অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়। ছবি— সংগৃহীত।
অরিন্দম মানেই গান সুপারহিট। প্রথম কোন গান সুপারহিট হয়েছিল?
‘না রে না’— ‘বোঝে না সে বোঝেনা’ ছবির গান। খুব ভাল লেগেছিল আমার।নিজের তৈরি গান মানুষ নিয়েছে, সেটা জনপ্রিয় হয়েছে দেখে।
গান তো এত ভাল তৈরি করেন, কিন্তু এত কম কথা বলেন কেন?
আপনার প্রশ্নের অপেক্ষায়।
মানে যেটুকু জানতে চাইব তার বেশি বলবেন না! এটা কি শ্রীকান্ত মোহতার শিক্ষা?
শ্রীকান্তদা পাশে না থাকলে এত কাজ করতেই পারতাম না। আমি শ্রীকান্তদা এবং মণিদার খুব কাছের। আমার ভালবাসার জগতে ওদের জন্য অনেকখানি জায়গা।
অল্প বয়সে এত সাফল্য, বিখ্যাত পরিচালকেরা আপনাকে আটকানোর চেষ্টা করেননি?
বিখ্যাত বা বড় পরিচালক বলতে কী বোঝায় জানি না আজও।কাজের প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই সিনিয়রদের সম্মান করার জায়গা তৈরি হয়।আমি সেটাই শিখেছি।
সিনিয়ররা আপনার কাজে বাধা দেননি তাহলে?
সিনিয়ররা বাধা দিলে আমার গান আমার জবাব। শ্রীকান্তদাই বলেছিল, বাজে কথায় রিঅ্যাক্ট না করে কাজ করতে হিট গান দিতে ব্যস। ওই পথেই চলি।
আপনি কোন সিনিয়রকে সম্মান করেন?
অবশ্যই জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। জিৎদা আমাকে কোনও দিন পেছনে রাখেনি, বরং দেখেছি সব সময় সাহস দিয়েছে। ভাল কাজ করলে নিজে থেকে টেক্সট বা ফোন করে জানিয়েছে, এটা খুব বড় পাওয়া।
জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গানকে ডিস্কে নিয়ে এসেছিলেন। আপনার কি মনে হয় গান শুধুই ডিস্কে নাচার জন্য?
গানের পরিস্থিতি অনুসারেই গান তৈরি হয়। কিছু গান পাব-এ হিট হয়, কিছু আবার বাড়িতে একলা বসে বা গাড়িতে শোনার জন্য হিট হয়। আর জিৎদা প্রসঙ্গে বলি, বাংলা গানকেও যে শুধু ডিস্কে নিয়ে গিয়েছে, এমন নয়। তার চেয়ে এটা বলা ভাল, জিৎদা নিজে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছে যে আমার মতো নতুন পরিচালকরা যখন এখানে কাজ করতে এল, তখন আমরা সকলেই অনেক কাজ করা যায় এমন এক বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে, একটা তৈরি ইন্ডাস্ট্রিকে হাতে পেলাম।
‘আমার ইন্সপিরেশন এ আর রহমান, প্রীতমদা, বিশাল শেখর’
শুধু জিৎদার কথাই বলছেন! আপনার আর কোনও অনুপ্রেরণার কথা বলুন।
আমার ইন্সপিরেশন অনেকেই। এ আর রহমান, প্রীতমদা, বিশাল শেখর। সকলের কাজ শুনতেই থাকি।
এই শুনতে শুনতেই শিবপ্রসাদ-নন্দিতা থেকে কমলেশ্বর, রাজ চক্রবর্তী, বিরসা-র ছবিতে হিট গান তৈরি করছেন?
এরা সকলেই নিজেদের বৃত্তে এক একটা প্রতিষ্ঠান।তবে বিরসাদা আর রাজদার ক্ষেত্রে শ্রীকান্তদার একটা বড় জায়গা থাকে। ওদের সঙ্গে যা কাজ করেছি সবই এস ভি এফ-এর ব্যানারে। আর কমলেশ্বরদার গানের ক্ষেত্রে ভাবনা খুব পরিষ্কার।আর খুব তাড়াতাড়ি রিঅ্যাক্ট করে। দেব যেমন ‘ককপিট’-এর গানের সময় খুব ইনভল্ভ ছিল। অন্যদিকে, শিবুদার সঙ্গে কাজ করা একটা অন্য অভিজ্ঞতা। ও ভিতর থেকে বেস্টটা যে ভাবেই হোক বার করে আনবে। ধাক্কা দেবে।
আরও পড়ুন, ‘বোল্ড সিন নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই’
সেই ধাক্কাতেই কি সলমন খান ছাড়াই ‘ভুটু ভাইজান’ এত জনপ্রিয় হল?
‘হামি’র গান ইউটিউব-এ ট্রেন্ডিং ছিল, তাই এত জনপ্রিয় হয়েছে। আর দ্বিতীয় কারণ শিবুদা-নন্দিতাদি।
মানে নিজের প্রশংসা আপনি করেন না!
আমি তো কাজ করি।তবে ভুটু ভাইজান জনপ্রিয়তার জন্য আমি ছাড়াও অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, শ্রেয়ান, আরশি সকলেরই কৃতিত্ব রয়েছে। আসলে এটা একটা টিম ওয়ার্ক। আর গানের কনটেন্টটাই গানের হিরো।
কেউ যদি বলে, অরিন্দমের কাজ একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে?
কেউ বলেনি তো। আর আমি রোজ নিজেকে ভাঙাচোরা করি।
কেমন করে?
প্রচুর গান শুনি। প্রসেনদা মাঝে মাঝে আমায় বলে, আমার নাকি গান শোনার অসুখ আছে। আমার গান শুনতে সবচেয়ে ভাল লাগে। আমি ভাল থাকি তাতে।
‘আমি স্ক্রিপ্টের রাস্তা ধরে গান তৈরি করি। ওটাই আমার কাজ’
এখন অনেকেই বলেন, গান একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে। মানেন?
হতে পারে সময়ের সঙ্গে সাউন্ড বদলাতে হবে। সেটা হয়তো হচ্ছে না। আবার এটা হতে পারে যে, সাউন্ড নিয়ে কোনও পরিচালক বিখ্যাত হয়েছিল, সে সেখানেই থেকে যাচ্ছে, নিজেকে আপডেট করছে না। এখন সবটাই উপস্থাপনার উপর নির্ভর করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল গানের কথা। তারপর সাউন্ড প্রোডাকশন।
বেশিরভাগই ফরমায়েসি গান করেন। নিজের কী ধরনের গান করতে ইচ্ছে হয়?
আমি স্ক্রিপ্টের রাস্তা ধরে গান তৈরি করি। ওটাই আমার কাজ। তবে, নিজে অরগ্যানিক অ্যালবাম করার খুব ইচ্ছে সেরকম ছবির অপেক্ষায় আছি।
আরও পড়ুন, ফিরতে চান? আপনাদের জন্য সাজেশন দিলেন স্বস্তিকা
আমরা তো আপনার বিয়ের অপেক্ষায় আছি।
বিয়ে? এখনও বি-টাই শুরু হয়নি।
কিন্তু ‘এ’টা তো ছিল...
চলে গিয়েছে। আমি এত কাজ করি...তাই হয়তো।
এ বার তাহলে প্ল্যান কী?
বিয়ে করব। দেখি... কার্ডটা আনন্দবাজার ডিজিটালেই পৌঁছবে।