বনি সেনগুপ্ত।
ছ’বছর হয়ে গিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। বিয়ে করছেন ২০২৩-এ। কাকে? সবাই এত দিনে জেনে গিয়েছেন। রিল লাইফের চুমু থেকে রিয়্যাল লাইফের প্রেম, আনন্দবাজার ডিজিটালের সামনে অকপট বনি সেনগুপ্ত।
প্রশ্ন: গত বছর পুজোয় হলে রিলিজ করলেও ‘লাভ স্টোরি’ সে ভাবে লাভের মুখ দেখেনি। এর পরে আবার আপনার ছবি আসছে…
দেখুন, কাজ তো করতে হবে। পুজোর সময় তো ৫০ শতাংশ দর্শক আসন ছিল। কেউ কারও পাশে বসতে অবধি পারছিল না। তবে শুক্রবার ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মমতাদিদি তো বললেন, ১০০ শতাংশ দর্শকাসনের টিকিট বিক্রি করা হবে। স্যানিটাইজ করার উপরেও জোর দিলেন। আর এখন সংক্রমণের সংখ্যাও কমেছে। মানুষ লোকাল ট্রেনে যে ভাবে ভিড়ে ঝুলতে ঝুলতে যাচ্ছে আশা করি সিনেমা হলেও আসবে।
প্রশ্ন: আপনি সব সাক্ষাৎকারে বলেন, বিখ্যাত পরিচালকের ছেলে হলেও আপনার বাবা আপনাকে লঞ্চ করেননি। ৬ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে মনে হয় না, এর উল্টো হলে বেশি ভাল হত?
না মনে হয় না। যে সময়ে আমি লঞ্চ হয়েছি সেই সময়ে কমার্শিয়াল ছবির চেয়ে প্যারালাল সিনেমা জায়গা করে নিচ্ছে। যেমন সৃজিতদার ‘অটোগ্রাফ’, ‘হেমলক সোসাইটি’। তখন জিৎ, দেব, অঙ্কুশের ছবিও ব্লকবাস্টার হয়নি। সেই সময়ে আমি এলাম, দেখতে গেলে ভাগ্যটা ভাল ছিল না। তবে দর্শক আমায় ভালবেসেছে। চ্যানেলে ছবিগুলো দেখালে তার টিআরপি তো দেখি, সেখান থেকে উৎসাহ পাই। ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’ টিআরপি-তে টপ ছিল।
প্রশ্ন: কিন্তু প্যারালাল সিনেমায় আপনাকে দেখা যাচ্ছে না কেন?
আমি তো খুব চেষ্টা করি। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়কে কত বার বলেছি ওঁর ছবিতে কাজ করতে চাই। অরিন্দমদাকেও বলেছি। শিবুদার সঙ্গে একটা প্রজেক্ট নিয়ে কথাও হয়েছিল। এর বেশি আর কী করব? আমি তো শ্রাবন্তীর সঙ্গে সদ্য ‘আজব প্রেমের গল্প’ করলাম। সেটা তো অন্য ধারার ছবি। কিন্তু মজার কথা, আমি আর শ্রাবন্তী আছি বলে লোকে ভাবল এটাও ‘কমার্শিয়াল’ ছবি!
প্রশ্ন: আপনি মারামারি করা, নাচ গান করা হিরো হয়ে থেকে যাচ্ছেন?
হ্যাঁ। একটা মানসিকতা লোকের মধ্যে কাজ করে। ভাল চরিত্র পেলে তবে তো অভিনয় করে দেখাতে পারব।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে জিৎ, দেব, অঙ্কুশের পর আর কোনও অভিনেতার নাম আসে না। কেন?
অঙ্কুশের পরে কিন্তু আমার নাম আসছে। সব্বাই বলছে আমার পরে আর কেউ নেই। লোকে বলে সব দায়িত্ব আমার। সেই কারণে আমিও চিত্রনাট্য বেছে করি।
‘তুমি আসবে বলে’ ছবির দৃশ্য।
প্রশ্ন: ‘তুমি আসবে বলে’ কেমন ছবি?
সোজা করে গল্প বলা হয়েছে এই ছবি। যৌথ পরিবার। তার মধ্যে প্রেম। মানুষ ওই গান আর নাচ দেখতে চাইছে না। এখানে পরিস্থিতি অনুযায়ী গান এসেছে।
প্রশ্ন: রিয়েল লাইফের প্রেম কি বনি-কৌশানি জুটিকে সাফল্য এনে দিয়েছে?
কিছুটা তো বটেই। তবে উল্টোটাও হয়।
প্রশ্ন: মানে?
শ্যুটে এক বার আমাকে সুজিতদা (মণ্ডল) কানে কানে বললেন, ‘একবার চুমু খেতে হবে একটা গানে’। মোদ্দা কথা, ‘কী করে ভুলে থাকব তোকে’ গানটায় কৌশানিকে চুমু খেতে হবে আমায়। আমরা সুজিতদাকে দু’জনেই বলেছিলাম অন স্ক্রিন চুমু খেতে পারব না।
আরও পড়ুন: বড়পর্দায় ইরফান পাঠান, মুক্তি পেল ট্রেলার
প্রশ্ন: কেন?
ব্যক্তিগত জীবনকে সামনে আমি আনতে চাইনি। যদিও আমি পর্দায় চুমু খাওয়ার বিষয়ে সাবলীল। কিন্তু কৌশানি আগে কখনও পর্দায় চুমু খায়নি। তাই আমরা অনেক ভাবনাচিন্তা করি। কথা বলে ধীরে ধীরে সহজ হই। শ্যুট হল। সুজিতদার সঙ্গে কাজ করে খুব খুশি আমরা। রানেদারও ছবিটা এত ভাল লেগেছিল যে এক বছর ধরে বড় পর্দায় রিলিজের জন্য আমরা অপেক্ষা করেছি।
প্রশ্ন: এখন ইন্ডাস্ট্রিতে ছবির গল্পের চেয়ে সম্পর্ক ভাঙার গল্প বেশি। সেখানে দাঁড়িয়ে পাঁচ বছরের বেশি আপনারা সম্পর্কে আছেন…
সত্যি সম্পর্ক নিয়ে ভাবনাটাই দ্রুত বদলাচ্ছে। কত মানুষ আমাকে কৌশানির নামে আর কৌশানিকে আমার নামে কান ভাঙিয়েছে। আমি অন্য কোথাও শ্যুট করছি, সেখানকার কোনও বিহাইন্ড ক্যামেরার লোক কৌশানি যেখানে শ্যুট করছে সেখানেও উপস্থিত। আমি অন্য নায়িকার পাশে চেয়ার টেনে যেই বসলাম, বলা হল তাকে আমি কোলে বসিয়েছি। আমরা দু’জন বিশ্বাসের উপর বেঁচে আছি।
আরও পড়ুন: বড়পর্দা নয়, অমিতাভের জীবনের সেরা অভিনয় মুক্তি পাবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মেই
প্রশ্ন: বিশ্বাস কবে বিয়ের চেহারা নেবে?
২০২৩।
প্রশ্ন: এত দেরি?
আরে, সবে ৩০ হবে আমার। আমরা বাচ্চা ছেলেমেয়ে। আমরা আর একটু ওয়েল সেটেল্ড হই। এক জনের পুরো দায়িত্ব নেওয়া...
প্রশ্ন: কৌশানিও তো আপনার দায়িত্ব নেবে?
হ্যাঁ, জানি। কোথাও গেলে ৫০-৫০ ভাগ হয়। আমি সবটা দিতে চাইলেও ও আমাকে দিতে দেয় না। আমি আবার বলতে থাকি, বিয়ের পরেও এই শেয়ারটা থাকবে তো?