প্রভাবতী দেবী এখন গল্পে কী করছেন?
এখন দেখা যাচ্ছে ছোট নেতাজি সবসময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে। মানুষের যে কোনও বিপদ আপদে ছুটে যায়। বাবা-মার অনুমতি ছাড়াই নেতাজি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। মা-বাবা চেষ্টা করছে যাতে বিপ্লবীদের থেকে ছোট্ট নেতাজিকে দূরে রাখা যায়। কিন্তু তাকে আটকে রাখতে পারছে না। দেখা গিয়েছে যে কটকে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে এবং নেতাজি তার মাস্টারমশাই এবং সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে মানুষের পাশে থেকে সাহায্য করছে, ত্রাণ সংগ্রহ করছে। এতে মা বাবার সমর্থন আছে। কিন্তু মা চাইছেন না যে, নেতাজি সক্রিয়ভাবে এই বয়সে এই সব কাজে জড়িয়ে পড়ুক। এই মুহূর্তে নেতাজির সহপাঠী মঙ্গল খুবই অসুস্থ। নেতাজি তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছে। এদিকে মা দেখছেন যে, তাকে আটকে রাখা যাচ্ছে না। ফলে এখন তিনি ভাবছেন তার কাজে সাহায্য করাটাই দরকার। তাই মাও মঙ্গলের সেবা শুশ্রূষায় অংশ নিয়েছেন। মায়ের এই মত পরিবর্তনে সুভাষ খুশি হয়েছে।
গল্পের প্রভাবতী দেবী সুভাষচন্দ্রকে কতটা প্রভাবিত করছেন?
এই বিষয়ে যে খুব বেশি জানি তা বলব না। যখন কাজ শুরু করি তখন সত্যি প্রভাবতী দেবী সম্পর্কে খুব একটা কিছু জানতাম না। এ বিষয়ে কৃষ্ণা বসু খুব হেল্প করেছেন। ওনার কাছে যাই, উনি অনেক ইনফরমেশন দেন। এছাড়া এই সিরিয়ালের স্ক্রিপ্ট ও গবেষণার কাজে যুক্ত প্রত্যেকে হেল্প করেছেন। যে কোনও মানুষের জীবনেই মায়ের ভূমিকা তো থাকেই... তো... সুভাষচন্দ্র’র জীবনেও ছিল। ব্যক্তিগত জীবনে উনি খুব কড়া ধাঁচের মানুষ ছিলেন। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফট্, মমতাময়ী হিসেবেও গল্পে প্রভাবতী দেবীকে দেখানো হচ্ছে।
আপনাকে এইরকম চরিত্রে আগে দেখা যায়নি। চরিত্রটা করার কারণ কী?
এই চরিত্রটা আমার বয়সের থেকে অনেক বেশি বয়সের। তাঁর বড় বড় ছেলে আছে। অন্য সিরিয়ালে এরকম চরিত্র হলে করতাম না। যেহেতু প্রভাবতী দেবী, নেতাজির মা... একটা অন্য রকম চরিত্র... তাই রাজি হয়েছি।
আরও পড়ুন, রাজনীতি, শুটিং… বিয়ের পর নতুন জীবনে কেমন আছেন নুসরত?
অন্য কোনও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন?
হ্যাঁ। অন্য কোনও সিরিয়াল করছি না। কিন্তু ভাল স্ক্রিপ্ট হলে ছবির কাজ করছি।
হাতে কী কী ছবির কাজ?
গত বছর থেকেই অনেকগুলো ছবির কাজ করলাম। কিছু ছবির পোস্ট প্রোডাকশন চলছে, কিছু ফেস্টিভ্যালে পাঠানো হয়েছে। সে জন্য রিলিজ হতে দেরি হচ্ছে। শৈবাল মিত্র’র ‘তখন কুয়াশা ছিল’, দেবদূত ঘোষের ‘আদর’, অভিজিৎ গুহ- সুদেষ্ণা রায়ের ‘শ্রাবণের ধারা’, উজ্জ্বল বসু-সুরজিত নাগের ‘মিছিল’, সৌকর্য ঘোষালের ‘রক্ত রহস্য’, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের ‘আকাশ অংশত মেঘলা’ প্রভৃতি ফিল্ম করলাম। আর একটা ছোট ছবি করলাম, নভেম্বর বিপ্লবের একশ বছর সেলিব্রেট করার জন্য তৈরি করা হয়েছে, নাম ‘উইকেণ্ডে সূর্যোদয়’।
শুটিংয়ে খুদে নেতাজির সঙ্গে বাসবদত্তা।
ফিল্ম ও সিরিয়ালে অভিনয় করা কী একইরকম, নাকি আলাদা?
একটু তো আলাদা অবশ্যই। ছবিতে একটা কাজ যত্ন নিয়ে করা যায়, সময় দিয়ে করা যায়, টেলিকাস্টের চাপ থাকে না। সিরিয়ালে অনেক সময় খুব ভাল সিন তাড়াহুড়োর জন্য খারাপ হয়ে যায়। ছবি হলে ওই সিনটাই যত্ন নিয়ে করা যেত।
ব্যক্তিগত জীবন কেমন চলছে?
এখন একটু শুটিংয়ের চাপ আছে। চাপের মধ্যে যেরকম চলে আরকি (হাসি)। সাংসারিক জীবন কাটাচ্ছি...শ্বশুরবাড়ির লোকজন, আমার মা, আমার হ্যাজব্যান্ড সবাই খুব কোঅপারেট করেন। ফলত অসুবিধা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন, ‘বর্ণপরিচয়’-এ প্রথমবার এক ফ্রেমে যিশু-আবির, দেখুন ট্রেলার
নেতাজির সঙ্গে কেমন মজা হচ্ছে?
ও! খুবই মজা হয়। শুধু নেতাজি বলে না... পুরো ইউনিটটাই... বিশেষ করে সহ-অভিনেতাদের কথা বলছি... মজা, আড্ডা, খাওয়া দাওয়া চলতেই থাকে... এইগুলোতেই বেশি ব্যস্ত থাকি, মাঝে মাঝে শুটিং করি- এইরকম একটা অবস্থা (হাসি)। সেই জানুয়ারি থেকে আমরা শুট করছি। এখন এমন হয়ে গেছে যে একদিন শুটিং না থাকলে আমরা হাঁপিয়ে উঠি।
শুটের বাইরে কাদের সঙ্গে আড্ডা জমে?
অনেকেই আছে... বন্ধুবান্ধব... যাদের ভাল লাগে, ওয়েভ লেন্থ ম্যাচ করে তাদের সঙ্গেই আড্ডা মারি। আমার দুর্নাম আছে যে আমি সবার সঙ্গে মিশি না, আমি খুব স্নব, অহঙ্কারী। তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। এক জীবনে সবার মন জয় করা তো সম্ভব নয়... সবাই আমাকে ভাল বলবে, প্রশংসা করবে এটা হতে পারে না। যাঁরা প্রশংসা করেন তাঁরা সত্যিই হয়তো ভাল।
দর্শকরা কী বলছেন?
সকলেরই খুব ভাল লাগছে। আবার আমার কিছু কিছু ফ্যান আছেন যারা আমাকে মায়ের ক্যারেক্টারে দেখতে ঠিক পছন্দ করছেন না।
বাসবদত্তা আসলে যেমন।
কেন?
যখন ওই ‘বয়েই গেল’ বা ‘মন নিয়ে কাছাকাছি’ করেছিলাম... ওই হিরো-হিরোইনের প্রেম... এই ব্যাপারটা তাঁরা মিস করছেন... ওখানে তো নায়িকা ছিলাম। এখানে বয়স্ক মা, এতগুলো ছেলেমেয়ে... অনেকে মেনে নিতে পারছেন না।
তা হলে কি আগের চরিত্রগুলো দর্শকদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য ছিল?
হ্যাঁ, আগের সিরিয়ালের চরিত্রগুলো অনেক বেশি অ্যাকসেপ্টেড। এখানে আমার অ্যাকচুয়াল বয়সের থেকে বেশি বয়সের চরিত্র করছি। স্বাভাবিক যে নিজের বয়স অনুযায়ী যে চরিত্র করেছি সেগুলোই মানুষের বেশি পছন্দ হবে।
আরও পড়ুন, ‘কলের বউ’ আর ‘ঘরের বউ’-এর ভারসাম্য রাখতে গিয়ে কি নার্ভাস তৃণা?
প্রভাবতী চরিত্রর জন্য ব্যক্তি জীবনে মজার কিছু হল?
মজার বলতে... আমার হ্যাজব্যান্ড অনির্বাণ...ওর পরিচিত কিছু লোকজন ওকে জানকিনাথ বসু (নেতাজির বাবা) বলে ডাকছে... হা হা...। আমার মাকেও অনেকে মজা করে বলছে, ‘কি, নাতি (নেতাজি) কেমন আছে?’
এখনও প্রোপোজাল পাচ্ছেন?
হ্যাঁ হ্যাঁ... সে তো আসেই। আমার ফেসবুকে অনেকে প্রোপোজ করে। আগেও আসতো, বিয়ের পরেও আসে। মজা লাগে (হাসি)।
(টলিউডের প্রেম, টলিউডের বক্স অফিস, বাংলা সিরিয়ালের মা-বউমার তরজা -বিনোদনের সব খবর আমাদের বিনোদন বিভাগে।)
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।