রোহিত রায়।
সাক্ষাৎকার দেওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে দুষলেন অভিনেতা রোহিত রায়। অভিযোগ, ওই সাংবাদিক টিম ইন্ডিয়ার জন্য নাকি ‘আনলাকি’! আসল ঘটনাটা হল, সেই মুহূর্তে চলছিল ভারত-বাংলাদেশের সেমিফাইনাল ম্যাচ। হার্দিক পাণ্ড্যর বলে ক্লিন বোল্ড হয়েছিলেন বাংলাদেশের তামিম ইকবাল। তবে দুর্ভাগ্যবশত সেটা ছিল নো বল। উত্তেজনা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল রোহিতের যে, দশ মিনিট পরে ফোন করতে বললেন। ‘কাবিল’ ছবির অমিত শেলারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে এটুকু তো সইতেই হবে।
কুড়ি বছরেরও বেশি সময় ধরে টেলিভিশন ও হিন্দি ছবিতে কাজ করছেন রোহিত রায়। তাঁর কেরিয়ারে অমিত শেলারের চরিত্রটা একটা মাইলস্টোন। বললেন, ‘‘আমার তো মনে হয় না আহামরি কিছু অভিনয় করেছি। কিন্তু যা ফিডব্যাক পেয়েছি, তা আশার অতিরিক্ত। চরিত্রটাই আমার কাজ করে দিয়েছে।’’
‘কাবিল’-এর পর দু’টি হিন্দি ছবিতে কাজ করার কথা চলছে রোহিতের। বাংলা ছবি আর করবেন না? হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘আপনারা তো আর ডাকেনই না। বলুন আপনাদের প্রযোজকদের। ডাকলে নিশ্চয়ই করব।’’ অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের হিন্দি ছবি ‘জিহাদ’-এ ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে ফের জুটি বেঁধেছেন রোহিত। ছবিটির প্রেক্ষাপট ঢাকায় সন্ত্রাসবাদী হামলা। এর আগে অগ্নিদেবের বাংলা ছবি ‘মিসেস সেন’-এ ঋতুপর্ণার সঙ্গে কাজ করেছেন রোহিত।
রোহিত শুধু অভিনেতা নন, পরিচালক, প্রযোজক, সঞ্চালক হিসেবেও কাজ করেছেন। আর এই সব ক’টির মধ্যে পরিচালনার কাজই সবচেয়ে বেশি পছন্দের তাঁর। অভিনেতা হওয়াটা নাকি নিছক কাকতালীয় ঘটনা। ‘দশ কাহানিয়াঁ’ (২০০৭) ছবির অন্তর্গত ‘রাইস প্লেট’ নামে একটি শর্ট ফিল্ম পরিচালনা করেছিলেন রোহিত। পরিচালনার কাজ আবারও করছেন তিনি। নতুন ছবির প্রযোজক সঞ্জয় লীলা ভংসালী।
এর পাশাপাশি একটি বিজনেস চ্যানেলে ‘সেল্ফ মেড’ নামে চ্যাট শো সঞ্চালনা করেন রোহিত। তাঁর দাবি, বিজনেস চ্যানেলে এখন সম্প্রচারিত চ্যাট শো-গুলির মধ্যে এটা নাম্বার ওয়ান।
ধারাবাহিকে অভিনয় করার কোনও পরিকল্পনা নেই? রোহিতের কথায়, ‘‘কিছু দিন আগেও একটা অফার পেয়েছিলাম। কথাবার্তা পাকাপাকি হয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ করা হল না। আমি এত ট্র্যাভেল করি, সঙ্গে প্রি-প্রোডাকশনের কাজ। তাই প্রযোজকদের বলছি, লিমিটেড সিরিজ মানে এই ধরুন, ছয় কি আট মাসের হলে, তবেই করব।’’
অনেকেই হয়তো জানেন না, হৃতিকের সঙ্গে গভীর দোস্তি রোহিতের। ‘কাবিল’-এর অনেক আগে থেকেই। বিবাহ-বিচ্ছেদের পরেও হৃতিক-সুজান দু’জনের সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক রোহিতের।
টলিউড আর বলিউডের কর্মসংস্কৃতির মধ্যে কোনও পার্থক্য চোখে পড়ে? ‘‘মুম্বইয়ে প্রফেশনালিজম অনেক বেশি। টলিউডে শেষ মুহূর্তে অনেক ইম্প্রোভাইজেশন হয়। যেটা মুম্বইয়ে কখনও পাবেন না।’’
স্বপ্নের চরিত্র কিছু আছে? বললেন, ‘‘ডাবল রোলে অভিনয় করতে চাই। যার একটা হবে ভাল। আর একটা সাইকো কিলার।’’ ‘কাবিল’-এ রোহিতের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা রণিতও। দাদার সঙ্গে অভিনয় নিয়ে কথা বলেন? ‘‘আগে বলতাম না। এখন খুঁটিনাটি সব বলি।’’ কেন আগে কথা বলতেন না? ‘‘আমি আসলে কারও কথা শুনি না। তাই বলে কিছু লাভ হতো না,’’ বলেই হেসে উঠলেন। হাসির মধ্যে বেশ একটা রহস্যের গন্ধও পাওয়া গেল!