জুহুর পাঁচতারা হোটেলে তাঁর রুমে ঠিক সময়ে পৌঁছলেও দরজাতেই থামিয়ে দিলেন ম্যানেজার। ইলিয়ানা ডি’ক্রুজের মেকআপ এখনও শেষ হয়নি। নায়িকা অবশ্য সে কথা শোনার বান্দা নন। চুলে ক্লিপ লাগানো অবস্থায় বসে গেলেন সাক্ষাৎকার দিতে।
প্র: আপনি কি একেবারেই ইমেজ সচেতন নন?
উ: ধুর, ‘বরফি’তেই তো ডি গ্ল্যাম লুকে অভিনয় করলাম। ইমেজ-টিমেজ নিয়ে আমি একদম ভাবি না। আসলে তো অভিনয়। সেটা করতে পারলেই হল।
প্র: কিন্তু দক্ষিণী ছবিতে ছ’বছর কাজ করার পর হিন্দি ছবিতে এলেন। দেরি হয়ে গেল না?
উ: আমার মনে হয় না। যে হিন্দি ছবিগুলোর অফার পাচ্ছিলাম, সে রকম ছবিই তেলুগুতে করছিলাম। তেমন কোনও চ্যালেঞ্জ মনে হয়নি। তার পর অনুরাগ (বসু) ‘বরফি’র স্ক্রিপ্ট দিল। তখন মনে হল, এ বার বলিউডে ইনিংস শুরু করা যেতে পারে। তার পর ‘রুস্তম’ করলাম। এখন ‘মুবারকাঁ’। এর পর ‘বাদশাহো’। ঠিক ট্র্যাকেই আছি, কী বলেন?
প্র: সেটা তো আমার প্রশ্ন ছিল...
উ: (হাসি) হুমম... হয়তো একটু ধীরে ধীরে এগোচ্ছি। কিন্তু যেমন রোল পাচ্ছি তাতে আমি খুব খুশি।
প্র: ব্যক্তিগত জীবনে?
উ: অবশ্যই হ্যাপি।
প্র: কিন্তু একটা সম্পর্কও তো বেশি দিন টিকছে না। প্রভাস...
উ: (থামিয়ে দিয়ে) সম্পর্কের ডেফিনেশন তো নিয়মিত বদলে যাচ্ছে। বিচ্ছেদ এখন এত সহজ যে, কেউ বেশিদিন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইছে না। সম্পর্ক তৈরি করাটাও খুব সহজ। এই যে শুনি, টিন্ডার-এর মতো ডেটিং অ্যাপ। আমার তো বেশ ভয় লাগে। যাকে চিনি না জানি না, তার সঙ্গে হঠাৎ ডেটে চলে যাব!
প্র: আর বিয়ে?
উ: আমি ভীষণভাবে বিয়েতে বিশ্বাস করি। আই অ্যাম ওপেন টু ম্যারেজ। কিন্তু খুশি থাকতে হলে আঙুলে একটা আংটি চাই, এটায় বিশ্বাস করি না। এটা তো মানবেন যে, শহুরে সমাজে বিয়ের থেকে ডিভোর্সের রেট বেশি। ডিভোর্স যখন সহজ, তখন চলো শাদি করকে দেখ লেতে হ্যায়, এই দৃষ্টিভঙ্গিতে আমার আপত্তি আছে।
প্র: ‘মুবারকাঁ’ বিয়ে নিয়ে আপনার ধারণা বদলে দিল নাকি?
উ: আরে না না। ‘মুবারকাঁ’র মতো মজার ছবি আর হয় না। ভারতীয় পরিবারে বিয়ে নিয়ে যে পাগলামিগুলো হয়, তার সব ক’টা দেখতে পাবেন এখানে। অভিনয়ের সময়ও খুব মজা করেছি। অনিল কপূর আর অনীস বাজমি সারাক্ষণ খুনসুটি করছে। এ রকম ছবির সেটে এলে মনে হয়, ভাগ্যিস অভিনয়ে এসেছিলাম।
আরও পড়ুন:সম্পর্ক মানেই সমঝোতা
প্র: কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনও যে প্রতিদিনের খবর হয়ে দাঁড়ায়। কার সঙ্গে প্রেম করছেন... সবই প্রকাশ্য...
উ: সে আর বলতে! একটা ঘটনা মনে আছে। আমি তখন মা আর বোনের সঙ্গে ইউরোপ ট্যুরে গিয়েছি। হঠাৎ এক পরিচিতের ফোন, আমি ঠিক আছি কি না জানতে। শুনলাম, সব জায়গায় নাকি খবর বেরিয়েছে, আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি! জীবনের সবচেয়ে ভাল সময় কাটাচ্ছি। বছরে চারটে করে ছবি করছি। আর তখন কিনা এমন খবর। ভাবা যায়। কথায় আছে, আগুন ছাড়া ধোঁয়া দেখা যায় না। এখানে তো দেশলাই কাঠিটা পর্যন্ত ছিল না। সিনেমার জগতে এসে বুঝেছি, আগুন ছাড়াও এখানে ধোঁয়া হয়।
প্র: আপনি তো ইন্ডাস্ট্রির বাইরের লোক। গদফাদার ছাড়া এত ছবি করলেন কী করে?
উ: গডফাদার থাকলে তো ভালই হতো। সিনেমার জগতে ভেসে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। এত চমক, এত প্রলোভন, এত আকর্ষণ রয়েছে... বাইরে থেকে ধারণা করা যায় না। ভিতরে পরিচিত কেউ থাকলে, সে আগে থেকে সাবধান করে দেয়। ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে যে আসে, সে তো এত কিছু জানে না। আমার নিজের প্রতিভার উপর ভরসা ছিল। তাই অন্য কোনও পথ নিতে হয়নি।