ছবিতে মৌবনী
সিঙ্গুর থেকে নন্দীগ্রাম, জমি অধিগ্রহণ থেকে মহিলা নির্যাতন। শঙ্কুদেব পণ্ডা তাঁর প্রথম ছবি ‘কমরেড’-এ বাংলার উত্তপ্ত রাজনীতিকে তুলে ধরেছেন। জানালেন, ছবিতে দেখানো প্রতিটি ঘটনাই বাস্তব থেকে নেওয়া। তিনি যতটা পেরেছেন রিয়্যালিস্টিক ভাবে ঘটনাগুলো পরদায় দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
শঙ্কুদেবের ছবিকে ‘এ’ সার্টিফিকেট দিয়েছে সেন্সর বোর্ড। একাধিক বার সেন্সর বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়েছেন পরিচালক। বেশ উত্তেজিত হয়ে বললেন, ‘‘ছবি বানাতে গিয়ে কাউকে রেয়াত করিনি। আমার দায়বদ্ধতা দর্শকের কাছে। একেবারে সত্যি ঘটনা তুলে ধরেছি আমরা।’’
ছবিতে বিতর্কিত ঘটনা তো আছেই, তার সঙ্গে মৌবনী সরকারের একটি নগ্ন দৃশ্যও রয়েছে। পরিচালকের কথায়, ‘‘বাস্তবে যেটা ঘটেছে, তা তুলে ধরতে হলে ওই দৃশ্যটার প্রয়োজন ছিল। অনাবশ্যক কিছুই দেখানো হয়নি।’’ নন্দীগ্রামের একটি ঘটনাকে ‘কমরেড’-এ তুলে ধরেছেন শঙ্কুদেব।
এতটা বোল্ড দৃশ্য বাংলা ছবি আগে দেখেনি। মৌবনীর অস্বস্তি হয়নি ক্যামেরার সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন হতে? ‘‘অস্বস্তি তো ছিলই। তবে দৃশ্যটাকে বোল্ড না বলে ভয়ানক বলা যেতে পারে। একটা মেয়েকে গোটা দুনিয়ার সামনে নগ্ন করে ঘোরানোটা তো বীভৎস। আমাকে তো একটা চরিত্রের খোলস পরতে হয়েছে। বাস্তবে ঘটনাটা যার সঙ্গে ঘটেছে, সেটা ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয়,’’ গলায় আতঙ্কের সুর মৌবনীর। বাড়ি থেকে আপত্তি আসেনি? ‘‘প্রথমে বাড়িতে বলতেই আমার অস্বস্তি হচ্ছিল। সকলেই জানেন আমি কোন পরিবার থেকে এসেছি। পিসি সরকার আমার বাবা। তবে সবটা শুনে বাবা বলেছিলেন, যদি নিজের প্রতি আস্থাটা ছবির শেষ থেকে শুরু পর্যন্ত ধরে রাখতে পারো, তা হলেই করো,’’ বললেন অভিনেত্রী।
নন্দীগ্রামের এক গৃহবধূ রাধারানির চরিত্র করছেন মৌবনী। পরিস্থিতির চাপে একটি নরম-সরম মেয়ে কী ভাবে অ্যাগ্রেসিভ হয়ে ওঠে, তা তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। মৌবনীকে যেমন তার িবপরীতধর্মী চরিত্র করতে হয়েছে। বারবার চিত্রনাট্য পড়েছেন। জানালেন, প়ড়তে গিয়ে অনেক বার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
শঙ্কুদেব ২০০৬-০৭ সালের সময়কে পরদায় ধরেছেন। বাম সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার মতো যথেষ্ট উপাদান রয়েছে ছবিতে। তৃণমূল কংগ্রেস করে আসা শঙ্কুদেবের ছবির নাম ‘কমরেড’ কেন? ‘‘কমিউনিজমের পতন কী ভাবে হয়েছে, সেটাও দেখানো হয়েছে। একটা আক্ষেপ রয়ে গেল, প্রমোদ দাশগুপ্ত আর অনিল বিশ্বাসকে ছবিটা দেখাতে পারলে ভাল হতো,’’ ব্যঙ্গের সুর শঙ্কুদেবের গলায়। কিন্তু এগুলো করতে গিয়ে কি ছবিটা তৃণমূলের প্রচার হয়ে যায়নি? ‘‘একেবারেই না। যেটা বাস্তব সেটাই দেখিয়েছি। যে ঘটনাগুলো ছবিতে দেখানো হয়েছে, তার রেফারেন্স আছে আমার কাছে। কেস ফাইল রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে সে সময় যে সব খবর ছাপা হয়েছিল সেগুলো আমার রেফারেন্স পয়েন্ট,’’ চটজলদি জবাব পরিচালকের।