ফরহা
স্টার প্লাসের নতুন সেলেব শো ‘লিপ সিঙ্গ ব্যাটেল’-এ সঞ্চালকের ভূমিকায় ফরহা খান। নিজেদের ছবির গান নয়, বরং অন্য নায়ক-নায়িকা বা গায়ক-গায়িকার কণ্ঠে গাওয়া হিন্দি গানেই লিপ সিঙ্গ করতে হবে সেলেবদের। সঙ্গে নাচও।
প্র: মা হওয়ার পর কী কী বদলেছে?
উ: অনেক কিছুই। সাধারণত মা হওয়ার পরে মেয়েরা নিজের খেয়াল রাখে না। কিন্তু আমি যেহেতু বেশি বয়সে মা হয়েছি, তাই খুব সচেতন ভাবেই স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওজন কমিয়েছি। খাওয়ার অভ্যেস বদলেছি। আগের চেয়ে অনেক বেশি হাসিখুশিও থাকি। আগে ছোট ছোট ব্যাপারে দুশ্চিন্তা করতাম। কিন্তু এখন বুঝি, সন্তান ভাল থাকলে আর কিছু চাওয়ার নেই।
প্র: আপনি কি মা হিসেবে কড়া?
উ: আমি ‘ফান-মাদার’। বাচ্চাদের সঙ্গে কড়া হওয়ার দরকারই পড়ে না। আমার ছেলে-মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও ওরা খুব ভদ্র, নম্র, মার্জিত (মুচকি হাসি)। তবে ওরা খুব লাজুকও। এই বিষয়ে ওদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আর আমি ছেলে-মেয়েদের আশকারা দিই না। ছোট ছোট ব্যাপার যাতে ওরা বড় করে না দেখে, সেই দিকে নজর রাখি।
প্র: ওরা কি স্টারডম, বলিউড এখন বোঝে?
উ: ওদের বয়স এখন নয় বছর। আমি কী কাজ করি, সেটা বোঝে। তবে বলিউডে ওদের একদম আগ্রহ নেই। আমি ওদের বলি হিন্দি ছবিও দেখতে। ছেলে তো স্টার ওয়ার্সের ছবি দেখে। আর মেয়েরাও ইংরেজি ছবি বেশি দেখে। ওদের দৌলতেই রিহানা, এড শিরানের লেটেস্ট গান আমি শুনি। কখনও ভাবি, এ সব ওরা কোথা থেকে শুনছে! আমাদের ছোটবেলায় তো শুধু বলিউডের গানই ছিল (হাসি)।
প্র: ওদের নাচে আগ্রহ আছে?
উ: হ্যাঁ। মেয়েরা নাচের স্কুলে ভর্তি হয়েছে। আমি কত্থক শেখার জন্য খুব করে বলেছিলাম। তবে এত জেদ! এই মুহূর্তে ওরা ব্যালে আর জ্যাজ ব্যালে শিখছে।
প্র: আপনি আর কোরিওগ্রাফি করেন না কেন?
উ: আমি তো আমার বন্ধুদের জন্য করতাম। একঘেয়ে জিনিস করার আর একটুও ইচ্ছে নেই। তার চেয়ে বাড়িতে ছেলে-মেয়ের সঙ্গে সময় কাটানো অনেক ভাল। আউট অব দ্য বক্স, আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট হলে ভেবে দেখব।
প্র: পরের ছবি কবে করছেন?
উ: টেলিভিশন শো নিয়ে ব্যস্ত আছি। সেটা শেষ হলে স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসব। ছবি হল বিয়ের মতো। যখন হওয়ার তখন হবে (হাসি)।
প্র: এই বছর বেশি বাজেটের ছবি কিন্তু একদম ভাল চলেনি...
উ: কম বাজেটের ছবি ২৫ কোটির ব্যবসা করলে, আপনারা বলেন হিট। আর বেশি বাজেটের ছবি ১২০ কোটি করলে, সেটা ফ্লপ। যদি কম বাজেটের ছবি ১০০ কোটির ব্যবসা করে, তখনই একমাত্র বলা যায় সময় বদলেছে।
প্র: তবে দর্শকের ভোটও ওই ছবিগুলোর দিকেই...
উ: অনেক বছর ধরেই সেটা হচ্ছে। দর্শক বাঁধা গতের জিনিস দেখতে চাইছেন না। নেটফ্লিক্স, অ্যামাজনে নতুন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে এক্সপেরিমেন্টও হচ্ছে।
প্র: আপনার ছবি দিয়েই দীপিকা পাড়ুকোনের কেরিয়ার শুরু...
উ: হ্যাঁ। ওর অনেক গুণ। সেই জন্যই এত দূর এগিয়েছে। কাজ নিয়ে কোনও রকম আলসেমি নেই। আরও ভাল করার খিদেটা সব সময়ই তাড়া করে। তাই নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে পারে।
প্র: কঙ্গনা-হৃতিক বিতর্ক নিয়ে কী বলবেন?
উ: নারীবাদ মানে সমতা। তাই একটা ছেলের যেটা বলা উচিত নয়, একটা মেয়ের ক্ষেত্রেও সেটা অনুচিতই হবে।
প্র: চাঙ্কি পাণ্ডের মেয়েকে নিয়ে যে মন্তব্যটা করেছিলেন...
উ: (থামিয়ে দিয়ে) ওটা জোক ছিল।
প্র: অনেকে তা ভাল ভাবে নেননি...
উ: যাঁরা ভাল ভাবে নেননি, তাঁরা আমাকে চেনেন না। চাঙ্কিকেও নয়। আর আমাদের কেমন সম্পর্ক সেটাও জানেন না। সবচেয়ে বড় বিষয়, কথাটা সাক্ষাৎকারে বলা হয়নি। ইনস্টাগ্রামে করা একটা কমেন্ট নিয়ে কেন কেউ বলবে!
প্র: সোশ্যাল মিডিয়া কি সেলেবদের প্রতি বেশিই নিষ্ঠুর?
উ: হ্যাঁ, এর ভাল-খারাপ দুটো দিকই আছে। আমাদের প্রচার, ফ্যান-ফলোয়িং বাড়াতে সোশ্যাল মিডিয়া সাহায্য করছে। তবে একটা সাধারণ কথার অপব্যাখ্যা করতেও ছাড়ে না। আমি আর চাঙ্কি কিন্তু গোটা বিষয়টা নিয়ে নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করেছি।
প্র: নতুন শোয়ে এখনও পর্যন্ত কার পারফরম্যান্সে সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন?
উ: কর্ণ-ফারহান এরা ভাল করবে জানতামই। তবে শান যখন বাপ্পি লাহিড়ির গানে নাচল, আর বিশাল দাদলানি ‘বাবুজি যারা ধীরে চলো’তে পারফর্ম করল, দে আর মাইন্ডব্লোয়িং! সানি দেওলের গানে মালাইকার নাচও চমকে দিয়েছিল।
প্র: দর্শকের কাছে কী প্রত্যাশা?
উ: প্রত্যাশার চেয়েও দর্শক আমাদের কাছে কী চায় সেটা বেশি জরুরি। এটুকু বলতে পারি, ভরপুর বিনোদন পাবেন।