বিয়ে ভাঙছে ভাস্বর-নবমিতার! জমা পড়ল সেপারেশনের পেপার

সেপারেশনের পেপার জমা দিয়েছেন ভাস্বর-নবমিতা।ভাস্বরের মানিয়ে চলার স্বভাবের কারণেই বিয়েটা এত দিন টিকে ছিল। অন্য দিকে, নবমিতার খামখেয়ালিপনার জন্যও দাম্পত্যে সমস্যা তৈরি হচ্ছিল বলে শোনা যায়।

Advertisement

ঈপ্সিতা বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০১
Share:

নবমিতা-ভাস্বর

সাড়ে পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনে ছেদ পড়তে চলেছে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় ও নবমিতা চট্টোপাধ্যায়ের। চলতি বছরের জুনে তাঁরা একত্রে সেপারেশনের পেপার জমা দিয়েছেন কোর্টে। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে সমস্যা। কিন্তু গত এক বছরে সমস্যা আরও তিক্ততর হয়। যদিও এ বিষয়ে তাঁরা প্রকাশ্যে কখনওই আলোচনা করেননি। প্রথম দিকে বিষয়টিকে গুজব বলেই উড়িয়ে দিলেও, খবর চাপা থাকেনি। সম্প্রতি এ ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তাঁরা বিষয়টিকে স্বীকার করে নিলেন। উত্তমকুমারের নাতনি নবমিতার কথায়, ‘‘আমার বিয়ের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। তাই সেপারেশনের পথেই এগিয়েছি।’’ যদিও ভাস্বরের কথায়, ‘‘সেপারেশনের পেপার জমা দিয়েছি। আমাদের হাতে এক বছর সময় আছে। এখনও ডির্ভোসের পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নিইনি।’’

Advertisement

দু’জন মানুষ যখন একে-অপরের সঙ্গে এক ছাদের নীচে থাকতে অস্বীকার করেন, তখন তার পিছনে কিছু কারণ তো থাকবেই। ‘‘দু’জনের মধ্যে কোনও ভাবেই বনিবনা হচ্ছিল না। প্রথম দিকটায় সব মেয়েদেরই শ্বশুরবাড়িতে খাপ খাওয়াতে অসুবিধে হয়। আমিও ভেবেছিলাম, ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যে ধরনের পরিবেশে বড় হয়েছি, তার চেয়ে একেবারেই আলাদা আমার শ্বশুরবাড়ি, এটা বুঝতে সময় লেগে গেল,’’ নবমিতার স্বীকারোক্তি। ভাস্বরও একমত, ‘‘আমি ও নবমিতা একেবারে বিপরীত মেরুর। যেমন, আমি খুব গোছানো, পরিপাটি। কিন্তু নবমিতা একেবারেই অগোছালো।’’

তবে ঘনিষ্ঠদের ধারণা, ভাস্বরের মানিয়ে চলার স্বভাবের কারণেই বিয়েটা এত দিন টিকে ছিল। অন্য দিকে, নবমিতার খামখেয়ালিপনার জন্যও দাম্পত্যে সমস্যা তৈরি হচ্ছিল বলে শোনা যায়।

Advertisement

২০১৪ সালে নবমিতা-ভাস্বরের বিয়ে হয়েছিল। এটি ভাস্বরের দ্বিতীয় বিয়ে। কিন্তু আগের সম্পর্ক তাঁদের বৈবাহিক জীবনে ছাপ ফেলেনি। বিয়ের এক বছর পর থেকেই জটিলতা বাড়তে থাকে। তৃতীয় ব্যক্তি নয়, বরং নিজেদের মধ্যে বন্ডিং তৈরি না হওয়ায় চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে ভাস্বরের বাড়ি ছেড়ে ভবানীপুরে নিজের বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন নবমিতা। যদিও অনেক দিন ধরেই তাঁরা একসঙ্গে ‘বাজল তোমার আলোর বেণু’ ধারাবাহিকে কাজ করছেন। দু’জনের আলাদা আলাদা গাড়িতে বাড়ি ফেরার ঘটনাটি স্বাভাবিক ভাবেই ইন্ডাস্ট্রির লোকজনেরও নজরে পড়ে। কিন্তু এই ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন দু’জনেই। তার পর জুনে ভাস্বর-নবমিতা কোর্টে সেপারেশনের পেপার জমা দেন বলেই খবর। নবমিতার কথায়, ‘‘সাইন করার পর থেকেই দু’জনের মধ্যে এক অদ্ভুত পরিবর্তন এল। পরস্পরের প্রতি জমে থাকা ক্ষোভ, বিরক্তি কোনও এক জাদুবলে উধাও হয়ে গেল।’’

সেই রাতে একসঙ্গে ডিনার করেন দু’জনে। নবমিতা বললেন, ‘‘আগে আমাদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ, কথা বলা সব কিছুই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সই করার পর থেকে আমরা এখন ফোনে কথা বলি। আসলে আমার কাছে ভাল স্ত্রী হওয়ার চাপ চলে গিয়েছে বলেই হয়তো অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে আমাদের সম্পর্ক।’’ সেই সূত্র ধরেই লক্ষ্মীপুজোয় নবমিতার বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন ভাস্বর। নবমিতার কথায়, ‘‘আমার মা ওকে নিমন্ত্রণ করেছিল। তবে জামাই হিসেবে নয়, বন্ধু হিসেবেই আমাদের বাড়িতে এসেছিল। ঠাকুর বির্সজনের সময়ে তাই ডাকা হয়নি।’’ ভাস্বরের কথায়, ‘‘অনেক জটিলতা কেটে গিয়েছে। এমনও হতে পারে, আমাদের মধ্যে এই ক’মাসে খুব ভাল বন্ডিং তৈরি হয়ে গেল। তখন হয়তো আবার আমরা সম্পর্কে ফিরে যেতে পারি।’’ পাকাপাকি বিচ্ছেদ না কি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, কোনটি বেছে নেবেন নবমিতা? ‘‘আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত দু’জনেই নিয়েছি। ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হলে আবার দু’জনকেই মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে হবে। এই মুহূর্তে তা অসম্ভব।’’

স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তিক্ত সম্পর্কের চেয়ে ভাল, বন্ধু হিসেবে আলাদা থাকা, ইন্ডাস্ট্রিতে এমন উদাহরণ রয়েছে। ভাস্বর-নবমিতাও কি সে পথে হাঁটছেন?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement