অনুরাধা মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, তিনি কালী ভক্ত, তার মানেই তিনি কালা কালাজাদু অভ্যেস করেন, এমনটা না। এই বক্তব্যের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের শিকার হলেন অভিনেত্রী অনুরাধা মুখোপাধ্যায়। সুশান্তের মৃত্যু তদন্তে গোটা দেশ যখন রিয়া চক্রবর্তীর সঠিক ভূমিকা জানতে উৎসুক তখনই রাতারাতি ‘ভিলেন’ বাঙালি মেয়েরা। উড়ে আসছে ট্রোল, ঘুরে বেড়াচ্ছে মিম। বাঙালি মেয়ে মানেই ‘কালাজাদুতে সিদ্ধহস্ত’, ‘লোভী’ ইত্যাদি মন্তব্যে ভরে উঠেছে ফেসবুকের দেওয়াল। নুসরত জাহান এবং স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের পর এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হলেন অনুরাধা। তাঁর পোস্টের তলায় নেটাগরিকদের একাংশ লিখতে শুরু করেন, ‘‘তুমি, রিয়া, বাঙালি মেয়েরা সব এক রকম। কালাজাদু করে। ছেলেদের বশ করে। টাকার লোভে। বাঙালি মেয়েদের এড়িয়ে চলাই ভাল।’’
আর এক জনের বক্তব্য, ‘‘এক জন বাঙালি মেয়ে হয়ে প্লিজ রিয়াকে গাইড কর। বল একটু নরম হতে। রিয়া তুমি কালাজাদু করে পার পাবে না। তোমরা সোনার খনি খুঁজে লোক ঠকাও।’’
অনুরাধা ঠিক করেছেন, তিনি সাইবার ক্রাইমে এই ট্রোলিং-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবেন। ‘‘এই সময় সাইবার বুলিং এত বেড়েছে যে, যার যা মনে হচ্ছে ভাবনাচিন্তা না করেই বলে বসছে’’, আনন্দবাজার ডিজিটালকে এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অনুরাধা।
আরও পড়ুন: সুশান্তের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ বিহার সরকারের
শুধু এই বার নয়, ২০১৪-র ফেব্রুয়ারিতে প্রথম মুম্বই গিয়েছিলেন অনুরাধা। ওই বছরেরই ডিসেম্বর থেকে পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করেন সেখানে। প্রথম ছবি মরাঠিতে, ‘জানিবা’। মহেশ মঞ্জরেকরের ছেলে সত্য মঞ্জরেকরের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন। অনুরাধা বললেন, ‘‘সে সময়ে মরাঠি ছবির ইপি আমায় বলেছিলেন, আপনি তো বাঙালি, আপনি কালাজাদু অভ্যেস করেন? আমরা তো শুনেছি বাঙালি মেয়েরা দারুণ কালাজাদু জানে!’’ এই মানসিকতা এত দিন পরে ফিরবে, ভাবেননি অনুরাধা!
২০১৬-তে হিন্দি ছবি ‘ডেজ অব অক্টোবর’-এ কাজ করেন তিনি। ২০১৭-এ ‘পঞ্চলেট’। কিন্তু কলকাতার মেয়ের সিভিতে তত দিনেও বাংলা ছবি ছিল না। সুযোগ এসেছিল পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিকের হাত ধরে। তাঁর পরিচালিত ‘সোয়েটার’ অনুরাধার প্রথম বাংলা ছবি। লকডাউন না থাকলে ইন্দ্রাশিস আচার্য-র নতুন ছবি ‘মায়া ভয়’-এর কাজ শুরু করতেন অনুরাধা। এ ছাড়াও অর্জুন দত্তের ‘গুলদস্তা’ ছবিতে তাঁকে দেখা যাবে।
আরও পড়ুন: অবসাদে ভুগছিল রিয়াও, দাবি মুম্বই পুলিশের
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। সুশান্তের দিদি মিতু সিংহ অভিযোগ আনেন, তাঁর ভাইয়ের উপর কালাজাদু করতেন রিয়া। মিতুর বন্ধু স্মিতা পারিখও এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “রিয়া আমায় জানিয়েছিল, ওর প্রিয় বন্ধু বেশ কয়েক বছর আগে মারা যায়। কিন্তু সেই বন্ধুর আত্মা নাকি সবসময় রিয়ার সঙ্গেই থাকত। বিভিন্ন বিপদে রিয়াকে রক্ষা করত। এমনকি, কেউ রিয়ার অনিষ্ট চাইলে তাকে শেষ করে দিত রিয়ার বন্ধুর সেই অতৃপ্ত আত্মা।”
সেই থেকে ধরেই নেওয়া হয় রিয়ার মতো সব বাঙালি মেয়েরা কালাজাদু করে পুরুষকে বশ করতে পারে। এ বার বাদ পড়লেন না অনুরাধা মুখোপাধ্যায়ও।