রহস্য-রোমাঞ্চ-অভিযান এমনিতেই বাঙালির প্রিয়। ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘সোনাদা’ সিরিজ়ের তৃতীয় ছবি ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ মুক্তি পাচ্ছে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর।
পুজোয় দর্শক কেমন ছবি দেখতে পছন্দ করেন? জমজমাট অ্যাকশন ড্রামা, মিষ্টি প্রেমের গল্প, টানটান রহস্য, না কি পুরোদস্তুর ছিমছাম গল্প? টলিউড কিন্তু দর্শকের যাবতীয় চাহিদা পূরণ করার চেষ্টায় থাকে প্রত্যেক বছরই। এ বছরও তাঁর অন্যথা হয়নি। পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে নানা স্বাদের ছবি। দর্শক তাঁদের পছন্দ মতো বেছে নেবেন। কিন্তু এই ‘মিক্সড প্ল্যাটার’-এর মধ্যেও কি কোনও ছবির পাল্লা ভারী? উৎসবের দিনে যদি একটা এমন একটা ছবি আসে, যা ছোট-বড় সকলেই উপভোগ করবেন, তা হলে কি বাকি ছবিগুলোর চেয়ে সেটা খানিকটা হলেও এগিয়ে থাকে? নিশ্চিত করে বলা না গেলেও, ছবির নির্মাতাদের তেমন একটা আশা থাকে বইকি! ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘সোনাদা’ সিরিজ়ের তৃতীয় ছবি ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ সেই তালিকাতেই পড়ে।
আবীর চট্টোপাধ্যায়ের ‘সোনাদা’কে দর্শক গত দু’টো ছবিতেই দারুণ পছন্দ করে ফেলেছেন। এ বার সিরিজ়ের তৃতীয় ছবি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। সোনাদার পাশাপাশি ছবির আবির (অর্জুন চক্রবর্তী) আর ঝিনুককেও (ইশা সাহা) দর্শক দারুণ পছন্দ করেছেন। পর্দায় তাঁদের মজাদার রসায়ন দেখে প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি বাচ্চারাও মজা পায়। তাই এই ছবি দেখতে দর্শক ভিড় করবেন বলেই আশা করছেন ইশা এবং অর্জুন। আনন্দবাজার অনলাইনকে এ প্রসঙ্গে অর্জুন বললেন, ‘‘আগের দু’টো ছবি যাঁদের ভাল লেগেছিল, আশা করা যায় তাঁরা এই ছবিটাও দেখতে আসবেন। পাশাপাশি নতুন কিছু দর্শকও আসবেন বলে মনে হয়। পুজোয় সকলেই একটু হালকা মেজাজের ছবি দেখতে পছন্দ করেন। তাই এই ছবি খানিকটা হলেও বাকিগুলোর চেয়ে এগিয়ে তো বটেই। তবে সফল ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির একটা বাড়তি চাপও রয়েছে।’’ অর্জুনের সঙ্গে এক মত ইশাও। তাঁর কথায়, ‘‘আগের দু’টো ছবির মতো এই ছবিটাও ভাল হল কি না, কতটা ভাল হল, সেই তুলনাগুলো তো উঠে আসেই। সেটা আমাদের চেয়েও নির্মাতাদের বা গল্পকারদের চাপ বেশি।’’
সোনাদার পাশাপাশি ছবির আবির (অর্জুন চক্রবর্তী) আর ঝিনুককেও (ইশা সাহা) দর্শক দারুণ পছন্দ করেছেন।
ইশা অবশ্য এই পুজোয় একটু বেশিই চাপের মধ্যে দিয়ে যাবেন। দু’-দু’টো ছবি মুক্তি পাচ্ছে তাঁর। ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ ছাড়াও দেব-প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁকে দেখা যাবে ‘কাছে মানুষ’-এও। যে কেউ বলবেন, ‘ইশার এ বার বাজার ভালই।’ কিন্তু নায়িকা এ দিকে দু’-দু’টো ছবির ফল কেমন হবে, তা নিয়ে বেজায় টেনশনে ভুগছেন। তিনি বললেন, ‘‘এই রকম পুজো আবার কবে আসবে জানি না। দু’টো ছবি একসঙ্গে মুক্তি পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু পুজোটা আমার যে কী টেনশনে কাটবে, সেটা আমিই জানি!’’
রহস্য-রোমাঞ্চ-অভিযান এমনিতেই বাঙালির প্রিয়। চেনা ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি হলে তো আরও ভাল! তবে একই চরিত্র বার বার একই ভাবে অভিনয় করতে কোনও রকম একঘেয়েমি আসে কি? হাসতে হাসতে ইশা বললেন, ‘‘সবে তো তিন নম্বর ছবি। এখনও পর্যন্ত একঘেয়ে লাগেনি।’’ অর্জুন যোগ করলেন, ‘‘চরিত্রগুলো এক হলেও একটু করে তাদের মধ্যে রসায়ন বদলাচ্ছে। সংলাপ বা শরীরী ভাষা দেখলেই বোঝা যাবে সোনাদা-আবির-ঝিনুকের একে অপরের সঙ্গে আদানপ্রদানটা এই ছবিতে আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিণত। তাই একঘেয়েমি সে ভাবে আসে না।’’
যে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজির বোধহয় প্রথম ছবিটা সবচেয়ে সহজ হয়। কারণ দর্শকের তেমন প্রত্যাশা থাকে না। কিন্তু এক বার ছবি দর্শকের মনে ধরে গেলে, পরের ছবিগুলোর আসল পরীক্ষা শুরু হয়— দর্শকের উৎসাহ সমান থাকছে কি না! এ ছবি কি সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে? তা সময়ই বলবে।