অনুপম রায়, রুপম ইসলাম, লোপামুদ্রা মিত্র এবং লগ্নজিতা চক্রবর্তী।
ঘোর বর্ষার মাস জুন। বর্ষা তো প্রেমেরও ঋতু। আষাঢ়ের প্রথম দিনেই তো রামগিরি পর্বতে দাঁড়িয়ে আকুল করা বিরহ অনুভব করেছিলেন কালিদাসের 'মেঘদূত' কাব্যের নায়ক। রামগিরি পাহাড় নয়, শহর কলকাতায় অবশ্য সব ঋতু, সব মাসই রঙিন, সব মরশুমই ভালবাসার। সেই শহর অতিমারির ভয়ে রংহীন হলে মানায়? বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে তাই সর্বত্র রং ফিরিয়ে আনার আর্জি জানালেন অনুপম রায়, লোপামুদ্রা মিত্র, রূপম ইসলাম, লগ্নজিতা চক্রবর্তী। শহরের এক নামী রং প্রস্তুতকারক সংস্থার জন্য তৈরি গানে ফুটে উঠেছে তাঁদের চাওয়া, ‘ধূসর পেরিয়ে রঙিন সময় চাই, জীবনের রং ফিরে পাক সব্বাই।' শ্রীজাতর লেখন এবং জয় সরকারের সুরে এই গানটি অন্য মাত্রা পায়।
কোথায়, কী ভাবে রংহীন কলকাতা? অনুপমের কথায়, অতিমারির দাপটে হাওড়া ব্রিজের উপর ছড়িয়ে পড়া সূর্যের প্রথম আলো যেন অনেকটাই ফ্যাকাশে। সন্ধেবেলায় পার্ক স্ট্রিটও আর আগের মতো আলোয় ঝলমলিয়ে ওঠে না। লোপামুদ্রা রংহীন দেখছেন কুমোরটুলি পাড়া, কলেজ স্ট্রিটের বইয়ের দোকান। লগ্নজিতার চোখে কোনটা ফ্যাকাশে? তিনি রং খুঁজতে পৌঁছে গিয়েছেন ময়দানে। তাঁর চোখ খুঁজেছে রঙিন জার্সির ভিড়। যার থেকে মুঠো মুঠো রং মাখে ময়দান। গড়িয়াহাটের ফুটপাথে নেই অজস্র মানুষের আনাগোনা। লকডাউন, অতিমারি শহরের প্রাণকেন্দ্রকেও করেছে প্রাণহীন। শহরকে আবার আগের মতো রঙিন করার দায়িত্ব কাদের হাতে তুলে দিতে চান শিল্পীরা? রূপম ইসলাম এর জন্য বেছেছেন আগামী প্রজন্মকে। তাঁর কথায়, এক মাত্র তারাই পারে জীবনের সব রং ফিরিয়ে আনতে। তাই তারুণ্যের রঙে ঝলমলিয়ে উঠুক এ শহর।
বহু দিন পরে এক সঙ্গে শ্যুট করে, গান গেয়ে কেমন লেগেছে শিল্পীদের? নেটমাধ্যমে রূপমের দাবি, ‘কত দিন পর শ্যুটিং করে মনে হল, স্বাভাবিক জীবনের অভিনয়টুকু তো হল! এই কাজ নতুন সূচনার বার্তা বহন করুক— এটাই চাই।' অনুপমের কথায়, ‘কলকাতা শুধুই কংক্রিটের শহর নয়। এ শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে জীবনের হাজারো রং। এই কঠিন সময়ের জাঁতাকলে কিছুটা ধূসর দেখালেও কলেজ স্ট্রিট, কফি হাউস থেকে ভিক্টোরিয়া, শহর কলকাতা আবারও জীবনের রং খুঁজে পেতে প্রস্তুত।'