নবান্ন অভিযান নিয়ে সরব অপরাজিতা। গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকা নবান্ন অভিযান ঘিরে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয় মঙ্গলবার। ব্যারিকেড ভাঙা, বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, ভাঙচুরের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের ছোড়া জলকামান বা কাঁদানে গ্যাসে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবার পাল্টা আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে গুরুতর জখম হয়েছেন অনেক পুলিশকর্মী।
প্রিন্সেপ ঘাট এলাকায় কর্মরত অবস্থায় ইটের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন কলকাতা পুলিশের এক সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। তাঁর আঘাত এতই গুরুতর যে একটি চোখ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। আরও ১৫ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার।
দিনভর এই উত্তেজনা দেখে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযান দেখে সমালোচনায় সরব হয়েছেন ‘মেয়েদের রাত দখল’ ডাক দেওয়া নারীরা। সমালোচনায় সরব টলিপাড়ার একাংশও। অপরাজিতা লেখেন, ‘‘সমাজের প্রতিমূর্তি এঁরা, তাঁদের কলঙ্কিত করা এবং কলুষিত করা।’’
ছাত্র সমাজের এই ডাক বলতে অপরাজিতা বোঝেন, ‘‘শিক্ষার ডাক, শিক্ষিতের ডাক ,আলোর ডাক, ভিতরের অন্ধকার মুছে ফেলে আলোক উন্মোচনের ডাক, সমাজকে সচেতন করে শীতঘুম ভাঙানোর ডাক। নূতন যৌবনের দূতদের ডাক। তারা বুক পাততে জানে। তারা পুলিশকে ঢিল ছুড়তে পারে এটা আমি বিশ্বাস করি না। যারা ঢিল ছোড়ে তারা কখনও ছাত্র সমাজ হতে পারে না। সত্যিই যারা ছাত্র সমাজ এবং যারা সেই সমাজের প্রতিমূর্তি এটা তাদের কলঙ্কিত করা এবং কলুষিত করা।’’
যাঁরা আরজি কর-কাণ্ডে আন্দোলন করছেন বিচারের পক্ষে আন্দোলন করছেন, তাঁদের হয়ে অপরাজিতা লিখেছেন, ‘‘যে ছাত্র সমাজ আরজি কর নিয়ে আন্দোলন করছে, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে যাঁরা আন্দোলন করছেন, যে সাধারণ মানুষ আন্দোলন করছেন, বিশেষ ভাবে সক্ষম যে সমস্ত মানুষ, যারা আন্দোলন করছেন, যারা নিঃস্বার্থ ভাবে আন্দোলন করছেন, যাঁরা শুধুই বিচারের পক্ষে, তাদের আবেগকে ধাক্কা দেওয়ার অধিকার কারও নেই। সেটা কোনও রাজনৈতিক দলেরও নেই ,সেটা কোনও মাধ্যমেরও নেই। সেটা কোনও মানুষেরও নেই। এই ধরনের আচরণ শুধুই মনুষ্যত্বের অপমান।’’