কুণাল ঘোষের নিশানায় কে? গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
রীতিমতো ‘যুদ্ধং দেহি’ মেজাজে কুণাল ঘোষ। শুক্রবার তিনি নাম না করে বিঁধেছেন ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর পরিচালক সনোজকুমার মিশ্রকে। কখনও তাঁর নিশানায় গায়ক অরিজিৎ সিংহ। তাঁর সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ানোর পর আচমকাই সমাজমাধ্যম থেকে ‘উধাও’ গায়ক। শনিবার ফের নিশানা বদলেছেন কুণাল। এ বার তাঁর লক্ষ্য আরজি কর মেডিক্যাল হাসপাতালের প্রতিবাদী মঞ্চে অবস্থানরত এক তরুণ অভিনেতা-চিকিৎসক। তাঁকেও নাম না করে বিঁধেছেন কুণাল। সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “এক তরুণতুর্কী ডাক্তার শোক দেখিয়ে কর্মবিরতির মিছিল করছে আর নিজের অভিনয় করা ওটিটি সিরিজ় দেখুন বলে পোস্ট করছে, নাটক চলবে?”
কাকে বিঁধলেন কুণাল? কেনই বা বিঁধলেন? সে কথাও তিনি লিখেছেন, “এক সিপিএমের ডাক্তার আমাকে জ্ঞান দিয়েছেন দেখলাম।” দাবি, ওই চিকিৎসক তাঁর শুক্রবার ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর বক্তব্য নিয়ে নাকি সমাজমাধ্যমে অযাচিত মন্তব্য করেছেন। তারই পাল্টা জবাব তিনি শনিবার সকালে দিলেন। শুক্রবার বিজেপির প্রচারধর্মী ছবি নিয়েও তাঁর প্রতিবাদের কারণ জানিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, “বাংলার বদনাম করা হিন্দি ছবিটির আমি প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু তার নাম কোনও পোস্টে লিখিনি। প্রবণতার প্রতিবাদ দরকার, নাম করে প্রচার নয়।” তবে নাম না করলেও তিনি কোন অভিনেতা-চিকিৎসককে বিঁধেছেন, সেটি সকলের কাছেই স্পষ্ট। শুক্রবার কিঞ্জল নন্দ তাঁর অভিনীত সিরিজ় ‘কাঁটায় কাঁটায়’-এর একটি লুক ভাগ করে নিয়েছিলেন সমাজমাধ্যমে। একই সঙ্গে তিনি সিরিজ়টি দেখারও অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কারণ, গোয়েন্দা কাহিনি থেকে তৈরি সিরিজ়ে পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় অপরাধ এবং তার শাস্তিবিধানের গল্প দেখিয়েছেন।
শুধু তাঁর বিরুদ্ধে মন্তব্য বা নিজের সিরিজ় নিয়ে প্রচারের কারণে কিঞ্জলকে বিঁধেই ক্ষান্ত হননি কুণাল। কিছু প্রশ্নও তুলেছেন। তাঁর জিজ্ঞাসা, “সরকারি হাসপাতালের কর্মবিরতি সমর্থনে মিছিল করে প্রাইভেট হাসপাতাল, নার্সিংহোম বা চেম্বার করা নীতিগত ভাবে ঠিক? ওড়িশায় হাসপাতালে ধর্ষণ করে ডাক্তার গ্রেফতার। আন্দোলন করবেন? কিংবা ডা. অনিতা দেওয়ান, বর্ণালি দত্ত ভুলে গেলেন?” কী জবাব দেবেন কিঞ্জল? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। শুক্রবার সমাজমাধ্যমে চিকিৎসক-অভিনেতার পোস্ট নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন খবর করেছিল। সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কুণালবাবু বোধহয় আমার পোস্ট পুরোটা পড়েননি। গতকাল যা বলেছি আজকেও তাই-ই বলব। একা আমি নই, আমাদের হাসপাতালের আন্দোলনরত প্রত্যেক চিকিৎসকের মানসিক দিক থেকে অস্তিত্ত্ব বিপন্ন। সারা ক্ষণ আমরা আমাদের নির্যাতনে মৃত বোনটিকে সঙ্গে নিয়ে চলেছি। অথচ সমস্যার সমাধান নেই। আমরাও তো রক্তমাংসের মানুষ!”
এই জায়গা থেকে কিঞ্জলের দাবি, আন্দোলনের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মাঝেমধ্যে বিষয়ান্তরে যেতে হয়। সেটাই করেছেন মাত্র। আন্দোলন থেকে সরে আসেননি। এ-ও জানান, আজ নয়, বরাবর তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ২০১৮-র এক নাটক তার উদাহরণ। সেই সময় ঘটে যাওয়া এক অন্যায়কে সেই নাটকে তুলে ধরা হয়েছিল। তিনি ওই নাটকে অভিনয় করেছিলেন। পাল্টা শ্লেষ চিকিৎসক-অভিনেতার কথাতেও। তাঁর কৌতূহল, প্রকৃত ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতেই কি কুণাল ঘোষ আসরে নেমেছেন?