(বাঁ দিক থেকে) সৌরভ দাস, অঙ্কুশ হাজরা, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, গৌরব চক্রবর্তী। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
ইতিহাস বলছে, ৭৭ বছর পার। ১৯৪৭-এর ১৪ অগস্টের মধ্যরাতে ভারত স্বাধীন হয়েছিল। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরজি কর-কাণ্ড আবারও বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে নারী স্বাধীনতায়। বুধবার মধ্যরাতে, স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগে প্রতিবাদে মুখর বাংলা, ‘মেয়েরা, রাত দখল করো’। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে এ দিন সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেত্রী বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, “আমরা আদৌ স্বাধীন তো?” এও জানিয়েছেন, নিজের চোখে তিনি এখনও পরাধীন। সেই সঙ্গে তিনি সজাগ করে দিয়েছেন অনুরাগী নেটাগরিকদেরও। লিখেছেন, “১৫ অগস্ট দয়া করে ‘খুশির স্বাধীনতা’ লিখে লোক হাসাবেন না! আর মূর্খের স্বর্গে বাস করবেন না।”
এ ভাবেই ১৪ অগস্ট সকাল থেকে টলিউডের এই প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রতিবাদে মুখর সমাজমাধ্যমে। গৌরব চক্রবর্তী, সৌরভ দাস, অঙ্কুশ হাজরা, ঐন্দ্রিলা সেন, উষসী চক্রবর্তী। কী বার্তা দিয়েছেন তাঁরা?
গৌরবের মতে, “পেশার খাতিরে প্রকাশ্যে খুব কম মতামত দিই। কিন্তু এক একটি ঘটনা এমন নাড়া দিয়ে যায় যে, চুপ থাকা যায় না। সেই জায়গা থেকেই বলছি, নারীর সম্মান সকলের আগে। তার জন্য বাকিরা যে আন্দোলনের পথে হাঁটবেন আমিও তার সঙ্গে আছি।” অভিনেত্রী উষসী লিখেছেন, “অপরাধীদের সঙ্গে তাদের রক্ষাকবচদেরও শাস্তি চাই। সরকারি হাসপাতালে প্রবেশ করে, কর্তব্যরতা চিকিৎসকের সঙ্গে এই অন্যায় হলে আপনার-আমার নিরাপত্তা কোথায়?” এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে পথে নামছেন তিনি। সৌরভ জানিয়েছেন, যাঁরা ঘরে-বাইরে প্রতি মুহূর্তে সকলের যত্ন নেন, সেই নারীর সঙ্গে ঘটা অন্যায় শুধুই ভয়ঙ্কর নয়, অমানবিকও। আরজি কর-কাণ্ড নারীর নিরাপত্তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, তেমনই মনুষ্যত্বও যে তলানিতে ঠেকেছে, তারও ইঙ্গিত দিয়েছে।
ঐন্দ্রিলা বিস্মিত, যে শহরে সপ্তাহ জুড়ে দেবীর আরাধনা হয়, সেই শহরেই কী ভাবে নারী লালসার শিকার হয়! এমন ঘটনা ‘রোজের ঘটনা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সে কথা জানাতেও ভোলেননি তিনি। আরজি কর-কাণ্ড প্রসঙ্গে নিজেকে ‘মানুষ’ হিসাবে পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করছেন প্রযোজক-অভিনেতা অঙ্কুশ। তাঁর বার্তা, “আশা করব, সমাজ এমন জায়গায় পৌঁছবে না যে, সেখানে মানুষ হয়ে জন্মাতে লজ্জা করবে।”তাঁর আর্জি, “কিছু অসুস্থ মানুষকে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে মেয়েদের জন্য এক সুস্থ সমাজ তৈরি করি।”