জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডে প্রতিবাদ করার পর একাধিক তারকাকে সমাজমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে। শুরু হয়েছে পক্ষে-বিপক্ষে চর্চা। আরজি করের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে নিয়মিত সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক মিছিলেও তিনি অংশ নিয়েছেন। কিন্তু ‘ট্রোলিং’-এর হাত থেকে অভিনেতার রেহাই নেই!
তবে সমাজমাধ্যমে ট্রোলিং নিয়ে জয়জিৎ কিন্তু বিচলিত নন। তাঁর ফেসবুক পোস্ট বলছে, ‘‘সমস্ত রাজনৈতিক কর্মী, সমর্থক, আইটি সেলের মানুষ, সক্কলকে বলছি, মন ভরে গালি দিন আমাকে, কোনও চাপ নেই। কিন্তু, সঠিক বিচার চাই।’’ জয়জিৎ জানালেন, তিনি জানতেন, মুখ খুললেই কটাক্ষ ধেয়ে আসবে। বললেন, ‘‘আসলে আমি তো কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই! তাই সত্যি কথা বললে আমাকে টার্গেট করা হচ্ছে। আমার তাতে কোনও আপত্তি নেই। তা ছাড়া শুক্রবার কুণাল ঘোষও তো তাঁর পোস্টে অনেক কিছুই স্পষ্ট করে দিয়েছেন।’’
জয়জিৎ বিশ্বাস করেন, প্রতিবাদের ভাষা ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয়। কিন্তু কিছু না জেনেই তাঁকে নিশানা করছেন ট্রোলারদের একাংশ। জয়জিৎ বললেন, ‘‘আমি নাকি রাস্তায় নামিনি! আমি তো জনে জনে প্রমাণ দিতে পারব না, সেটা আমার দায়িত্বও নয়। যাঁদের খবর রাখার, তাঁরা ঠিকই জানেন।’’ একই সঙ্গে জয়জিৎ জানালেন, তিনি কোনও ‘সস্তা’ প্রচারের টানে মিছিলে হাঁটেননি। অভিনেতা বললেন, ‘‘নিজের মন আমাকে বলেছে, প্রতিবাদ করা উচিত, মিছিলে হাঁটা উচিত। তাই হেঁটেছি।’’
আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে প্রতিদিন পথে নামছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে যে ভাবে নানা মত প্রকাশ্যে আসছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জয়জিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি দিনই নতুন কিছু জানতে পারছি। অনেকগুলো প্রশ্নের এখনও কোনও উত্তর নেই। অপেক্ষা করতে করতে শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা ভেবেই চিন্তা হচ্ছে।’’
ফেসবুকে তাঁর পোস্টে আরজি করের ঘটনাটিকে ২০০৪ সালের ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির সঙ্গে তুলনা করেছেন জয়জিৎ। তিনি লেখেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আর একটা ধনঞ্জয় কেস হতে পারে এটাও। ধনঞ্জয় কিন্তু ফাঁসিতে ঝোলার আগেও বলে গিয়েছিল, সে নির্দোষ।’’ জয়জিৎ বিশ্বাস করেন, প্রত্যেক মানুষেরই সমাজের জন্য নিজের মতো করে কিছু দেওয়ার থাকে। বললেন, ‘‘এই ঘটনায় যদি দোষীদের সাজা না হয়, তা হলে পরবর্তী প্রজন্মকে আমরা কী উদাহরণ দেব!’’