ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।
ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিবাদী সত্তা ফের প্রকাশ্যে। মঙ্গলবার তিনি নেটমাধ্যমে আবারও সরব। এ বার অভিনেতার প্রতিবাদ লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে। যুগ এগোলেও নারী-পুরুষ ভেদাভেদ যে এখনও মোছেনি, অভিনেতার পোস্ট সেই বার্তাই দিচ্ছে।
উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেছেন অভিনয় দুনিয়ার কথা। সেখানে আজও মেয়েরা কী ভাবে এই বৈষম্যের শিকার, অকপটে জানিয়েছেন ভাস্বর। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অভিনেতার অভিযোগ, ‘‘আজও নানা ভাবে মেয়েদের কটূক্তি করা হয়। প্রতি পদে অপমান হজম করে কাজ করতে হয় তাঁদের।’’
ইন্ডাস্ট্রিতে লিঙ্গ বৈষম্যের ছবিটি কেমন? অভিনেতা লিখেছেন, ‘আমি আমার কাজের জায়গার কথা বলতে পারি। এখানে অনেক মেয়ে আছেন। তাঁরা এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার বা কস্টিউম ডিজাইনার অথবা কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন। সারা দিন এঁদের নিয়ে নানা মন্তব্য করা হয় সেটে, স্টুডিয়ো ফ্লোরে, রূপসজ্জা ঘরে।’ সে সব কথা কানে আসে ভাস্বরের। অধিকাংশের কটূক্তি, এরা ‘বাবু ধরে কাজ পেয়েছে’! বেশির ভাগের মত, এরা কাজের কিছু জানে না।
বয়স অনুযায়ী এঁদের ‘বড় মাসি’, ‘ছোট মাসি’ বলে সবাই আড়ালে ডাকেন, দাবি অভিনেতার। কারা এই ধরনের মন্তব্য করেন? ভাস্বর জানালেন, কে নয়! অভিনেতা থেকে কলাকুশলী, সবাই এ ভাবেই আলোচনা করেন। শুধু পুরুষরাই নন, মহিলারাও নাকি এ ভাবেই একে অন্যকে কটাক্ষ করেন। ভাস্বরের আক্ষেপ, একজন মেয়ে যখন আরেক জন মেয়েকে কটূক্তি করেন তখন তাঁর আরও বেশি খারাপ লাগে! তাঁর যুক্তি, ‘‘আমি জানি, সমাজের প্রতি স্তরে, সমস্ত পেশায় এই বৈষম্য রয়েছে। আমি গোটা সমাজ শুধরোতে পারব না। কিন্তু নিজের ইন্ডাস্ট্রির ছবি বদলানোর চেষ্টা করতেই পারি। সেই ভাবনা থেকেই এই পোস্ট।’’
ভাস্বরকে ইতিমধ্যেই সমর্থন জানিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির একাধিক মানুষ। তালিকায় আছেন অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য, পরিচালক রেশমি মিত্র প্রমুখ। ভাস্বরের কথার সুর শোনা গিয়েছে এক মহিলা আইনজীবী নেটাগরিকের মন্তব্যে। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আইনজীবী। পেশার শুরুতে এক প্রতিবেশী ভদ্রলোক রাস্তায় হঠাৎ দেখা হওয়ায় যেচে আমাকে বললেন, মহিলা আইনজীবীরা কী করে মক্কেল পায় আর মামলা জেতে সবাই জানে। ভাগ্যিস মেয়ে। তাই এরা কোর্টে টিকে আছে। অথচ, এই ভদ্রলোকই কিছুদিন পরে নিজের মেয়েকে আইন পড়াবেন বলে আমার সাহায্য চাইতে এসেছিলেন’!