‘ইন্ডাস্ট্রিতে শুধুমাত্র ট্যালেন্ট দেখে কাস্ট করা হয় না…’

বাংলা ধারাবাহিকে এখন যে কয়েক জন ‘ভিলেন’ টেলিভিশন মাতিয়ে রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁকে দেখে রাগে ফেটে পড়েন দর্শক। আবার অভিনয়ের প্রশংসায় ভরিয়েও দেন। তিনি পর্দার ‘গিনি রায়’। ‘জড়োয়ার ঝুমকো’ ধারাবাহিকের মূল নেগেটিভ চরিত্র। বাস্তবের দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর জার্নি নাটক, টেলিভিশন, ফিল্ম জুড়ে। আড্ডা দিলেন কেরিয়ার নিয়ে।বাংলা ধারাবাহিকে এখন যে কয়েক জন ‘ভিলেন’ টেলিভিশন মাতিয়ে রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁকে দেখে রাগে ফেটে পড়েন দর্শক। আবার অভিনয়ের প্রশংসায় ভরিয়েও দেন। তিনি পর্দার ‘গিনি রায়’। ‘জড়োয়ার ঝুমকো’ ধারাবাহিকের মূল নেগেটিভ চরিত্র। বাস্তবের দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর জার্নি নাটক, টেলিভিশন, ফিল্ম জুড়ে। আড্ডা দিলেন কেরিয়ার নিয়ে।

Advertisement

স্বরলিপি ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১২:০৭
Share:

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। ছবি: অনির্বাণ সাহা।

আপনাকে দেখলেই নাকি এখন গালাগালি করছেন দর্শক?
দেবযানী: মানে?

Advertisement

আসলে যেভাবে আপনি মানে ‘জড়োয়ার ঝুমকো’ সিরিয়ালের মূল প্রোটাগনিস্ট ‘ঝুমকো’কে ‘গিনি রায়’ হয়ে বেকায়দায় ফেলতে নিত্য নতুন দুষ্টুবুদ্ধি বের করছেন…
দেবযানী: হা হা হা…। ওটাই তো প্রশংসা। বিশ্বাস করুন, এত বছর ধরে অভিনয় করছি কোনও চরিত্র গিনি রায়ের মতো পপুলার হয়নি।

নেগেটিভ চরিত্র, অফার পেয়ে আলাদা কিছু মনে হয়েছিল?
দেবযানী: আমি অন্য একটা মেগাতে একই সঙ্গে একটা পজিটিভ চরিত্র করছি। তাই এটা একটা চ্যালেঞ্জের মতো মনে হয়েছিল। তবে এটাকে শুধু নেগেটিভ বললে ভুল হবে। চরিত্রটাতে অনেক শেড রয়েছে। গিনির ক্রাইসিস নিয়েও অনেক ইমোশনাল সিন রয়েছে। খুব এনজয় করছি কাজটা। ইনফ্যাক্ট স্নেহাশিসদা আমাকে দু’টো বিপরীতধর্মী চরিত্র করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

Advertisement

কিন্তু ‘গিনি’র মতো চরিত্র কি সত্যিই বাস্তবে রয়েছে?
দেবযানী: বাস্তবে রয়েছে কিনা বলা মুশকিল। আমি অন্তত এমন চরিত্র দেখিনি। তবে মহিলাদের অনেক ক্রাইসিস থাকে, সেটা দেখেছি।

আরও পড়ুন, রিয়্যালিটি শো যদি জীবন বদলে দিতে পারে, তা হলে অসুবিধে কোথায়?

এখনকার মেগার কনটেন্ট নিয়ে কিন্তু অনেক অভিযোগ শোনা যায়। আপনার কী মত?
দেবযানী: সত্যি কথা বলতে দর্শকদের অভিযোগ নিয়ে আমি কনফিউসড। দেখুন, কনটেন্ট ঠিক করে চ্যানেল। যে কোনও কনটেন্টের পিছনে সায়েন্টিফিক রিসার্চ চলে। দর্শকদের সঙ্গেই তো রিসার্চের সময় কথা বলা হয়। তারপর অন এয়ার করা হয়। তবুও আমি মনে করি কনটেন্ট নিয়ে চ্যানেলের আরও ভাবা উচিত। কিন্তু একটা কথা বলুন, টিআরপিতেই তো বোঝা যায় দর্শক সিরিয়াল পছন্দ করছেন। অঙ্ক তো সেটাই বলছে! ফলে এমন অনেকে আছেন যাঁরা বলেন, বাবা! বসে দেখা যায় না। তাঁরাই আবার সিরিয়াল দেখছেন। এটাতেই আমার কনফিউশন।

নাটক, সিরিয়াল, সিনেমা— তিনটি মাধ্যমেই কাজ করছেন। কোনটা আপনার সবচেয়ে পছন্দের?
দেবযানী: দেখুন, আমি থিয়েটার করি চর্চার জন্য। আমার কাছে থিয়েটার মানে ওয়ার্কশপ। এটা একটা রেওয়াজের মতো। আরও ভাল অভিনয় করার জন্য থিয়েটার করাটা দরকার বলে মনে করি। আর টেলিভিশন দিয়ে আমার কেরিয়ার শুরু। টেলিভিশনই আমাকে মানুষের কাছে পরিচিতি দিয়েছে। যদিও ইদানিং একটু হাঁপিয়ে উঠছি। তবে সিনেমা আমার সবচেয়ে পছন্দের।

টেলিভিশনে হাঁপিয়ে উঠছেন কেন?
দেবযানী: গত ১৬ বছর ধরে তো এটাই করছি। আগে অনেক রকম কাজ হত। টেলিফিল্ম করেছি, সাহিত্যের সেরা সময় হত। এখন কাজের ভ্যারাইটি কম। আর যে কোনও কাজেরই তো একটা মনোটনি চলে আসে।

আরও পড়ুন, গৌরব আমার প্রথম প্রেম নয়, বললেন ঋদ্ধিমা

হাঁপিয়ে উঠছেন, তবুও করছেন কেন? মানি ম্যাটারস্?
দেবযানী: ডেফিনেটলি। টাকাটা বড় ব্যাপার। এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। টাকার দিক থেকে টেলিভিশন অনেক সিকিওর জায়গা।

‘জড়োয়ার ঝুমকো’ ধারাবাহিকে গিনি রায়ের চরিত্রে দেবযানী।

ফিল্ম সবচেয়ে পছন্দের জায়গা বললেন, এতদিন ধরে অভিনয় করছেন, তবুও সে ভাবে সুযোগ এল না কেন?
দেবযানী: জানি না, সত্যিই বলতে পারব না। অনেকে বলেন, তোর ফিল্মেই কাজ করা উচিত। অনেকে বলেন তাঁদের ছবিতে কাজ দেবেন, পরে আর দেন না। এখন তো অভিনেতাদের রিপিট করা হচ্ছে। অন্য কাউকে দিয়ে চেষ্টা করার প্রবণতা তো আমাদের ইন্ডাস্ট্রির নেই। জানি না ডিরেক্টররা কেন ভরসা পান না। তবে ঘুরে ফিরে ওই তো চার পাঁচ জন ডিরেক্টর কাজ করছেন।

এত সোজাসাপ্টা কথা বলছেন, কাজ পেতে অসুবিধে হবে না?
দেবযানী: আমি চিরকাল সোজা কথা সোজা ভাবেই বলি। আর কোনও দিন কারও কাছে গিয়ে কাজ চাইনি। ফলে আমার জন্য কোনও চরিত্র থাকলে নিশ্চয়ই কাজ পাব। আই নো মাই পোটেনশিয়ালিটি। তবে অরিন্দম শীলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নিজে ‘দুর্গা সহায়’-এর অফার দিয়েছিলেন। তার আগে ‘লে ছক্কা’তে রাজ চক্রবর্তী সুযোগ দিয়েছিলেন। এটাও ঠিক, যে কোনও চরিত্র দিলেই আমি করব না। আমার পছন্দ হতে হবে। ওই দেবের মা বা জিতের মা দিলে করব না।

আরও পড়ুন, দুর্গার আগেই কার্তিক চলে আসছেন ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ নিয়ে

এটা কি গর্ব করে বললেন?
দেবযানী: না, গর্ব নয়। বরং আমার কনফিডেন্স বলতে পারেন। আরও একটা ফ্যাক্টার রয়েছে, বলব?

প্লিজ, বলুন।
দেবযানী: পরিচালকের হাতে সবটা থাকে না কিন্তু। প্রযোজকরা দেখেন অভিনেতা, অভিনেত্রীরা তাঁদের হাউজের সঙ্গে কতটা কমফর্টেবল। সেটাই ম্যাটার করে। আসলে শুধুমাত্র ট্যালেন্ট দেখে কাস্ট করা হয় না…।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement