মুজিবর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীতে মেমোরিয়াল অর্কেস্ট্রাল স্কোর নিয়ে হাজির হচ্ছেন দেবজ্যোতি মিশ্র
আগামী ১৭ মার্চ শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী। উদযাপনে খামতি রাখছে না বাংলাদেশ সরকার। সুরে, ছন্দে সেজে উঠবে রাজধানী ঢাকা। মেমোরিয়াল অর্কেস্ট্রাল স্কোর নিয়ে হাজির হচ্ছেন ভারতের বিখ্যাত সুরকার ও সঙ্গীতকার দেবজ্যোতি মিশ্র। কেবল কলকাতা নয়, দুই বাংলার শিল্পীরাই অংশগ্রহণ করবেন এই অনুষ্ঠানে। অভিনব মৌলিক সঙ্গীত তৈরি হবে দেবজ্যোতির হাত ধরে।
‘বঙ্গবন্ধু’-এর পছন্দের গানগুলিকে এক সুতোয় বাঁধা হবে সে দিন। সেটা চলবে ১৫ মিনিট মতো। আরেকটি ১২ মিনিটের স্কোর বাজানো হবে। তাতে অবশ্য থাকছে বিশেষ আকর্ষণ। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুজিবরের বিখ্যাত ভাষণের ছোট ছোট টুকরো নেপথ্যে বাজানো হবে। ‘বঙ্গবন্ধু’-র গলায় সে দিনের টুকরো টুকরো শব্দ ভেসে উঠবে ঢাকার আকাশে। বড় পর্দা টাঙানো হবে, যেখানে আলো আঁধারি ছায়া দিয়ে ফুটে উঠবে ভাষা।
দেবজ্যোতি বললেন, ‘‘মুজিবর রহমান, এই নামটির সঙ্গে সেই ছোটবেলা থেকে পরিচয়। মুক্তি যুদ্ধের খবর আসত রেডিয়োতে। দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় খবর পড়তেন। সারা পাড়ায় রেডিয়ো চলত। বাড়িতে মা, বাবা, ঠাকুমা সবাই রেডিয়োর সামনে থমকে যেতেন যেন! সে সব আবছা দিনগুলোর কথাই মনে পড়ে যাচ্ছে। সেই থমথমে সময়টার কথা মনে পড়ে, ‘বঙ্গবন্ধু’-র উদ্দেশে সুর তৈরি করতে করতে ওই স্মৃতিগুলি উস্কে উঠছে।’’
তখনকার পূর্ববঙ্গ সুরকারের মায়ের দেশ, বাবার দেশ। ভাবলেই একটা আবেগ কাজ করে তাঁর। জানালেন, ‘‘যিনি বাংলাদেশের রূপকার, তাঁর জন্ম শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশের সঙ্গীতশিল্পী বন্ধুদের নিয়ে অনুষ্ঠান করব, এটা ভেবেই গর্ব হচ্ছে, রোমাঞ্চ হচ্ছে আমার! আমার মায়ের কৈশোরকে আমার তরফ থেকে একটা শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাব সে দেশে গিয়ে।’’
কলকাতা থেকে স্ট্রিং সেকশনের (তারের বাদ্যযন্ত্র, যেমন বেহালা, চেলো, ভিওলা, কন্ট্রাভাস ইত্যাদি) শিল্পীরা বাংলাদেশে যাচ্ছেন। ও-পার বাংলাতেও দেবজ্যোতি মিশ্রর বন্ধুরা রয়েছেন, যাঁরা অর্কেস্ট্রায় অংশগ্রহণ করবেন। ৫০ জনের বড় একটি কয়্যারও থাকছে। সব মিলিয়ে ১৫০ জন সঙ্গীতশিল্পীরা এক সঙ্গে গানে মাতবেন সে দিন।
মুজিবের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহনা-ও এই অনুষ্ঠানটি শুনবেন। রেহনা আপাতত বিদেশ থেকেই তাঁর বাবার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবেন। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনলাইনে গোটা অর্কেস্ট্রাটি রেকর্ড করা হবে।