৯২তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের মঞ্চে লেখা হল নতুন ইতিহাস
Joaquin Phoenix

অস্কারের দুই অঙ্ক প্রত্যাশা আর রাজনীতি

ঠিক যেমনটা ভাবা হয়েছিল, তেমনটাই হয়েছে অস্কারের বিজয়ী তালিকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:২৫
Share:

ওয়াকিন

ঠিক যেমনটা ভাবা হয়েছিল, তেমনটাই হয়েছে অস্কারের বিজয়ী তালিকা। সাম্প্রতিক পুরস্কার অনুষ্ঠানগুলিতে যে সব নাম উঠে এসেছিল, এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেরা অভিনেতা, অভিনেত্রী, সহ-অভিনেতা, সহ-অভিনেত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে চমক নেই। প্রত্যাশিত নামের হাতেই উঠেছে অস্কার ট্রোফি।

Advertisement

কিন্তু সব পুরস্কারের শীর্ষে যে সম্মান, সেখানে কিছু ব্যতিক্রম তো থাকবেই। সেই ব্যতিক্রমের নাম ‘প্যারাসাইট’। এই প্রথম কোনও বিদেশি ভাষার সিনেমা অস্কারে সেরা ছবি পেল। বং জুন-হো সেরা পরিচালকও হয়েছেন। চারটি অস্কার পাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার এই ছবির পুরস্কৃত হওয়ার নেপথ্যের কারণ কি রাজনীতি? উঠছে এমন প্রশ্নও।

অস্কারের মঞ্চ থেকে রাজনীতি কোনও দিনই দূরে থাকেনি। ৯২তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস থেকেও থাকল না। সেরা সহ-অভিনেতার পুরস্কার নিতে উঠে ব্র্যাড পিট সরাসরি রাজনৈতিক প্রসঙ্গ তুলে আনেন, ‘‘ওরা আমাকে বলল ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে সেরে নিতে। ঠিক আছে, জন বল্টনকে যতটা সময় দিয়েছিল সেনেট, তার তুলনায় ৪৫ সেকেন্ড তো অনেক বেশি।’’ প্রসঙ্গত, জন বল্টন ছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি অ্যাডভাইজ়ার। তাঁর লেখা বইয়ের জন্য বল্টন এখন মার্কিন সরকারের চক্ষুশূল।

Advertisement

মনুষ্যত্ব আর সমতার কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বিরোধী সুর চড়িয়েছেন সেরা অভিনেতা ওয়াকিন ফিনিক্সও, ‘‘অ্যাওয়ার্ড পেলেও অন্যান্য মনোনীত বা এখানে উপস্থিত সকলের চেয়ে নিজেকে উচ্চতর কিছু ভাবতে পারছি না। কারণ আমরা সকলেই এক। সিনেমার প্রতি ভালবাসা আমাদের এক করেছে।’’ গত জানুয়ারিতেই পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি বিক্ষোভ সভায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ফিনিক্স। অস্কারের মঞ্চেও অভিনেতা বর্ণবৈষম্য, লিঙ্গবৈষম্য, পশুপ্রাণীর অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরলেন। ‘‘একটি জাতি, একজন ব্যক্তি, একটি লিঙ্গ, একটি প্রজাতি... সারা জীবন ধরে কর্তৃত্ব করবে, এমনটা হয় না।’’ ২৩ বছরে অকালপ্রয়াত ভাই রিভারের কথা দিয়ে ওয়াকিন তাঁর বক্তব্য শেষ করেন, ‘‘আমার ভাই ১৭ বছর বয়সে লিখেছিল, ‘রান টু দ্য রেসকিউ উইথ লাভ অ্যান্ড পিস উইল ফলো’...’’ ওয়াকিনের বক্তব্যে চোখের জল, হাততালি কোনওটাই বাঁধ মানেনি।

মনোনয়নের তালিকায় শুধু সাদা চামড়ার মানুষদের নাম থাকায় একবার আওয়াজ উঠেছিল ‘অস্কার ইজ় হোয়াইট’। এ বারের ধ্বনি ‘নো ভ্যাজাইনা’। কারণ, সেরা পরিচালকের মনোনয়নে কোনও মহিলা নির্দেশকের নাম ছিল না। অথচ একাধিক মহিলা পরিচালকের ছবি উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে এ বছর। উপস্থাপকেরা সেরা পরিচালক ঘোষণার সময়ে এ নিয়ে অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষকে একচোট ঠুকেও দেন। তবে স্টাইলিশ প্রতিবাদে সকলকে চমকে দিয়েছেন নাটালি পোর্টম্যান। তাঁর ডিয়রের ব্ল্যাক কেপে লেখা ছিল আটজন মহিলা পরিচালকের নাম। রেড কার্পেটে নাটালি বলেন, ‘‘আমি তাঁদের চেনাতে চাইছিলাম, যাঁদের চিনতে চাওয়া হয়নি।’’ গ্রেটা গারউইগের ‘লিটল উওম্যান’ বেশ কয়েকটি বিভাগে মনোনীত হলেও সেরা পরিচালকের দৌড়ে গ্রেটার নাম ছিল না।

বর্ণবৈষম্যের বিভাজন ঘোচাতে অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষ খানিক সফল হয়েছে। এ বার কি তারা লিঙ্গবৈষম্য ঘোচাতে পারবে? দর্শকের চোখ আগামী অস্কারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement