অঙ্কুশ।
প্র: ইদানীং কি প্রায়ই টুপি পরছেন?
উ: না, মানে পরাচ্ছিও। ব্যাপারটা হল, আসলে ছেলেরা যতটা দেখায়, ততটা ঠিক অত্যাচারিত হয় না সব সময়ে। তবু মনে হয় যে, জীবনটা একেবারে শেষ হয়ে গেল (হেসে)। আর তখনই বোধহয় ভুলভাল কিছু স্টেপ নিয়ে ফেলে। এ-দিক ও-দিক যায়। যেমন ‘বিবাহ অভিযান’-এর অনুপমও ঘ্যানঘ্যান করছে...
প্র: কনটেন্ট বদলের যুগে কি কমার্শিয়াল হিরোরা খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছেন?
উ: কমার্শিয়াল হিরোদের আলাদা চাহিদা রয়েছে। তাঁদের কোনও সাহিত্য বা বইয়ের উপরে নির্ভর করার দরকার নেই। বড় হয়েছি ‘ডিডিএলজে’, ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ দেখে। ফলে ওই দিকটা কখনও ছাড়তে পারব না। যুগের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে হবে ঠিকই। সে ক্ষেত্রে কমার্শিয়াল ফিল্মের গল্প বলার ধরন বদলাতে হবে। সেটা হয়তো মিসিং। তবে অনেকে না দেখেই ছবিটাকে বাজে বলে দেন। মানে, ‘স্টুডেন্টস অব দ্য ইয়ার টু’ লোকে খারাপ বলছে। তবু ছবিগুলো তো দেখছে। ব্যোমকেশ-ফেলুদার কিন্তু একেবারে আলাদা ইন্ডাস্ট্রি আছে। সে সব ছবির পোস্টার দেখলেই বাঙালি ঠিক করে ফেলে, হলে দেখতে যাবে। কাউকে ছোট করছি না। আগে সাত-দশ কোটির যে ব্যবসা কমার্শিয়াল ছবি দিয়ে আসত, সেটা কিন্তু সিঙ্গল স্ক্রিনের দৌলতেই। আমি ওই ধরনের হলে গিয়ে দেখেছি, এখানে নোংরা, ওখানে পানের পিক। পরিবার নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। আগে বিকল্প ছিল না। এখন তো শহরতলিতেও মল হয়ে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গেই বলি, কখনও জিৎ-দেব-যশ-সোহমের সঙ্গে শো দেখতে গেলে ক্রেজ়টা বোঝা যায়। কারণ, যে ছেলেটার সিক্স প্যাকস বানানোটা স্বপ্ন, হিরোকে ও ভাবে পর্দাতে দেখেই তার সুখ। আমি এ বছরে এখনও অবধি ৬৫টা শো করেছি। কেন? এক বার কমার্শিয়াল ছবি দেখার পরিবেশ ঠিক করে দেওয়া হলে হয়তো বদলও আসতে পারে।
প্র: মুম্বইয়ে গিয়ে মেকওভার করে এসে ‘ভিলেন’ করলেন। প্রত্যাশিত সাফল্য পেয়েছেন?
উ: সোলো রিলিজ় হলে পেতাম। ‘ভিলেন’-এ স্মার্ট বলিউডি মেকিং, কারও অভিনয় চড়া নয়। ছবিটা যে কিকটা দিয়েছিল, সেটা তো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাজেট তোলার জন্য বেশ কিছু দিন ছবিটা দেখানো জরুরি। কিন্তু সেটা সাতটা ছবির মাঝে কী করে সম্ভব? আরও অনেক ডিজ়ার্ভিং ফিল্ম রিলিজ় করেছিল। সকলেই একা এলে আরও বেশি সফল হত, টাকা উঠত।
প্র: তা হলে একসঙ্গে রিলিজ়ের সমস্যা কি মেটানো যায় না?
উ: সেটা আমি জানি না। একটাই কথা, কারও একটা কমার্শিয়াল ছবি পুজোর মতো মার্কেটে সোলো রিলিজ় করে ব্লকবাস্টার হয়ে বেরিয়ে যাক। বাংলা ছবির ধারণা বদলে যাবে। সেই ছবিটাই বাকি কমার্শিয়াল ছবির ভাগ্য বদলে দেবে।
প্র: বাকি হিরোরা প্রযোজনা সংস্থা খুলছেন। আর আপনি?
উ: যখন ঠান্ডা মাথায় ভাল করে কাজ করতে পারব, যখন চোদ্দো জনকে অনুরোধ করে বেড়াতে হবে না, তখন নিশ্চয়ই খুলব। আর এখনও অত বড়লোক হইনি।
প্র: আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি নাকি ভীষণ কিপ্টে?
উ: আমি নিজের উপরে খরচ করি তো। তবে ফর্ম্যালিটিতে খরচ করতে ভাল লাগে না। হাই-হ্যালো সম্পর্কের কেউ জন্মদিনে নেমন্তন্ন করলে যাই না। কারণ খালি হাতে তো যাব না! অতিরিক্ত কাছের লোকেদের জন্য অবশ্য আলাদা ব্যাপার।
প্র: আপনি নাকি সেটে খুব লেট করে আসেন?
উ: আসলে কলটাইমটা বুঝেই দেওয়া হয় যে লেটে আসবে। এক দিন শুটিংয়ে ঠিক সময়ে পৌঁছেছিলাম। দেখেছি, কেউ আসেনি। তার পর থেকে আর... তবে লেট করার জন্য কখনও
ক্ষতি হয়নি।
প্র: অন্য প্রসঙ্গে আসি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসভিএফ-এর ছবি কমছে। আপনার কী মত?
উ: একগাদা ছবি করে কোয়ালিটির সঙ্গে সমঝোতা করে লাভ কী? বরং এ বার পরিমাণের বদলে গুণগত মানের দিকে নজর রাখলেই ভাল।
প্র: শোনা যায়, কোনও ছবি দেখে ভাল লাগলে আপনি সেটা নিয়ে ছবি তৈরির কথা বলেন?
উ: আমি কোনও দিন রিমেকের বিরুদ্ধে নই। ‘আ জেন্টলম্যান’ দেখে ভাল লেগেছিল। কিন্তু রিমেকে মেকিংয়ের জোর থাকা চাই। ‘অ্যাভেঞ্জার্স’-এ আলাদা কী আছে? মেকিং ছাড়া? কী সব দেখায়... আমি কিন্তু সুপারহিরোদের বিরুদ্ধে নই। আমার কাছে সুপারহিরো দেব-জিৎ-বুম্বাদা। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে পয়সা এনে দিয়েছে। ওরাই আমার ক্যাপ্টেন আমেরিকা, আয়রন ম্যান।
প্র: বাবা যাদবের সঙ্গে ‘ডি ফর ডান্স’ ছবিটার কী পরিস্থিতি?
উ: ছবিটার চিত্রনাট্য সম্পূর্ণ। কিন্তু বাজেট ভীষণ বেশি। ইন্দো-বাংলাদেশে যৌথ প্রযোজনায় করব ভেবেছিলাম। কিছু ঝামেলা হওয়ায় আটকে গিয়েছে।
প্র: আর বিয়েটা কবে করছেন?
উ: আমার বয়সই বা কী? (হেসে) আরও অন্তত দুটো বছর।
রূম্পা দাস
ছবি: নিরুপম দত্ত