ছবির দৃশ্যে অপরাজিতা আঢ্যর সঙ্গে প্রসেনজিত্।
আর তো মাত্র দুটো দিন।
হ্যাঁ, এসেই গেল।
তারপরই পরীক্ষা?
পরীক্ষাই বটে... (বিখ্যাত হাসি হাসলেন অভিনেত্রী)
ট্রেলারের রেসপন্স কেমন?
ট্রেলার দেখে প্রত্যেকে রীতিমতো আপ্লুত। প্রত্যেকে আশাবাদী ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’ একটা অন্যরকম পুজোর ছবি হবে।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অনস্ক্রিন প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী হলেন, কেমন অভিজ্ঞতা?
বুম্বাদা অলওয়েজ লার্নিং এক্সপিরিয়েন্স। সেটা স্ক্রিন শেয়ার করি বা দূরে দাঁড়িয়ে থাকি, সব সময়ই। ফলে একসঙ্গে কাজ করাটাই বিশাল বড় পাওনা। ‘প্রাক্তন’ করে যতটা ভাল লেগেছিল, এটাও তাই।
এই ছবিটা তো আসল হতে চাওয়া নকল মানুষদের গল্প...। এমন মানুষ দেখেছেন?
নিজেকে দেখছি। জীবনে প্রচুর এমন মানুষকে দেখেছি। স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে দেখেছি, আবার মুহূর্তে তা শেষ হয়ে যেতেও দেখেছি। শুধু তাই নয়, তার সঙ্গে ফ্যামিলির লোকজনকেও সাফার করতে দেখেছি। শিল্পীর সঙ্গে যে লোকগুলো সারভাইভ করছে তাদের অবস্থাটা কী, সেটা প্রতি মুহূর্তে খুব কাছ থেকে দেখেছি। (উত্তেজিত হয়ে) তাদের স্ট্রাগলটা কিন্তু অনেক বড়।
আরও পড়ুন, ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’-এ আমার একটা ভেতরের লড়াই আছে: প্রসেনজিৎ
এই ছবিতে যেমন আপনার, অর্থাত্ শিল্পীর স্ত্রীয়ের জীবন...
ইয়েস। ‘শিল্পী হতে গেলে ট্যালেন্ট লাগে, আর শিল্পীর বউ হতে গেলে সাহস...’ (হাসি) - এই ডায়লগটা মানুষের মুখে মুখে ঘুরবে। আসলে কী জানেন, যে কোনও শিল্পীর জীবন সব সময় হটকে। শিল্পী ছোট কি বড়, সেটা বড় কথা নয়। শিল্পী অর্থাত্ যার খিদে আছে, তার জীবনের মিটারগুলো সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা। এটা আমার মাকে দিয়ে খুব বুঝতে পারি। মা রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিল্পী। মায়ের চিন্তাভাবনা, সংসার করার মানসিকতা, সবটাই শেখার। আমি মায়ের মতো নই। আমার ডুজ, অ্যান্ড ডোন্টস আছে। কিছু নির্দিষ্ট প্যারামিটার আছে। কিন্তু মা উড়তা পঞ্ছি। শিল্পীর তেমনটাই হওয়া উচিত। সেই রক্ত আছে বলেই আমি অভিনয় করছি। শিল্পীর জীবনের আসলে গ্রাফটা প্রতিদিন চেঞ্জ হয়।
বুম্বাদা অলওয়েজ লার্নিং এক্সপিরিয়েন্স, বললেন অভিনেত্রী।
আপনি যখন অপরাজিতা হননি, তখন কি কোনওদিনও কারও মতো হতে চেয়েছিলেন?
জানেন, আমার মা স্কুল টিচার ছিলেন। আমরা খুব সাধারণ পরিবার। বাবা-মায়েরা কী চায়, ছেলে মেয়ে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমাদের সময় বাবা-মায়েদের ভাবনা ছিল, মেয়েদের ভাল বিয়ে দেব। আমার বাবা-মা স্বপ্ন দেখেছিলেন আমি শিল্পী হব। সেই মানসিকতাটা নিয়েই বড় হয়েছি। আমি মনে করেছি আমি যেটা চাইছি, আমি যেন সেটাই হতে পারি। আমার কারও মতো হওয়ার দরকার নেই।
আপনি বলছিলেন, প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ের থেকে শেখার কথা, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ও তো তাই?
কৌশিকদার থেকেই তো সব কিছু শিখেছি। আজ ছবি করছি বলে তো নয়। অভিনয়টাই তো কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি ওঝা— এদের থেকে শেখা। কারণ আমি যখন টেলিভিশটা শুরু করি এরা তো দস্তুর মতো কাজ করছে। আজ থেকে প্রায় ১৬ বছর আগে কৌশিকদার সঙ্গে প্রথম কাজ করেছিলাম ‘নোঙর’ নামের একটা টেলিফিল্মে। ১৬ বছর নাকি ১৮... (একটু ভেবে) ২০০০ সালে বোধহয় করেছিলাম। আমাকে কৌশিকদা বলেছিলেন, বাবু শোন প্রথমেই কিন্তু ছাদের ট্রাঙ্কে উঠে পরবি না। সিঁড়ি দিয়ে ধাপে ধাপে উঠে, তবে ওই ট্রাঙ্ক। প্রথমেই ট্রাঙ্কে উঠে পড়লে অভিনয় শেষ। সেটা আমি মন্ত্রের মতো নিয়েছিলাম কথাটা। আসলে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় কখনও ফুরোয় না। আমার একটা শট পাঁচবার নেওয়া হলে আমি খরচ হয়ে যাই। প্রথমটা যেমন দেব পঞ্চমটা তেমন হবে না। কৌশিকদা তেমনটা নয়। ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’এই তো হয়েছে, আমি স্ক্রিপ্টও পড়িনি। জয়সলমিরে গিয়ে সব কিছু জানতে পেরেছি। আমাকে বলেছিল, বাবু চলে আয়, হয়ে যাবে...।
আরও পড়ুন, ‘আমার মতো গার্লফ্রেন্ড থাকলে অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার হয় না’
খুব গরমের মধ্যে তো শুটিং করেছেন আপনারা?
প্রায় ৫০ ডিগ্রিতে শুট করেছি আমরা। ছাতাগুলো পুরো বেঁকে গিয়েছিল...। দু’বার তো অ্যাকসিডেন্ট হতে হতে বেঁচে গিয়েছিলাম...।
তাই নাকি?
হ্যাঁ। প্রথমবার গাড়িটা বলেছিল স্পিডে চালাতে। কিন্তু ড্রাইভার এমন স্পিডে চালিয়েছে, যে ক্যামেরা ভেঙে ভেতরে যারা বসেছিলাম তাদের প্রায় উড়িয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছিল। দ্বিতীয়বার মরুভূমির ওপরে জিপে করে যাওয়ার শট। ড্রাইভারকে বলা হয়েছে ডানদিক চেপে যাবে। ওখানে ওদের বেড়া দেওয়া নির্দিষ্ট রুট আছে। তার বাইরে যেতে পারবে না। কিন্তু ওকে বলা হয়েছে বলে ও কাঁটাতারের বেড়া টপকে চলে গিয়েছে। সেখানে বালির মধ্যে জিপ ঢুকে যাচ্ছিল...।
ছবির দৃশ্যে ঋতব্রত।
সেকি!
ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা...। তবে আমরা খুব মজা করে শুট করেছি।
এই ছবিতে আপনার ছেলের ভূমিকায় ঋতব্রত রয়েছেন তো...
হ্যাঁ। ও কিন্তু মিনি পাওয়ার হাউজ। অনেকদূর যাবে। মৈনাক ভৌমিকের ‘জেনারেশন আমি’তেও কাজ করলাম ওর সঙ্গে। নভেম্বরে হয়তো রিলিজ হবে ছবিটা। ঋতব্রত এখানে খুব ভাল কাজ করেছে।
আরও পড়ুন, ‘সত্যকাম’-এর মধ্যে কতটা সত্য, আর কতটা কাম? অর্জুন বললেন...
এই ছবিতেও আপনার লুকটা কিন্তু খুব চেনা। কখনও মনে হয় না, এই একই লুকে আপনি টাইপকাস্ট হয়ে যাচ্ছেন...
দেখুন, এই ছবিতে আমার লুকটা খুব সিম্পল কিন্তু খুব ভাল হয়েছে। এই লুকেই লোকে আমায় গত ২২ বছর ধরে দেখছে। যেমন মা কোনওদিন পুরনো হয় না, তেমনই এই লুকটাও পুরনো হবে না। এর বাইরে বেরিয়েও দেখেছি, সেটাও অডিয়েন্সের কাছে অ্যাকসেপ্টেড। কিন্তু মানুষের ভাললাগার জায়গা যদি বলেন, তা হলে এই লুকটাই... (হাসি)।
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)