Papiya Adhikary

‘সায়নী খুব মিথ্যে কথা বলে, রচনা বোকা বোকা’, জয়ী তারকা প্রার্থীদের নিয়ে কী বললেন পাপিয়া?

ঠিক করে অঙ্কের হিসেব করে দেখলে বোঝা যাবে, আগের থেকে ভাল ফল করেছে বিজেপি। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন পাপিয়া।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ১৮:২৪
Share:

(বাঁ দিক থেকে) রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, পাপিয়া অধিকারী, সায়নী ঘোষ। ছবি-সংগৃহীত।

এগ্‌জ়িট পোলের হিসেব ছিল এক রকম। কিন্তু ফলাফল হল অন্য রকম। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের থেকেও আসন সংখ্যা কমল ভারতীয় জনতা পার্টির। কিন্তু অভিনেত্রী তথা গেরুয়া শিবিরের নেত্রী পাপিয়া অধিকারীর দাবি, গত বারের থেকে ভাল ফল করেছে বিজেপি।

Advertisement

ঠিক করে অঙ্কের হিসেব করে দেখলে বোঝা যাবে, আগের থেকে ভাল ফল করেছে বিজেপি। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন পাপিয়া। তিনি বলেন, ‘‘শতাংশের হিসাবে আমাদের ভোটের সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে। তৃণমূলের কমেছে। আরও ভাল করে কাজ করলে পরবর্তী কালে বিজেপি জিতবে। আমি আশাবাদী।’’

কিন্তু আসনসংখ্যা আগের থেকে কমল কেন? এই প্রশ্ন করতেই ভোটগণনা ঠিক করে হয়েছে কি না, প্রশ্ন তোলেন পাপিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘ভোটগণনায় কী হয়, আমি দেখেছি। বিধানসভা নির্বাচনে আমি প্রার্থী ছিলাম। তখন দেখেছি, কী পরিমাণে দুর্নীতি হয়। খুব হইচই, চিৎকার চেঁচামেচি হয়। একটা সভ্য দেশে এমন হতে পারে, ভাবাই যায় না। আর সবাই বলছেন, পদ্ম চিহ্নে ভোট দিয়েছেন। তা হলে ভোটগুলো ম্যাজিক হয়ে কোথায় চলে যাচ্ছে! ২০২১-এও এটাই হয়েছিল।’’

Advertisement

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব, সায়নী ঘোষ, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মাল্যদের উপর বিশেষ নজর ছিল মানুষের। এঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। তাঁদের প্রসঙ্গে পাপিয়া বলেন, ‘‘দুই নৌকায় পা দিয়ে কাজ হয় না। বসিরহাটে সাংসদ ছিল নুসরত। ও তো কোনও কাজ জানতই না। আজ রচনার ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ খুবই সফল। ও বন্ধু হয়। কিন্তু কেমন বোকা বোকা কথা বলেছিল—‘ধোঁয়া’, ‘দই’ ইত্যাদি। আসলে ও তো অভিনয়টাই করেছে। লেখাপড়া কত দূর করেছে, জানা নেই।’’

যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। তাঁর সম্পর্কে পাপিয়া বলেন, ‘‘সায়নী বলেন, তিনি নাকি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। আমিও কিন্তু ওই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে পড়াশোনা করেছি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সায়নী ঘোষ নামে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ পড়াশোনা করেননি। কোনও নাম নেই। এত মিথ্যে কথা বলেন! তিনি তো হাওয়াই চটি পরে আর মিথ্যে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রীকে নকল করছেন। তিনি খুবই অভব্য কিছু কথা বলেছেন আগেও সনাতন ধর্ম নিয়ে।’’ ঘাটাল থেকে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী দেবের সম্পর্কে পাপিয়া বলেন, ‘‘দেবকে খুবই পছন্দ করি, কারণ ছবির জন্য ও অনেক কিছু ভাবছে। কিন্তু ও পর্যন্ত বলছে, মোদীজি রামমন্দির ছাড়া আর কী করেছেন? ওরা কি কিছুই খোঁজ রাখে না?’’

পাপিয়ার মতে, তারকাদের খ্যাতির জন্যই রাজনীতিতে নিয়ে আসা হয়। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘তারকাদের নিয়ে আসা হয় এই ভেবে যে, তাঁদের বাহারি ঔজ্জ্বল্য দেখে মানুষ ভোট দেবে। কিন্তু ওরা জেতার পর সব ভুলে যায়। ওরা আইনপ্রণেতা হবে? ওরা সনাতন ধর্মের ব্যাপারে জানে না। ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে না জানলে কি ওরা নিজেদের ভারতীয়ও বলতে পারে? শুধু সংসদে গিয়ে নিজস্বী তুলবে!’’

তা হলে কি মণ্ডী থেকে বিজেপির প্রার্থী অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য? সঙ্গে সঙ্গে পাপিয়া বলেন, ‘‘ওর যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে। ওর কথা শুনলেই বোঝা যায়, ও রাজনীতি বোঝে। কী ভাবে নিজেকে রাজনীতির ময়দানে তুলে ধরতে হয়, ও জানে। কিন্তু এখানকার তারকারা জানেই না কিছু।’’

তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে পাপিয়া দাবি করেছেন, ধর্ম নিয়ে সবচেয়ে বেশি রাজনীতি করেছে তৃণমূল। অভিনেত্রী অভিনেত্রী বলেন, ‘‘ইমামকে ভাতা কে দিয়েছে? আবার পুরোহিতকে ভাতা কে দিয়েছে? ধর্মের নামে রাজনীতি তা হলে কে করছে! এই রামমন্দির যুগের পর যুগ ধরে আমাদের স্মৃতিতে ছিল। আগামী দিনেও এই রামমন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার কথা আমাদের স্মৃতিতে থেকে যাবে।’’ কিন্তু সেই রামরাজ্য অর্থাৎ অযোধ্যা বা ফৈজাবাদে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। অভিনেত্রীর দাবি, সেখানে বহু মুসলিম ভোট রয়েছে, যা বিপক্ষে গিয়েছে অথবা মানুষের বুঝতে ভুল হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement