‘জয় সন্তোষী মা’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
পুরাণণির্ভর ছবির প্রতি ভারতীয় দর্শকের আকর্ষণ বহু দিনের। ‘আদিপুরুষ’ তো তা-ও বিপুল বাজেটের ছবি, প্রচারেও রাজকীয়। কিন্তু অনেক স্বল্প বাজেটের পৌরাণিক ছবি আগে তৈরি হয়েছে বলিউডে, যেখানে না ছিলেন নামকরা তারকা, না ছিল প্রচারের ঢক্কানিনাদ।
সহজ ভাবে গল্প বলেই বাজার মাত করেছিল এমনই একটি ছবি, নাম ‘জয় সন্তোষী মা’। ১৯৭৫ সালে এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল। অভিনয়ে ছিলেন কানন কৌশল, অনিতা গুহ এবং আশিস কুমার। এমন সাফল্য পেয়েছিল এই ছবি যে, এর শীর্ষসঙ্গীতটি সত্যি সত্যিই ঈশ্বরের আরতি বলে মনে করত দর্শক। বিজয় শর্মা পরিচালিত ‘জয় সন্তোষী মা’ মুক্তি পেয়েছিল মে মাসে। অল্প দিনের মধ্যেই পেয়েছিল বিপুল সাফল্য।
১৯৭৫ সালেই মুক্তি আবার পেয়েছিল অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘শোলে’ ছবিটি। অমিতাভকে দেখা যায় নতুন অবতারে। ‘দিওয়ার’ও মুক্তি পেয়েছিল সেই বছর।
গোড়ায় ব্যবসায়িক সাফল্যের দিক থেকে ‘শোলে’-র ঠিক পরেই ছিল ‘জয় সন্তোষী মা’। যদিও ‘শোলে’র তুলনায় অনেক কম টাকায় বানানো হয়েছিল এই ছবি। পরে উপার্জনের অঙ্কে ‘শোলে’কেও ছাপিয়ে যায় ‘জয় সন্তোষী মা’।
ছবির গল্প ছিল অতি সাধারণ, সত্তরের দশকের তুলনাতেও ভিস্যুয়াল এফেক্টের কাজ ছিল বেশ খারাপ মানের। সংলাপ অতিনাটকীয়। ছবির বিরতিতে বাজানো হত ভক্তিমূলক গান। গানগুলি মনে ধরে গিয়েছিল দর্শকের। ‘দিওয়ার’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ছবিটি।
গান লিখেছিলেন কবি প্রদীপ। সুর করেছিলেন সি অর্জুন। ছবির শীর্ষসঙ্গীত ‘ম্যায় তো আরতি উতারু’ এখনও বিভিন্ন মন্দিরে শোনা যায়। গীতিকারের কন্যা মিতুল প্রদীপ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “এটি বাবার জীবনের অন্যতম বৈগ্রহিক রচনা।”
শোনা গিয়েছিল, শুক্রবার দর্শক জুতো খুলে প্রেক্ষাগৃহে ঢুকতেন সন্তোষী মার প্রতি শ্রদ্ধাবশত। শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য বিশেষ শো-র ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কারণ, তখন তাঁরা ছবি দেখতে আসতেন না বেশি। শিশুদের স্কুল শনিবার তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে যেত বলে সে দিন মহিলাদের জন্য শো হত। এর নাম ছিল ‘জননী শো’। শিশু এবং মহিলারা যেতেন এই প্রদর্শনে।
২০০৬ সালে এই ছবি নতুন করে তৈরি হয়, নুসরত ভরুচা ছিলেন মা সন্তোষীর চরিত্রে। এটিই ছিল তাঁর প্রথম ছবি।