লক্ষের কাছাকাছি।
রিসেপশনেরও দিনও কপালে সিঁদুরের সঙ্গে বিপাশার পরনে ছিল সাদা-সোনালি লেহেঙ্গা। বাঙালি কনেকে শাঁখা-পলা পরাতে ভোলেননি সব্যসাচী। জয়পুরের কুন্দনের গয়নাও পরেছিলেন বিপাশা। এটিরও দাম ছিল প্রায় চার লক্ষের কাছাকাছি।