রণজয় বিষ্ণু।
টানা ৯ বছর দূরে। ফের ফিরে আসা। রণজয় বিষ্ণু আবারও ছোট পর্দায়। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন ধারাবাহিক ‘গুড্ডি’ (নাম বদলাতে পারে)-তে তিনি আইপিএস অফিসার। একটু জেদি, অনেকটাই গোঁড়া! শ্যুটিং অঞ্চল থেকে ছবি পাঠিয়েছেন তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে। লাল টুকটুকে জ্যাকেটে মোড়া বিষ্ণু রীতিমতো তাপ ছড়িয়েছেন সাদা বরফের বুকে! পিছনে পাইন, ফারের বন। পায়ের নীচে খরস্রোতা নদী। ৩১ ডিসেম্বর দার্জিলিংয়ে শ্যুট উপলক্ষে পৌঁছে গিয়েছে ধারাবাহিকের দল। রণজয়ের শ্যুট-সঙ্গিনী হয়েছেন সোহিনী সরকারও। ছোট পর্দার নায়কের সহ-অভিনেতারাও তাবড়। সুদীপ মুখোপাধ্যায়, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, ‘ধ্রুব তারা’-র ‘তারা’ ওরফে শ্যামৌপ্তি, মধুরিমা বসাক, বিশ্বাবসু প্রমুখ।
কাহিনি, চিত্রনাট্যে লীনা। প্রযোজনায় ম্যাজিক মোমেন্টস। পরিচালনায় শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়। এত বছর ছোট পর্দা থেকে দূরে। ফের রাজি হলেন কেন? রণজয়ের উত্তর, ‘‘প্রথমত, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। দ্বিতীয়ত, চরিত্রের আকর্ষণ। এই ধারাবাহিকে আমি একটু কড়া ধাঁচের। অনেকটাই পুরনো মানসিকতার। আমার প্রথম বিয়ে খুবই স্বল্পকালীন। তার পরে ফের যার সঙ্গে বিয়ে হবে সে স্বভাবে আমার একেবারেই বিপরীত। আপাতত এটুকুই গল্প জানি। শ্যুট যত এগোবে, গল্প নিজে থেকেই ধরা দেবে।’’ সেই অনুযায়ী তাঁর প্রথম স্ত্রী মধুরিমা বসাক। যিনি ধারাবাহিক শ্রীময়ী, মোহর-এর দাপুটে খলনায়িকা। সম্প্রতি, তিনি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘এক্স ইক্যুয়াল্টু প্রেম’-এর নায়িকা। দ্বিতীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করছেন শ্যামৌপ্তি। অভিনেতার পর্দার বাবা সুদীপ মুখোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য অনুযায়ী তাঁরও দুই বিবাহ। তিনিও প্রথম বিয়েকে মন থেকে মুছতে পারেননি। ফলে, দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে সংসার পাতলেও মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। রণজয় কি পারবেন অতীত ভুলে নতুনকে আহ্বান জানাতে? হাল্কা হাসির সঙ্গে চটপটে জবাব, ‘‘সেটাই রহস্য। দেখা যাক।’’
শৈলশহরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এই মুহূর্তে হিমাঙ্কের নীচে। বরফের চাদরে মুখ ঢেকেছে কার্শিয়াং, টাকদার মতো পাহাড়ি এলাকা। সেখানেই সকাল থেকে সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত শ্যুটে পুরো দল। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফোনে যখন রণজয় কথা বলছেন, তাঁর গলা ঠান্ডায় রীতিমতো কাঁপছে! অভিনেতা কিন্তু পুরোটাই দারুণ উপভোগ করছেন। কারণ, তিনি পাহাড় ভালবাসেন। এই সুযোগে বেশ কিছু দিন তিনি পাহাড়ি অঞ্চলে। একই সঙ্গে শহরের অতিমারির ভয় থেকেও যেন অনেকটা দূরে।
বিষ্ণুর কথায়, ‘‘আমাদের ভাগ্য, এ বারের করোনা-স্ফীতি ততটাও ছাপ ফেলতে পারেনি। বড় জোর তিন-চার দিন অসুস্থ থাকার পরেই আক্রান্ত আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছেন। কিন্তু আতঙ্ক তো আছেই!’’ রণজয়ের কথায়, তাঁর বন্ধুরা কম-বেশি আক্রান্ত। ফল, সবাই সারাক্ষণ ‘কী হয় কী হয়’, এই চাপা দুশ্চিন্তায় কাঁটা। তিনি তুলনায় মুক্ত। প্রকৃতির কোলে খোলা হাওয়ায় শ্বাস নিতে পারছেন। শৈলশহরেও তা বলে নিয়ম-নিষেধের কমতি নেই। দার্জিলিং প্রশাসন নিরাপত্তার বেষ্টনিতে মুড়ে রেখেছে শ্যুটিং দলকে। তবুও যেন প্রকৃতি এখানে অনেকটাই খোলামেলা, দাবি অভিনেতার।