ছবিতে নামভূমিকায় দেখা যাবে আবীর চট্টোপাধ্যায়কে।
সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে অনীক দত্তের শ্রদ্ধার্ঘ্য ‘অপরাজিত’। ‘পথের পাঁচালী’ তৈরির গল্পই এ ছবির অনুপ্রেরণা। এই ছবিতে নামভূমিকায় দেখা যাবে আবীর চট্টোপাধ্যায়কে। ফেলুদার চরিত্রে আগে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে আবীরকে। এ বার সত্যজিতের আদলে তৈরি অপরাজিত রায়ের চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। কী ভাবে তৈরি করছেন আবীর নিজেকে?
‘‘এটা কিন্তু ঠিক বায়োপিক নয়। চিত্রনাট্যের কাজ এখনও চলছে। এটা বলতে পারেন, এই প্রজেক্টটা সত্যজিৎ রায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। আর সত্যি বলতে, এখন মানসিক স্থিতিও সেই জায়গায় নেই যে, কাজে মনোযোগ দিতে পারব। এই অতিমারি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই আগে। আমার সব দর্শকবন্ধুরা ভাল থাকুন, আমরা সকলে যেন টিকে থাকতে পারি। কিন্তু এই ছবি যখন শুরু করব, মন-প্রাণ দিয়ে কাজ করব। এটা একটা মনুমেন্টাল ওয়ার্ক, সেই যত্ন অবশ্যই থাকবে আমার কাজে।’’ফেলুদার সঙ্গে তুলনা প্রসঙ্গে আবীরের মত, ‘‘একটাই ফেলুদা করেছি, তা-ও অনেক বছর আগে।’’
ছবির পরিচালক চরিত্রটি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছেন নিজের মতো করে। অনীক বললেন ‘‘সময়টা ১৯৫৫। অপরাজিত রায় অর্থাৎ অপু সদ্য বিশ্বজয় করেছে। অপুর বয়স চৌত্রিশ। বছর দশেক আগে থেকেই নতুন ধারার ছবি করার ইচ্ছে মাথাচাড়া দেয়। অপু এবং তার অল্পবয়সি বন্ধুরা মিলে ‘পথের পদাবলী’ ছবিটি করতে ব্রতী হয়। ‘অপরাজিত’ সিনেমাটি হচ্ছে অপুর জীবনের প্রথম ছবি ‘পথের পদাবলী’ বানানোর আখ্যান। এই ছবির সব চরিত্র কাল্পনিক হলেও, যদি বাস্তব কোনও চরিত্রের সঙ্গে মিল থাকে, তা মোটেও কাকতালীয় নয়। সত্য ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত।’’ ছবিতে বিজয়া রায়ের চরিত্রটিও আনা হবে। তবে সেই চরিত্রের জন্য মানানসই অভিনেত্রীর খোঁজ এখনও জারি রয়েছে। অপু-দুর্গার খোঁজও চলছে।
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘মেঘে ঢাকা তারা’য় ঋত্বিক ঘটকের রেফারেন্স যে ভাবে টানা হয়েছিল, সেটা দেখেই এই ছবিটি করার কথা মাথায় আসে অনীকের। ছবিটি করার জন্য সন্দীপ রায়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন পরিচালক। সন্দীপ রায় বললেন, ‘‘ওরা আমার সঙ্গে কথা বলেছে। আমি সম্মতি দিয়েছি। তবে আমি সরাসরি ছবিটির সঙ্গে যুক্ত থাকছি না।’’
এ বছর সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতেই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। সেইমতো ছবি শুরুর পরিকল্পনাও ছিল গত বছর থেকে। কিন্তু অতিমারির কারণে ঠিক সময়ে শুটিং করা যায়নি। ‘‘পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই জোরকদমে কাজ শুরু করব। কারণ ‘পথের পাঁচালী’ যে গ্রামে শুট হয়েছিল, তেমন একটা গ্রাম খুঁজতে হবে। প্রি-প্রোডাকশনের অনেক কাজ হাতে। সেগুলো শুরু করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব,’’ বললেন ছবির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে আগামী বছর সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনেই মুক্তি পাওয়ার কথা ছবিটির।