স্বস্তিকা দত্ত
আফসোস, মঞ্চে উঠে খুব কম পুরস্কার নিয়েছেন। সেই সাধ অনেকটাই পূরণ করে দিল জি বাংলার ‘সোনার সংসার অ্যাওয়ার্ড’। ‘সেরা মুখ’, ‘সেরা বৌ’, ‘সেরা জুটি’-র সম্মান নিয়েই খোলা রাস্তায় শোভনের আলিঙ্গনে স্বস্তিকা দত্ত! ‘বলব না’ ‘বলব না’ করেও সেই আনন্দ, অনেক না বলা কথা ভাগ করে নিলেন আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে।
প্রশ্ন: ইনস্টাগ্রামে ‘বাংলে কে পিছে’র সঙ্গে নাচ, চওড়া রাস্তায় শোভনের আলিঙ্গনে স্বস্তিকা...
স্বস্তিকা: (হেসে ফেলে) জীবনে পুরস্কার খুব কম পেয়েছি। স্কুলে গড়পরতা ছাত্রী ছিলাম। মঞ্চে উঠে পুরস্কার নেওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। তাই অপেক্ষা ছিল ওই মুহূর্তের, আমারও নাম ধরে ডাকা হবে। আমিও মঞ্চে উঠে পুরস্কার নেব। কাজের দুনিয়াতে হাতেগোনা সম্মানে সম্মানিত। তার মধ্যেও একটা ‘আলাদা’ ব্যাপার আছে। যেমন, তিন বছর আগে স্টার জলসা থেকে পেয়েছিলাম ‘সেরা স্টাইল আইকন’-এর সম্মান। এ বছর তিনটি সম্মানের মধ্যে একটি ওই ধারার। জি বাংলার ফেসবুক পেজের ‘সেরা জনপ্রিয় মুখ’ আমি! দেখলাম মা-বাবার পরেই নিঃস্বার্থ ভাবে খুশি হয়েছে শোভন গঙ্গোপাধ্যায়। তারই বহিঃপ্রকাশ ছবিতে।
প্রশ্ন: মা-বাবা কী বলছেন?
স্বস্তিকা: ওঁরা আমার ছোট ছোট সম্বর্ধনা, সম্মান, পুরস্কারেই খুশি। সেখানে তিন তিনটে অ্যাওয়ার্ড নিয়ে মেয়ে বাড়িতে ফিরেছে! প্রচণ্ড খুশি। তবে আমি যখন বাড়ি ফিরেছি, তখন ওঁরা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাই ফিরে তিনটে পুরস্কার ওঁদের পাশে সাজিয়ে রেখেছিলাম। যাতে সকালে ঘুম ভেঙেই প্রথমে আমার পুরস্কারগুলো দেখতে পান। মা-বাবা দেখার পর ঠাকুরের সিংহাসনের পাশে একটি জায়গায় সেগুলো সাজিয়ে রেখেছি।
প্রশ্ন: ‘পাওরি’ হবে?
স্বস্তিকা: আমার ‘পাওরি’ তো আমারই মতো। রোজ চিকেন স্টু খাই। মা সেটাই একটু বেশি মশলা দিয়ে রেঁধে দেবেন।(হাসি)
প্রশ্ন: শোভন আসবেন?
স্বস্তিকা: (একটু ভেবে) ‘হ্যাঁ’... না’। মানে ও সম্ভবত কাজের সূত্রে বাইরে থাকবে। তো...
প্রশ্ন: ‘সেরা বৌ’য়ের সম্মান পেয়েছেন। শোভন ভরসা পাচ্ছে?
স্বস্তিকা: ও শুনে বলল, কী রে ভাই! বৌ হয়ে গেলি? বরটা কে? আমিও বললাম, হ্যাঁ ভাই। যার ছিলাম তারই আছি।
প্রশ্ন: দুর্দান্ত... এক কথায় দু’কথা সারলেন!
স্বস্তিকা: আমরা এরকমই। আজ পর্যন্ত কোনও দিন আমরা একে অন্যকে সরাসরি কিচ্ছু বলিনি। কখনও আমরা ভুল করে সরাসরি কিছু বলে ফেললে কিছুক্ষণ পরে নিজেরাই আলোচনায় বসি, সে কী ভাই সরাসরি বলে দিলাম কথাটা! ছোট থেকেই আমি পরনিন্দা পরচর্চা পছন্দ করি না। তাই আমার প্রচুর ছেলে বন্ধু। কারণ, ছেলেরা নিন্দে কম করে। শোভন সেটা আরও কম করে। তা ছাড়া, টিপিক্যাল ‘কী রে বসেছিস’, ‘খেয়েছিস’--- এই ধরনের কথাও হয় না। কাজ, অন্য বিষয় নিয়ে দিনের শেষে বিশুদ্ধ আড্ডা দিই। এই কারণেই আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা এত গাঢ়।
পুরস্কার হাতে স্বস্তিকা
প্রশ্ন: শোভনের অনুরাগিনীর সংখ্যাও নেহাৎ মন্দ নয়...
স্বস্তিকা: (সঙ্গে সঙ্গে) আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি। ওর প্রচুর অনুরাগিনী। স্রেফ ওর কথা শুনে। শোভন ভীষণ ভাল কথা বলতে পারে। ও যদি এক বার মুখ খোলে, মেয়েরা পুরো ‘ফিদা’! তাই ওকে বলা আছে, যা বলবি আমায় বলবি। অন্য কাউকে সে রকম কিচ্ছু বলবি না। আমার চাপ হয়ে যাবে...।
প্রশ্ন: শোভন তা হলে ঠিক কোন পর্যায়ে? ‘হাফ বয়ফ্রেন্ড’?
স্বস্তিকা: চেনা ছকে আমাদের মাপতে গেলে সমস্যা আছে। ‘হাফ বয়ফ্রেন্ড’, ‘সোল মেট’, ‘বেটার হাফ’ নয় ও আমার। বিশুদ্ধ বাংলায় বলতে পারি, আমার জীবনের একটা ‘অংশ’। খুব তাড়াতাড়ি আমরা একে অন্যের হয়ে গিয়েছি। সেই ছাপ ছবিতেও পড়ে। সবাই যদিও বলেন, আমরা নাকি পিডিএ করছি। বলে বলুক...।
প্রশ্ন: পরস্পরের প্রতি এত নির্ভরশীল, ‘অতীত’ মুখোমুখি হলে অস্বস্তি হয়? দুর্নিবার সাহার বিয়েতে কিন্তু অতীত-বর্তমান এক ফ্রেমে আসেনি...স্বস্তিকা: কিসের অস্বস্তি? আমরা একে অন্যের সমস্ত ‘অতীত’ জানি। আমি শোভনের কথা যত জানি শোভন, তার থেকেও বেশি আমার কথা জানে। ও বেশি অতীত ঘাঁটতে পছন্দ করে না বলেই বলতে চায় না। আর দুর্নিবারের সঙ্গীতে আমরা বেশ তাড়াতাড়িই গিয়েছিলাম। আমার ‘সোনার সংসার’-এর মহড়া ছিল। ওর রেকর্ডিং ছিল। তাই ছবি তোলা হয়ে ওঠেনি। শোভন তো কথা বলেছে ওর প্রাক্তনের সঙ্গে। কোনও সমস্যা নেই তাতে।
প্রশ্ন: বৌ না হয়েও ‘সেরা বৌ’-এর সম্মান পাওয়ার রহস্য ফাঁস করবেন?
স্বস্তিকা: আগামী ১০ বছর পরে আমায় তো ভাল বৌ হতেই হবে। বলতে পারেন, তারই মহড়া দিয়ে নিচ্ছি ছোট পর্দায় ‘রাধিকা’ হয়ে। আর পুরো কৃতিত্ব কাহিনীকার-চিত্রনাট্যকারের। ওঁরা চরিত্রটাকে এত সুন্দর বুনে দিয়েছেন যে, দর্শকের কাছে সেটা গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। তাই সবাই মিলে ভোট দিয়ে সম্মান জানিয়েছেন।
প্রশ্ন: যে হারে অনুরাগিনীর সংখ্যা বাড়ছে শোভনের, ১০ বছর পর্যন্ত ফাঁকা থাকবেন তো?
স্বস্তিকা: আমরা যা ‘তার কাটা’, ১০ বছর পর্যন্ত নাও অপেক্ষা করতে পারি। আগামী ৩ বছরের মধ্যেও মা-বাবাদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি জোর দিয়ে এটাও বলছি, আমরা হাত ছেড়ে দেওয়ার জন্য একে অপরের হাত ধরিনি।