সম্প্রতি নিজের অসহায়তার কথা জানিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করেন হিরো। ছবি—প্রথম আলো
ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ থেকে আয় প্রায় উঠে যেতে বসেছে। বাধ্য হয়ে গোয়েন্দা পুলিশের শরণাপন্ন হলেন হিরো আলম। শনিবার তিনি পৌঁছে যান ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)-এর কার্যালয়ে। কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের সঙ্গে। তাঁর কাছ থেকে আশ্বাস পান সমস্যা সমাধানের। আগামী নির্বাচনে দাঁড়ানোর ইচ্ছা হিরোর, তাতেও সহযোগিতা করবেন বলেও জানান গোয়েন্দা আধিকারিক।
অনেক দিন ধরেই হালে পানি পাচ্ছেন না আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। চেহারা ও স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁকে নানা ধরনের বিদ্রুপ-কটূক্তির মুখোমুখি হতে হয়। বাংলাদেশের অভিনেতা, পরিচালকরাও বেশির ভাগই তাঁর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি হিরো আলমের উত্থানকে অপসংস্কৃতি, অশিক্ষা এবং কুরুচিকর বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের বর্ষীয়ান নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদ। এতেও প্রতিবাদ না করে হিরো বলেছিলেন, “তিনি আমার বাবার মতো, তাঁর বিরুদ্ধে আমি কখনওই মামলা করব না।” কিন্তু সমাজমাধ্যমেও কোণঠাসা হয়ে যাওয়ার পর আর চুপ করে থাকতে পারলেন না তিনি।
সম্প্রতি নিজের অসহায়তার কথা জানিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করেন হিরো। ক্যাপশনে লেখেন, “আজ আমি অসহায় হয়ে ডিবি অফিসে গিয়েছিলাম” সেই শিরোনামের ভিডিয়োটি প্রায় ৮ মিনিটের। যেখানে কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ইউটিউবার হিরো আলম বলেন, “আমার মাত্র একটাই ইউটিউব চ্যানেল, একটাই ফেসবুক পেজ; সেটাকে স্ট্রাইক মেরে মেরে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আমার কিছু কনটেন্ট তারা নিজেদের নামে লাইসেন্স করে নিয়েছে।”
হিরোর কাতর জিজ্ঞাসা, “আমি এ বিচারটা কার কাছে দেব, বলুন? আমি তো ডিবি অফিসে যেতে চাইনি, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চাইনি, আমি তো কারও দরবারেও যাই না। কারও কাছে সহযোগিতার জন্যও যাই না। তাহলে আপনারা কেন আমার উপর মানসিক নির্যাতন জারি রাখছেন সব সময়?”
হিরোর দাবি, তিনি এ রকম জীবন চাননি। তাঁর কথায়, “আমি তো আর দশটা ছেলের মতো চলাফেরা করতে চেয়েছি, মানুষের মধ্যে থাকতে চেয়েছি।”
তাঁর কণ্ঠে ঝরে পড়ে আক্ষেপ, হতাশা। তিনি ওই ভিডিয়োবার্তায় বলেন, “আমি আজ একটা অবহেলার পাত্র। মানুষ কেন আমাকে ঘৃণা করে বলুন তো? কেন অবহেলা করে?”
ডিবি প্রধান হারুন অল রশিদের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন হিরো। বলেন, “আপনারা দেখেছেন, চলচ্চিত্রের কিছু লোক আমাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় নানা ধরনের কথা বলছেন। আগে আমাকে কেউ বকা দিলেও প্রতিবাদ করতাম না। কিছু চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেতা-অভিনেত্রী আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা ছড়াচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আমি লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছিলাম ডিবির অফিসে।”
কাদের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ— সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে হিরো বলেন, “আমি কয়েক জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেছি। এতে যাঁরা আমাকে নিয়ে নানা ধরনের কথা বলেছেন, তাঁদের নাম আছে। এ ছাড়া আমার কনটেন্টে যাঁরা রিপোর্ট করেছেন, তাঁদের নামও আছে।” তবে কারও নাম আলাদা করে বলতে চাননি তিনি।