(বাঁ দিক থেকে)সাহেব ভট্টাচার্য, পল্লবী শর্মা, রণজয় বিষ্ণু। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
গত ৯ অগস্ট থেকে কলকাতার অন্য রূপ। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের নির্যাতন-মৃত্যু বদলে দিয়েছে শহরকে। মৃতার সঙ্গে ঘটা অন্যায়ের বিচার চেয়ে সাধারণের মতো প্রতিবাদী মিছিলে শামিল রুপোলি পর্দার তারকারাও। চলতে থাকা এই আন্দোলনের রূপ আপাতত মঙ্গলবারের ছাত্র সমাবেশ, নবান্ন অভিযান। এমন পরিস্থিতিতে টলিপাড়ার অন্দরের ছবিটা কেমন? মাসে এক দিন ছুটি ছাড়া রোজ টেলিপাড়ায় ক্যামেরা চলে। না হলে ধারাবাহিকের নিয়মিত সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। এ দিনেও কি সেখানে পুরোদমে কাজ চলছে?
জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল একাধিক বাংলা চ্যানেলের সঙ্গে। কথা বলেছে ছোট পর্দার নায়ক-নায়িকা, প্রযোজকের সঙ্গে।
প্রত্যেক চ্যানেলের তরফ থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানানো হয়েছে, সামনেই পুজো। ধারাবাহিকের বাড়তি পর্ব তুলে রাখার অর্থাৎ ব্যাঙ্কিংয়ের চাপ থাকে। শারদীয়ার জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান তৈরি হয়। সব মিলিয়ে, টেলিপাড়ার এখন দম ফেলার সময় নেই। প্রত্যেক ধারাবাহিকের শুটিং হচ্ছে। যে হেতু পুরো বিষয়টি নবান্নকে কেন্দ্র করে, তাই টালিগঞ্জের যান চলাচলে বা অন্য কোনও কিছুতে সমস্যা তৈরি হয়নি। অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও কাজে যোগ দিয়েছেন। একই কথা প্রযোজক অর্ক গঙ্গোপাধ্যায়েরও। তিনিও জানিয়েছেন, কাজ বন্ধ হচ্ছে না। দরকারে সারা দিন কাজের পরে প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নিচ্ছেন অভিনেতারা। পুজোর আগে খুব বড় অঘটন ঘটে না গেলে কাজ বন্ধের কোনও সম্ভাবনাই নেই, বক্তব্য তাঁর। অর্কের কথায়, “টালিগঞ্জে কিন্তু ছাত্র সমাবেশের কোনও ছায়াপাত ঘটেনি। ফলে, অভিনেতাদের যাতায়াতের বিশেষ ব্যবস্থারও প্রয়োজন পড়েনি। ওঁরা রোজ যে ভাবে আসেন, সে ভাবেই এসেছেন। শুটিং করছেন।”
ধারাবাহিক ‘নিমফুলের মধু’র প্রথম দিন থেকেই রমরমা। প্রতি পর্বে একের পর এক মোচড় দর্শককে টেলিভিশনের সামনে বসে থাকতে বাধ্য করছে। ধারাবাহিকের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকে আপাতত ঘুম ভুলেছে, জানিয়েছেন ধারাবাহিকের নায়িকা পল্লবী শর্মা। তাঁর কথায়, “নবান্ন অভিযানের প্রভাব আমাদের এখানে নেই। অনায়াসেই যাতায়াত করছি। আর এখন ছুটি মানেই আমাদের বিপদ। ফলে, প্রত্যেকে কাজে ব্যস্ত।” পল্লবীর কথার সুর সাহেব ভট্টাচার্যের গলাতেও। তিনি ধারাবাহিক ‘কথা’-র নায়ক। সদ্য তিনি গাড়ি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। জানালেন, এখন ভাল আছেন। পুরোদমে শুটিং করছেন। অভিনেতার দাবি, কাজ বন্ধ রাখার বা ছুটি নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে কোনও চ্যানেলই নেই। তাই ক্যামেরা চলছে।
সকলের মুখে যখন চূড়ান্ত ব্যস্ততার কথা, তখনই ভিন্ন সুর অভিনেতা রণজয় বিষ্ণুর। তিনি কিন্তু পারিবারিক কারণে এ দিন ছুটিতে। আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “অনেক দিন ধরে বাড়ির কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ জমে ছিল। তাই ছুটি নিয়েছি। পরে জানতে পারলাম, ধারাবাহিক ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’র সেটও আজ বন্ধ। ধারাবাহিকের শুটিং হচ্ছে না।” নবান্ন অভিযানের জন্যই কি এই পদক্ষেপ? প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। জবাবে রণজয় জানিয়েছেন, প্রকৃত কারণ জানেন না তিনি।