বরুণ ও জাহ্নবী
পর্দায় নায়ক-নায়িকাদের গ্ল্যামারের মোহেই আটকে থাকেন দর্শক। কখনও করিনা কপূরের পর্দা ইমেজের জৌলুসে, কখনও ক্যাটরিনা কাইফের শরীরী হিল্লোলে। কিন্তু সুপারস্টারদেরও তো মাঝে মাঝে মাটিতে নেমে আসতে হয়... সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে। গ্ল্যামারের আবরণ ছেড়ে বদলে যেতে হয় ঘাম-ঝরানো খেটে খাওয়া মানুষের চরিত্রে কিংবা ট্রামে-বাসে চড়া ছাপোষা জীবনে।
পরপর বেশ কিছু বলিউড ছবিতে নায়ক-নায়িকাদের দেখা যাচ্ছে সাদামাঠা চেহারায়। নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই ট্রেন্ড একেবারে পোক্ত ভাবে শুরু করেছিলেন আলিয়া ভট্ট। কে ভুলতে পারে, তাঁর ‘হাইওয়ে’ বা ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর নিপাট আভরণহীন চেহারা? কিন্তু কেন হঠাৎ গ্ল্যামারহীন চরিত্রে মাতলেন জনপ্রিয় তারকারা? অবশ্যই চরিত্রের দাবিতে। কিন্তু মজার বিষয় হল, আগে এই ধরনের ভূমিকায় অভিনয় করতেন চরিত্রাভিনেতারা। এক প্রজন্ম আগে ‘অ্যালবার্ট পিন্টো কো গুস্সা কিঁউ আতা হ্যায়’ বা ‘অর্ধ সত্য’য় যে ধরনের চরিত্র করতে দেখা যেত নাসিরউদ্দিন শাহ এবং ওম পুরীকে। এখন সেই চরিত্রগুলোয় যেমন রাজকুমার রাও কিংবা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিদের দেখা যাচ্ছে, তেমনই সাধারণ মানুষের চরিত্র করতে দেখা যাচ্ছে হৃতিক রোশন বা বরুণ ধবনের মতো তারকাদেরও।
আবার স্মিতা পাটিল এবং শাবানা আজমিদের যে ধরনের সাধারণ মেয়ের চরিত্রে দেখা যেত, সেই ঐতিহ্য এখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আলিয়া ভট্ট বা অনুষ্কা শর্মার মতো মূলধারার অভিনেত্রীরা।
বরুণ ও অনুষ্কা
লক্ষ করলে দেখা যাবে, বলিউডে এখন বিষয়বস্তুর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। বিষয়গুলোও চরিত্রনির্ভর। নির্মাতারা দেখেছেন, এই চরিত্রগুলোয় নামজাদা কাউকে নিলেই লক্ষ্মীলাভ! তারকাদের চ্যালেঞ্জিং রোল করার খিদে মেটে, দর্শকেরও পর্দায় তারকা দেখে চোখ জুড়োয়— সুতরাং এক ঢিলে দুই পাখি!
নায়িকাদের অবশ্য গ্ল্যামারহীন অবতারে বারবার দেখা গিয়েছে। ‘রিফিউজি’র করিনা কপূর থেকে শুরু করে ‘সর্বজিৎ’-এর ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন এবং সম্প্রতি ‘পরি’র অনুষ্কা শর্মা— সকলেই চেহারার জৌলুস বর্জন করে আপন করে নিয়েছেন চরিত্রকে। এই তালিকায় বারবার চলে আসেন আলিয়া ভট্ট। মেঘনা গুলজারের ‘রাজি’-তে তিনি স্পাইয়ের চরিত্রে। সেখানেও সাজগোজের তেমন বালাই নেই চরিত্রটির।
হৃতিক
অনুষ্কা আবার ‘সুই ধাগা’-তেও সাধারণ। ফুলছাপ শাড়ি, মেকআপের লেশমাত্র নেই। এ রকমই ডি-গ্ল্যাম চেহারায় কলকাতায় শুটিং করে গেলেন শ্রীদেবী-তনয়া জাহ্নবী কপূর, ‘ধড়ক’-এর জন্য। জাহ্নবী প্রথম ছবিতেই চাকচিক্যহীন রোলে দেখা দেবেন, কেউই অনুমান করেননি।
আলিয়া
পাশাপাশি হৃতিককে জয়পুরের রাস্তায় পাঁপড় বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে আনন্দকুমারের চরিত্রে। বরুণ ধবনকে সাদামাঠা শার্ট পরে সাইকেল চালাতে দেখা গিয়েছে ‘সুই ধাগা’য়। সে দিক থেকে দেখলে, বরুণকে এ বছর একটু বেশিই দেখা যাবে ডি-গ্ল্যাম লুকে। ‘অক্টোবর’-এ তাঁর ছিমছাম লুকও নজর কেড়েছে দর্শকের। সব মিলিয়ে এ বছর ডি-গ্ল্যাম ট্রেন্ডই জমজমাট!