কফিহাউসে দিলজিৎ দোসাঞ্জ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
‘কফিহাউসের সেই আড্ডাটা’র খোঁজেই বুঝি কলেজ স্ট্রিটে? পেলেন কি তার খোঁজ? জানা নেই। তবে বুকের খাঁচায় কলকাতা প্রেম বন্দি করে শহরবাসীর আরও এক বার দিল জিতলেন দিলজিৎ দোসাঞ্জ। বঙ্গবাসীর তিনি ‘দিলজিৎদা’! শহর পরিক্রমা শুরু করেছিলেন হলুদ ট্যাক্সিতে চেপে, দক্ষিণেশ্বর মন্দির দিয়ে। শুক্রবার তিনি এ ভাবেই কল্লোলিনীকে আপন করেছেন। শনিবার, সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনি শহরের সংস্কৃতির আঁতুড়ঘরে। পিছনে দেওয়ার জুড়ে কবি জীবনানন্দ। খোলা জানলার পাশে বসে কপির কাপে চুমুক দিলেন পঞ্জাবি র্যাপার। অলস দৃষ্টিতে ভিজে শহরের দিকে চেয়ে তিনি।
২৭ নভেম্বর শহরে পা রেখেছেন দিলজিৎ। শনিবার তাঁর গানের অনুষ্ঠান। দিল্লি, জয়পুর, হায়দরাবাদ, আমদাবাদ, লখনউ, পুণে ঘুরে তিনি তিলোত্তমায়। এমনিতেই দিলজিতের প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানের টিকিট নিয়ে মারামারির উপক্রম। যাঁরা টিকিট পান তাঁরা যেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, অন্য দিকে টিকিট না পেলে ক্ষোভ উগরে দেন অনুরাগীরা। কিন্তু কলকাতায় এসে দিলজিৎ ঘুরছেন একেবারে দিলখোলা ভঙ্গিমায়। তিনি দক্ষিণেশ্বর গিয়েছেন। শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের ঘরে বসে ধ্যান করেছেন। ভবতারিণী মন্দির চত্বরে তাঁকে ঘিরে ধরেছেন অনুরাগীরা। এই প্রজন্মের কাছে তিনি মহাতারকা! তাঁদের আবদারে বিরক্তির লেশমাত্র নেই চোখেমুখে। পুজো দেওয়ার আগেপরে তিনি নিজস্বীতে মজেছেন।
পাশের দেওয়ালে কবি জীবনানন্দ দাশ। কফি হাতে মগ্ন দিলজিৎ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
শনিবার তিনি সদলবলে যখন কফিহাউসর সিঁড়ি দিয়ে উঠছেন তখনও কেউ বোধহয় বুঝতে পারেননি, কী ঘটতে চলেছে। দিলজিৎ জানলার ধার ঘেঁষে একটি টেবিল বেছে নিয়েছেন। উর্দিপরা বেয়ারা কফির কাপ নিয়ে আপ্যায়ন জানাতেই বিনিময় করে নিয়েছেন আন্তরিক হাসি। কফিহাউসের দোতলার বারান্দায় সারি দিয়ে নানা বয়সের মানুষ। এখানে এক সময় নিয়মিত আড্ডা দিতেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, কবি শঙ্খ ঘোষ থেকে শুরু করে শিল্প-সংস্কৃতি ও বিনোদন দুনিয়ার তাবড় ব্যক্তিত্ব। সেখানেই বাংলার সঙ্গে পঞ্জাবের সেতুবন্ধন ঘটিয়ে গেলেন দিলজিৎ। কফিপান সেরে তিনি যখন গাড়িতে তখন মেঘলা আকাশ চিরে টুপটাপ বৃষ্টি নেমেছে। ভেজা আকাশ ইষৎ লালচে অস্তরাগের আভায়।