Anirban Bhattacharya

সিনেমার থেকে নাটকের পরিচালনা করলে আমি অনেক বেশি উত্তেজিত হই: অনির্বাণ

অভিনয়ের পাশাপাশি অনির্বাণ ভট্টাচার্য নাটকের পরিচালনাও করছেন প্রায় নিয়মিতই। সম্প্রতি ন্যাশনাল মাইম ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত হল তাঁর পরিচালিত নাটক ‘বেরোবার পথ নেই’।

Advertisement

শতরূপা বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৯
Share:

অনির্বাণ পরিচালিত ‘বেরোবার পথ নেই’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

তাঁর পরিচালিত প্রথম বড় পর্দার ছবি ইতিমধ্যেই সুপারহিট। এই মুহূর্তে তাঁর অভিনীত ছবি ‘মিথ্যে প্রেমের গান’ চলছে শহরের হলে। এই ছবি মুক্তির আগেই অনির্বাণ ভট্টাচার্য হাতিবাগান সঙ্ঘারাম প্রযোজিত ‘বেরোবার পথ নেই’ নাটকের পরিচালনা করলেন। জাঁ পল সার্ত্র-এর ‘নো এগজ়িট’ অবলম্বনে এই নাটক। কেমন ছিল তাঁর এই অভিজ্ঞতা?

Advertisement

তিন জন মানুষ। শেহাব আবাসি, আইনেজ সেরানো এবং মারিয়া। তারা নরকে আটকে। কেমন সেই নরক? সেখানে কোনও ফুটন্ত তেলের কড়াই নেই। নেই কোনও গরম লোহার শিক। বরং আছে তার চেয়েও ভয়ঙ্কর কিছু। সেখানে সারা ক্ষণ ফ্যাটফ্যাটে সাদা আলো জ্বলে। সেই আলোয় কারও ঘুমোনোর সাধ্য নেই। দু’চোখের পাতা কখনওই এক করতে পারবে না তারা। এমতবস্থায় তারা কী করে? এই নিয়েই ‘বেরোবার পথ নেই’। বঙ্গীকরণ প্রতীক দত্তের।

অভিনয়ের পাশাপাশি অনির্বাণ নিয়মিত নাটক পরিচালনা করছেন। ছবি: সংগৃহীত।

সার্ত্র- এর কারণেই অবধারিত ভাবে আসে এই মানুষগুলির আস্তিত্ববাদের সঙ্কট। পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো করে বেরিয়ে আসে তাদের আসল পরিচয়। তাদের পাপের কথা। অনিবার্য ভাবে তারা আটকে যায় নরকে। পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে চায়। নাটকটি এমনই এক গ্যাঁড়াকলের কথা বলে যা আমাদের সভ্যতা ও প্রজাতির গায়ে আঠার মতো লেপ্টে আছে। এই মানুষগুলো একে অন্যকে ছাড়া অচল, আবার এই একে অন্যেই তার বিষ, তার ছুরি, কুরে কুরে খাওয়া তার ঘুণপোকা। তারা কি পারবে এই নরক থেকে মুক্তি লাভ করতে? বেরোবার পথ কি তারা খুঁজে পাবে? না। পাবে না।

Advertisement

নাটক হিসেবে এটি অনির্বাণের চতুর্থ পরিচালনা। ‘‘অনেক দিন ধরে নাটকটি করার ইচ্ছে ছিল। ২০১২ সালে প্রতীক দত্ত এটার অনুবাদ করেন। ভেবেছিলাম যদি অন্য রকম করে করা যায়। তার পর তো এটার উপর পলি পড়ে গেল। তার পর জানুয়ারি ২০২২ সালে ওমিক্রনের তৃতীয় ধাক্কার মধ্যে আবার এটাকে ফেরাতে চেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল নতুন উদ্যম ছাড়া এই সময়কে মোকাবিলা করা যাবে না। তাই নতুন উদ্যমে আবার রিহার্সাল শুরু করি। ২০২২ নভেম্বর থেকে আমাদের রিহার্সাল শুরু। এ বছর, মানে আমাদের ছ’টা শো হয়েছে। সবই ইন্টিমেট স্পেসে। কারণ আমার মনে হয়েছে, এই নাটকের অভিঘাত প্রসেনিয়ামের থেকে ইন্টিমেট স্পেসে খুলবে ভাল,” বলছেন অনির্বাণ।

নাটকের শেষ সংলাপ — ‘‘হেল ইজ় আদার পিপল’’। সমগ্র নাটকটি কী করে এই সংলাপের উপস্থাপনায় উপনীত হয়, তা নিয়েই। কেন এই তিন জন চরিত্র বলে এই সংলাপ, সারা নাটক জুড়ে রয়েছে তারই ব্যাখ্যা। সে রকম কোনও গল্প নেই নাটকের। চার জন চরিত্র, তাদের যাত্রা, জানালেন অনির্বাণ।

সিনেমা থেকে নাটকের পরিচালনা কতটা আলাদা? ‘‘সিনেমার থেকে নাটকের পরিচালনা আমার কাছে অনেক বেশি উত্তেজক। কারণ একটা নাটক ১০০ বার করলে, ১০০ রকম ভাবে করা যায়। আর একটা শূন্য স্পেসকে কী ভাবে একটু একটু করে আলো, মঞ্চসজ্জা, সংলাপ, চরিত্রদের আনাগোনার মধ্যে দিয়ে তৈরি করা যায় সেটা — এই প্রক্রিয়াটা আমাকে খুব আকৃষ্ট করে। শুধুমাত্র একটা জিনিস নিয়ে চাইলে সারা জীবন কাজ করে যাওয়া যায়। শৈল্পিক ভাবে এটা আমার কাছে খুব বড় একটা সুযোগ,’’ বলছেন অনির্বাণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement