শুটিংয়ের ফাঁকে বাবুল। ছবি: সুপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়
ভবানীপুরে নতুন ছবি ‘রাইফেল’-এর শুটিং করে গেলেন বাবুল সুপ্রিয়। ভোট-পরবর্তী তিনি এখন আরও সপ্রতিভ, আরও ‘উইটি’। আড্ডার ছলে সাক্ষাৎকার চলল তাঁর মেকআপ ভ্যানে বসেই।
প্র: ছবিতে অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের স্বামীর চরিত্রে আপনি। এ দিকে প্রসেনজিৎকে দাদা বলেন!
উ: (হাসতে হাসতে) হ্যাঁ, ঘটনাচক্রে এই ছবিতে আমার স্ত্রী আসলে আমার বৌদি! প্রসেনজিৎকে অনেক দিনই দাদা বলি। তাই অর্পিতা বৌদি। আর যে কোনও হাজ়ব্যান্ডের জীবনে একটাই রোল, তার ওয়াইফের হাজ়ব্যান্ড হয়ে থাকা!
প্র: আপনারও কি হোম মিনিস্ট্রির কথাতেই ওঠাবসা?
উ: অন্তত বৌকে এটা বিশ্বাস করিয়ে রাখতে পেরেছি যে, সেটাই হয়! আদপে যে নয়, সেটা তো বাকিরা বলবে।
প্র: বাবুল সুপ্রিয় কার কথা সবচেয়ে বেশি শোনেন? স্ত্রী, দল না কি নিজের মন?
উ: আমি শুধু নিজের মনের কথাই বেশি শুনি। অন্যদের কথা শুনলে জীবনে কোনও রিস্ক নিতেই পারতাম না।
প্র: এখন তো বড় বাজেটের ছবিগুলোতেই বেশি দেখা যাচ্ছে আপনাকে। সাংসদ হওয়ার পরে কি চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু মাথায় রাখতে হয়?
উ: আমি পয়সার জন্য ছবি করি না। প্যাশনের জন্য করি। আমি তো অভিনেতা নই। তাই কোনও উন্নাসিকতা নেই। ক্রেডিবল আর্টিস্ট আর কমফর্টেবল এনভায়রনমেন্ট পেলেই রাজি হই। আমি হিপোক্রিট নই। শিল্পীসত্তা সন্তুষ্ট হলেই আমি খুশি। এই তো... সৃজিত (মুখোপাধ্যায়) আমাকে দুটো ছবিতে একদম আলাদা চরিত্র করতে দিল। একটাতে তো চুলটুল পুরো কেটে ফেলতে হয়েছিল। টুপি পরে ক্যাবিনেট মিটিং করেছি তখন। এ দিকে পার্লামেন্টে টুপি পরে ঢোকা যায় না! এক এক জনকে এক এক রকম গল্প বলতাম। কাউকে বলেছি, মাথায় খুশকি হয়েছে। কাউকে বলেছি, ঠোকা লেগে ফুলে গিয়ে বিশ্রী দেখতে লাগছে!
প্র: গানের জন্য সময় পান?
উ: আমার ঘরেই যেহেতু একটা পিয়ানো রাখা আছে, ওটার দিকে তাকালে মনে হয় রাজনীতি আর কাজের জন্য যতটা সময় দিই, গানের জন্য ততটা এখন আর দিতে পারি না। যদিও দৃঢ় ভাবে এটাও বিশ্বাস করি যে, মুম্বইয়ে থাকলেও আমাদের মতো আর্টিস্টদের এখন আর কাজ দেওয়া হয় না।
প্র: শো করেন?
উ: মাঝে মাঝে করি। দিদি যদি ছবি বিক্রি করে পার্টি চালাতে পারেন, আমিও গান গেয়ে চালাতে পারি। কারও আপত্তি থাকার কথা নয়।
প্র: আপত্তির জন্য নয়। সময় পান শো করার?
উ: জীবনে যা করতে চাই, সব কিছুর জন্যই সময় আছে। আই জাস্ট নিড টু লাভ দ্যাট। স্ত্রীর সঙ্গে বাইকে চেপে রাত দেড়টার সময়ে আইসক্রিম খেতে যাওয়ারও সময় আছে। আমার যে রাজনৈতিক লক্ষ্য, তাতে বিস্তারিত যাচ্ছি না, কিন্তু সেখানে সফল হওয়ার জন্য ‘তৃণমূল আর না’ গানটা করেছিলাম। তার ৩.৮ মিলিয়ন হিটস হয়েছে। হিন্দি গানেও এত হয় না, এমন ভাইরাল!
প্র: কাটমানি নিয়ে নচিকেতা চক্রবর্তী যে গানটি দিন কয়েক আগে গাইলেন এবং তা শেয়ার করে আপনার যে পোস্ট, তা নিয়ে কিছু বলবেন?
উ: মন্তব্য করতে চাই না। কারণ নচিকেতাবাবুর ভক্তরা আমার টুইটার এবং ফেসবুকের ওয়ালটা একদম নর্দমা বানিয়ে ফেলেছিলেন। নিজের ভক্তদের নিয়ন্ত্রণে রাখার একটা দায় কিন্তু শিল্পীর থেকেই যায়। নচিকেতাবাবু আমার বন্ধু ছিলেন, আছেনও। যেহেতু বৃহত্তর স্বার্থে গানটি গেয়েছিলেন, আশা করব ২১ জুলাইয়ের মঞ্চেও গানটা তিনি গাইবেন।
প্র: আপনার দলের সদস্যরাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দুটো নতুন সংগঠন তৈরি করেছেন। এ বার কি ইন্ডাস্ট্রিতেও জমি-দখলের লড়াই দেখা যাবে?
উ: আমাকে কিন্তু দুটো অনুষ্ঠানের কোথাও দেখা যায়নি। বেশি কিছু বলতে চাই না। শুনছিলাম, বিএমএস-এর (ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ) ব্যানারেই যা হওয়ার হবে। টালিগঞ্জে যে ধরনের অন্যায়, যে ধরনের মাফিয়া রাজ খোলামেলা ভাবে চলছে, কেউ যদি আমাদের সঙ্গে আসতে চায়, আসুক না!