সেই অপু-দুর্গা আবার আসছে বড় পর্দায়। ছবি: আর্কাইভ
গ্রাম বাংলার নিসর্গ, দিদির হাত ধরে কাশফুলের দিগন্তবিস্তৃত মাঠে অপুর ছুটে চলা, ইন্দিরা ঠাকুরণের বলিরেখা ভরা মুখে ফোকলা হাসি অথবা অপুর উদ্দেশে দুর্গার সেই পুরনো না হওয়া সংলাপ, ‘‘সেরে উঠলে আমায় তুই একদিন রেলগাড়ি দেখাবি?’’... ‘পথের পাঁচালি’ বলতেই এ সব স্মৃতি মনে আসে আমাদের।
অপু-দুর্গা যদি আরও এক বার ধরা দেয় বড় পর্দায়? পরিচালক সুমন মৈত্র বেশ কিছু দিন ধরেই ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন এমন কিছু ভাবনার। অবশেষে জানা গেল, বাঙালির সেই নস্টালজিয়াকেই উস্কে দিয়ে বড়পর্দায় তিনি নিয়ে আসছেন তাঁর পরবর্তী ছবি ‘আমি ও অপু’।
সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে এই ছবি তাঁর প্রতি সুমনের শ্রদ্ধার্ঘ।
কিন্তু এমন একটা বিষয় যার পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালি সেন্টিমেন্ট¸ নস্টালজিয়া, সামান্য ভুলচুকও যে বাঙালি সহ্য করবে না, জানার পরেও রিস্কটা নিতে গেলেন কেন পরিচালক? আনন্দবাজার ডিজিটালের এই প্রশ্নে সুমন বললেন, “আমার পরের ছবি ছিল ৭১। তার পর কী নিয়ে ছবি করব, এ সব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ মনে হল পথের পাঁচালি নিয়ে কিছু করলে কেমন হয়। সত্যজিতের ছবি নয়, বিভূতিভূষণের উপন্যাসের উপর ভিত্তি করেই আজকের আঙ্গিকে ছবিটি বানানোর কথা ভেবে ফেললাম। আমার খুব পছন্দের লেখক জসিমুদ্দিন এবং জীবনানন্দ দাশ। গ্রামবাংলাকে ওঁদের চেয়ে ভাল ফুটিয়ে তুলতে খুব কম লোকই পেরেছেন বলে আমার মনে হয়। আমার ছবিতে কিন্তু ওঁদের কাজও এসে মিশেছে।”
আরও পড়ুন: এ বার ছবি পরিচালনার ইচ্ছে রয়েছে
‘‘সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়েছে নিশ্চিন্দিপুরকে ২০২০-তে এসে আবার নতুন ভাবে তৈরি করা। শহর এগোচ্ছে, ছোট হচ্ছে গ্রাম। মেঠোপথ, আল আর কোথায়?’’ আক্ষেপ সুমনের গলায়। শুটিং হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। কখনও উত্তর ২৪ পরগনা, আবার কখনও বা হুগলি। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু জায়গাতেও শুটিং হয়েছে।
আরও পড়ুন: টলি তারকারা দলে দলে এখন রাজনীতিতে, ছবিতে তার প্রতিফলন কোথায়?
অপু এবং দুর্গা, এই দুই মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঈশান রাণা এবং প্রকৃতি পূজারী। আবহসঙ্গীতে বাপ্পাদিত্য শুভ্র। কবে মুক্তি পাচ্ছে এই ছবি? পরিচালক জানালেন, আগে কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি পাঠাতে চান তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে এ বছরের শেষের দিকেই দর্শক দেখতে পাবেন ‘আমি ও অপু’।