‘বিনোদিনী’ রুক্মিণী মৈত্রের সঙ্গে ‘ক্ষেত্রমণি’ ফিরদৌসি বসু। ছবি: সংগৃহীত।
ঈশ্বর যখন দেন তখন দু’হাত ভরে দেন। এই আপ্তবাক্য বড় পর্দার ‘ক্ষেত্রমণি’ ফিরদৌসী বসুর জীবনে এখন চরম সত্য। সদ্য মুক্তি পেয়েছে রুক্মিণী মৈত্র অভিনীত ছবি ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’। সেখানে তিনি রুক্মিণী তো বটেই, পর্দা ভাগ করেছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল বোস, অসীম রায়চৌধুরীর মতো শক্তিশালী অভিনেতাদের সঙ্গে। “রাস্তায় বেরোলে লোকে চিনতে পারছে। বলছে, তুমি ‘বিনোদিনী’র ‘ক্ষেত্রমণি’ না?”, খুশি গলায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন ফিরদৌসী। এখানেই কিন্তু তাঁর চলা শেষ নয়। দর্শকদের পাশাপাশি তাঁর অভিনয় রুক্মিণীকে এতটাই ছুঁয়েছে যে তিনি দেবের ‘রঘু ডাকাত’-এর দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যা হতে চলেছেন!
“রুক্মিণীদি আমার নাম অভিনেতা নির্বাচক সৃজা ভট্টাচার্যকে বলেন। আমায় বলেন, ‘তোমার নাম ওঁদের বলেছি। মনে হচ্ছে, একটা কিছু হয়ে যাবে’।” তার দিন দুই পরে সত্যিই একটা কিছু ঘটল। সৃজা ফোনে ফিরদৌসীকে জানান, দেব জানিয়েছেন, তিনি অভিনেত্রীকে তাঁর ডাকাত দলে নিতে চলেছেন! শীঘ্রই তাঁর অডিশন দেখবেন পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ মার্চের পর থেকে শুটিং শুরু।
‘ক্ষেত্রমণি’র চরিত্রে অভিনয়ের সময়েই কি বুঝেছিলেন, এ রকম কিছু ঘটতে পারে?
ফিরদৌসীর কথায়, “পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পাওয়ার পর খুব ভয় পেয়েছিলাম। একে দুই মলাটে সে ভাবে ক্ষেত্রমণির উল্লেখ নেই। এক মাত্র নটী বিনোদিনীর আত্মজীবনী ছাড়া। সেখানেও শুধু লেখা, নটী তাঁর সমসাময়িক প্রথম সারির নটীদের মধ্যে অন্যতম ক্ষেত্রমণির অভিনয় মুগ্ধ হয়ে দেখতেন। বাকিটা তৈরি করে দেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। আমি আর রুক্মিণীদি ওঁর কাছে তালিম নিয়েছিলাম।”
এটা ‘ক্ষেত্রমণি’তে অভিনয়ের গৌরচন্দ্রিকা। নির্দিষ্ট দিনে বিকেলে রুক্মিণীর সঙ্গে প্রথম অভিনয়। সেটে তাঁর ডাক পড়ল রাত ১২টায়। ফিরদৌসী বললেন, “চার জন পোড় খাওয়া অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে। সংলাপ মুখস্থ করে ফেলেছি। তবু সামনে চিত্রনাট্যের খাতা খোলা। যাতে একটি অক্ষরও ভুলে না যাই।” ছবির পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়ের উপদেশ সেই সময় তাঁর খুব কাজে এসেছিল। তিনি ‘ক্ষেত্রমণি’কে পরামর্শ দিয়েছিলেন, “ক্যামেরার সামনে যখন যাবি তখন মনে করবি, তুই-ই তারকা। তোর সমান আর কেউ নেই।” পরিচালকের এই পরামর্শ আঁকড়েই অভিনয় করেছেন বাকি দিন। জানিয়েছেন, এ ভাবেই ভয় কাটিয়ে উঠেছেন।
‘ক্ষেত্রমণি’ যখন লাস্যময়ী!
বাস্তবের রুক্মিণী কেমন? ফিরদৌসী উচ্ছ্বসিত তাঁকে নিয়ে। দাবি, “খুব মাটির কাছকাছি। প্রচণ্ড সহযোগিতা করতেন। প্রথম দিন থেকে এমন মিশেছেন, যেন মনে হয়েছে কত দিনের চেনা! ভাল অভিনয়ের পর জড়িয়ে ধরতেন।” দেব-রুক্মিণীর সংস্পর্শ মানেই একের পর এক বড় ছবিতে কাজের সুযোগ... কথা ফুরোতে না দিয়ে ফিরদৌসী জবাব দিলেন, “প্রার্থনা করুন তা-ই যেন হয়।”
এই ছবির আগে ফিরদৌসীর দু’টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির প্রতীক্ষায় আরও তিনটি ছবি। পাশাপাশি, ছোট পর্দায় ‘জলনূপুর’, ‘এক্কাদোক্কা’, ‘মঙ্গলচণ্ডী’র মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। সামনেই বিয়ে ‘ক্ষেত্রমণি’র। হবু শ্বশুরবাড়ি কি জানে, আপনি ডাকাত দলে নাম লেখাতে চলেছেন? উচ্ছ্বাস না চেপেই অকপট অভিনেত্রী, “বিয়ের পরেও অভিনয় করব, বলে দিয়েছি। দেবদার সঙ্গে কাজ করতে চলেছি, এত ভাল খবর চেপে রাখতে পারি?”