ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মিসেস ইউনিভার্সেস বাংলাদেশ ২০২২’ প্রতিযোগিতার ‘মিসেস এশিয়া বাংলাদেশ ২০২২’ বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন রাহা। সংগৃহীত
বাংলাদেশের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে আয়োজকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনলেন রাহা নামের এক যুবতী। টাকা আত্মসাৎ করার পাশাপাশি ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়েছেন আয়োজক অপূর্ব আবদুল লতিফ ও তাঁর স্ত্রী জোনাকি, এমনই অভিযোগ রাহার। সেই মর্মে গুলশান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
গত ১১ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মিসেস ইউনিভার্সেস বাংলাদেশ ২০২২’ প্রতিযোগিতার ‘মিসেস এশিয়া বাংলাদেশ ২০২২’ বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন রাহা। তাঁর দাবি, ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া তাইল্যান্ডের ‘মিসেস এশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ২০২২’ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল এর পর। সেখানে পাঠানোর কথা বলে অপূর্ব ডটকমের মালিক লতিফ ও তাঁর স্ত্রী জোনাকি ভিসা, বিমানভাড়া, খাওয়াদাওয়া, থাকা ও অনুষ্ঠানের জন্য পোশাক কেনা বাবদ তাঁর কাছ থেকে ছয় লক্ষ টাকা ও পাসপোর্ট নিয়েছেন বলে অভিযোগ রাহার। কিন্তু দিন যতই এগিয়ে আসছিল কোনও সাড়া মেলেনি আয়োজকের তরফে। এর পর খোঁজখবর নিতে গেলে গেলে তাঁকে আরও ১৪ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়, জানান রাহা। বিপদ বুঝে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তখনই।
বাংলাদেশের সংবাদ সংস্থা ‘প্রথম আলো’কে রাহা বলেন, “তাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য ৮ নভেম্বর ছয় লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম আমি। এর পর ১৪ বা ১৫ নভেম্বর খোঁজ নিতে অপূর্ব ডটকমের ওখানে গিয়েছিলাম। কারণ, আমি জানতাম, তাইল্যান্ডে ২০ নভেম্বর থেকে ‘মিসেস এশিয়া ইন্টারন্যাশনাল’ শুরুর কথা। কিন্তু যাওয়ার ব্যাপারে কোনও খবরই পাচ্ছিলাম না। জানতে গেলে তাঁরা দু’জন( লতিফ এবং জোনাকি) জানান, এবার যাওয়া হচ্ছে না। তার পরও এখন যদি আমি অনুষ্ঠানে যেতে চাই, তাহলে আরও ১৪ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তখনই আমার সন্দেহ হয়।”
রাহা আরও বলেন, “ভাবলাম, অনুষ্ঠান ২০ নভেম্বর থেকে শুরু। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগেও বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা আছে সেখানে। তাই এখন বাড়তি টাকা দিলেও তো এত অল্প সময়ে আমি গিয়ে কিছু করে উঠতে পারব না। পুরো বিষয়টি আমার কাছে ভুয়া মনে হচ্ছিল। তাই আগের দেওয়া ছয় লক্ষ টাকা ফেরত চেয়েছিলাম। তখন তাঁরা জানিয়েছিলেন, এসব টাকা ফেরত দেওয়া হয় না। তার পরও আমি টাকা ফেরত চাওয়ায় আমায় হুমকি দেন তাঁরা।”
রাহার দাবি, তাঁর কাছে প্রমাণ হিসাবে টাকা দেওয়ার রসিদও আছে। কিন্তু কী বলছেন অভিযুক্ত আবদুল লতিফ? তাঁর দাবি, রাহা মিথ্যা বলছেন। টাকা নেওয়ার বিষয়টিও হেসে উড়িয়ে দেন তিনি।
আয়োজকের দাবি, “রাহার কাছ থেকে আমরা কোনও টাকাই নিইনি। রাহার তাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য এমএইচ ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্পনসর করার কথা ছিল। শেষ সময়ে এসে তারা টাকা দিতে পারেনি। এ জন্য রাহার যাওয়ার বিষয়টি বাতিল হয়েছে। এতটুকুই।”
এ দিকে রাহা দাবি করছেন, তাঁর কাছে রসিদ রয়েছে লেনদেনের। সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে লতিফ বলেন, “প্রমাণ থাকলে দিতে বলা হোক তাঁকে। এ সব মিথ্যা।” আরও জানান, মিথ্যা কথা রটানোর জন্য রাহার বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনি পদক্ষেপ করতে চান তিনি। পাল্টা অভিযোগ এনে বললেন, “তার পর থেকে একাধিক বার মেসেজ করেছি। ফোন করেছি রাহাকে। ও ফোন তোলে না। উত্তর দেয় না।”
লতিফের এই অভিযোগ শুনে রাহা বলেন, “এ নিয়ে আমি তাঁদের সঙ্গে আর কোনও কথা বলতে চাই না। আমার কাছে প্রমাণ আছে কি নেই, সেটা আইনি ভাবেই সমাধান হবে। সাধারণ ডায়েরি করেছি, প্রমাণাদি নিয়ে মামলায় যাব এ বার।”