রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘আকাশ অংশত মেঘলা’ ছবির নামটাই তো অন্য রকম…
হুম। নামটা একটা সময়কে রিপ্রেজেন্ট করে। আকাশ অংশত মেঘলা। বৃষ্টির পূর্বাভাস। এটা শুনলে দূরদর্শনের খবর, ’৯০-এর দশকের কথা মনে পড়ে। এই শব্দগুলো আমাদের ছোটবেলার বেড়ে ওঠার অনুসঙ্গ। সেটা মাথায় রেখেই এই নামটা দেওয়া। আমরা ওই সময়টা রিপ্রেজেন্ট করছি।
আপনার চরিত্র?
অনির্বাণ। সে ক্রাইসিসের সামনে দাঁড়িয়ে। এই মুহূর্তে একটা চাকরি না হলেই নয়। সে দেখছে তার থেকে যাদের প্রয়োজন কম, তাদেরও সোর্স বেশি। অথচ তার কিছু করার নেই। এ রকম একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে কী করবে, সেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। একই রকম ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রসময়। এই চরিত্রটা করেছে রুদ্রদা (রুদ্রনীল ঘোষ)। এদের জীবন কোথাও একটা গিয়ে মিলিত হয়। সেই একটা দিনের গল্প।
প্রয়োজন কম, সোর্স বেশি, এমন মানুষ আপনি দেখেছেন?
প্রয়োজন কারও কম নেই আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে। বিএমডব্লিউ হলে মার্সিডিজ, মার্সিডিজ হলে জাগুয়ার। প্রয়োজন কারও কম নেই। কাজেই দেখিনি।
আরও পড়ুন, বয়ফ্রেন্ড অভিমন্যুর সঙ্গে বড় কাজ করব না, বললেন মানালি
আর সোর্স বেশি?
সোর্স তো অনেকেরই বেশি।
সেটা কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধেজনক?
কিছু ক্ষেত্রে সোর্স হয়তো কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে ম্যাটার করতে পারে। কিন্তু কাজটাই আসল।
কয়েক মাস আগে আপনি একটা অন্য ধরনের ভাল ছবি করলেন, ‘পিউপা’। এই অন্য ধরনের ছবি আপনার কাছে আরও বেশি আসছে না কেন?
‘পিউপা’ তো গত বছরই হল। এ বার আসবে নিশ্চয়ই। ‘আকাশ অংশত মেঘলা’ই তো অন্য রকম ছবি। ভাল ছবি। তবে এটা এটার মতোই হবে। কিন্তু ইন্দ্রাশিসের সঙ্গে আরও কাজ করার ইচ্ছে আছে। ওর সেন্সেবিলিটিটা অন্য ছবি দেখে তৈরি হওয়া। সঠিক অর্থে ওয়ার্ল্ড সিনেমা বলতে যা বোঝায়, ও সেটার দর্শক নিজে। ও গ্লোবাল অডিয়েন্সের ভাষা বোঝে। সেই জায়গা থেকে ছবিটা বানিয়েছে। ফলে ‘পিউপা’ কিছুটা আলাদা।
অজিতের লুকে রাহুল। ফের অরিন্দম শীলের ‘ব্যোমকেশ’-এ দেখা যাবে তাঁকে।
আপনি তো এই ছবির জন্য পুরস্কারও পেয়েছেন?
হ্যাঁ, ঔরঙ্গাবাদ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মনোজ বাজপেয়ীকে হারিয়ে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছি। এটা আমার জীবনে সাঙ্ঘাতিক একটা প্রাপ্তি। এ সব বলা হয়ে ওঠে না কোথাও।
কিন্তু অভিনয়ের সুযোগ রয়েছে, এমন চরিত্র তো আপনি আরও আগে পেতে পারতেন?
দেখুন, সব কিছুর একটা নিজস্ব সময় আছে। সব কিছু একসঙ্গে চাওয়া যায়? আমি মেগা সিরিয়াল চেয়েছি। টাকা চেয়েছি। ভাল ছবি চেয়েছি। সবই চেয়েছি। সবকটা একসঙ্গে হয়নি। ক্লিক করেনি। সব কটা একসঙ্গে ক্লিক করে না। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস ক্লিক করেছে। ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’-এর পর গত ১০ বছরের আমার যে ফিল্মোগ্রাফি সেটা নিয়ে আমি দুঃখিত নই। আমাকে ভাবা হয়েছিল, ‘চিরদিনই…’ করে হারিয়ে যাব। কিন্তু সে ছবি থেকে মোড় ঘুরিয়ে অন্য ছবিতে চলে আসতে পারব, এটা বোধহয় কেউ ভাবতে পারেনি। আমার কাছের বন্ধু, পরিবার ছাড়া কেউ সেটা ভাবেনি। ফলে সেই জার্নিটা ইন্টারেস্টিং। আমাকে নতুন করে নিজেকে চেনাতে হয়েছে। সেখানে ‘চিরদিনই’র পরিচয়টা কোনও কাজে আসেনি। নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়েছে। এই জার্নিটাই তো মজার।
আরও পড়ুন, ‘সোহিনীর সঙ্গে প্রেমের পর স্যারকে বলেছিলাম, ওকে বিয়ে করতে চাই’
আপনি এখন কী চান?
আমি সত্ টাকাটা এখনও চাই। সত্ ভাবে রোজগার করতে এখনও চাই। এ বছরও যাত্রা করছি। যা যা অভিনয় শিখেছি সব ছাড়তে ছাড়তে…মানে ওয়েবে একটা ধরনের অভিনয় করি। সেটা আবার জোড়া লাগাতে লাগাতে যাত্রায় ফিরে যাই। দুটোই করার চেষ্টা করছি। চেষ্টাটা চালিয়ে যাচ্ছি। এটাই আমার কাছে খুব ফ্যাসিনেটিং।
ওয়েবে যে ধরনের বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে, ভাল লাগছে?
ওয়েবে এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছে। কিন্তু হওয়ার আরও অবকাশ ছিল। আমরা যদি আর একটু বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সেক্সটাকে ব্যবহার করতে পারি, আরও বুদ্ধিমান হয়ে যদি ভায়োলেন্সটা ব্যবহার করতে পারি, তা হলে হয়তো ইন্টারেস্টিং হতে পারে।
ওয়েবই কি ভবিষ্যত্?
হতে পারে। কিন্তু সিনেমা সিনেমার জায়গায় থাকবে। সিনেমা মোবাইলে চলে আসতে পারে। কিন্তু সিনেমা হবে। সিনেমা উঠে যাবে না। যতই ডিজিটাল আসুক, হাতে করে পড়ার গল্পের বই যেমন উঠে যাবে না,তেমনই সিনেমাও উঠে যাবে না।
ছেলে কেমন আছে?
সহজের খবর ভাল। ও ‘চিরদিনই’র ‘বাতাসে গুনগুন…’ দেখে ফেলেছে।
ছেলে সহজের সঙ্গে রাহুল।
তাই! কোথায়?
টিভিতে বা ইউটিউবে। কোনও একটা সোর্সে ও দেখেছে। আমাকে দেখাল। গেয়ে শোনাল। মা-বাবার এই কামনোদ্দীপক নাচ দেখে ছেলের টিভি দেখার শুরু এটা ভাল খবর নয় (হাসি)।
কিন্তু ও তো এনজয় করেছে?
হ্যাঁ, ও এনজয় করেছে ঠিক আছে। কিন্তু ও এ সব দেখছে বলে এটা যেন ধার্য না হয়ে যায় ও অভিনেতাই হবে। ও যেন নিজের মতো অপশন খোলা রাখে। আসলে ছোট থেকেই ক্যামেরা দেখছে। বাড়িতে লাইট হচ্ছে দেখছে। ফলে মাথার মধ্যে ঢুকে যাওয়া স্বাভাবিক, অভিনেতাই হতে হবে। কিন্তু সেটা না ঢোকাই ভাল। অনেক কিছুই হওয়া যায়।
আরও পড়ুন, প্রেম বা বিয়ে করার জন্য কলকাতায় ছেলে পাওয়া মুশকিল: পায়েল
আপনিও তো অভিনয়ের পরিবেশে বড় হয়েছেন। কিন্তু ছোট থেকেই তো ভাবেননি, অভিনেতা হবেন?
আমার ছোটবেলায় অত কনফিডেন্সই ছিল না। যে ভাবে টাকা রোজগার হয়, করব। অভিনয়টা যদি করতে পারি, হবে। কোনও গোল সেট ছিল না। তবে আমার বাবা থিয়েটার করতেন। যেটা খুব একটা লোভনীয় নয়। ওর বাবা-মা সিনেমা, সিরিয়াল করে। যেটা লোভনীয়, হাতছানি দেয়। সেটা খুবই খারাপ।
আর আপনার প্রেমের খবর কী?
প্রেম নেই। একদম নেই। শুধু কাজের প্রতি প্রেম আছে।
এটা খুবই ক্লিশে উত্তর…
মানে, আসলে আমি প্রেম করার মতো মানসিক স্পেসে আর নেই। প্রেমের সঙ্গে আরও যে জিনিসগুলো জড়িয়ে আছে, কমিটমেন্ট…। একদম ছোটবেলায় প্রেম করা শুরু করেছি তো। ছোটবেলায় বিয়েও করেছি। নাও আই নিড আ স্পেস।
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)