টোটা
টোটা রায়চৌধুরীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল প্রদীপ সরকারের ছবি ‘হেলিকপ্টার ইলা’ নিয়ে। এই ছবিতে ইলা ওরফে কাজলের বয়ফ্রেন্ড এবং স্বামী বিক্রমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন টোটা। আর ইলার ছেলে ভিভানের চরিত্রে ঋদ্ধি সেন। শুটিংয়ের সবচেয়ে মজাদার অভিজ্ঞতাটা দিয়ে টোটা শুরু করলেন কথা।
‘‘দক্ষিণ মুম্বই অনেকটা কলকাতার ডালহৌসি পাড়ার মতো। অনেক পুরনো আর্কিটেকচার আছে। তাই ওই জায়গাটা দাদা (প্রদীপ সরকার) ভারী পছন্দ করেন। দিনের বেলা শুটিং ছিল। শটটা ছিল, পিছনে কাজলকে নিয়ে আমি মোটরসাইকেল চালাচ্ছি। ট্র্যাফিক ও মোটরসাইকেলের আওয়াজের ফাঁকে যাতে আমরা ইনস্ট্রাকশন শুনতে পাই, তাই তিনি মাইক ব্যবহার করছিলেন। সবই ঠিক চলছিল। হঠাৎ সকলকে চমকে দিয়ে দাদা মাইকে গেয়ে উঠলেন, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়। তবে কেমন হতো তুমি বল তো...’’ প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও দাদার কীর্তি দেখে আমি হাসি চাপতে পারলাম না। দাদার কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। উনি গেয়েই চলেছেন! কাজল গানটা বুঝতে না পারলেও দাদার রকমসকম দেখে হেসে খুন। আমরা হাসতে হাসতেই সংলাপ বলে গেলাম...’’ আপনাদের হাসানোর জন্যই কি প্রদীপ সরকার গেয়ে উঠলেন? মাথা নাড়িয়ে টোটা বললেন, ‘‘না। মোটরসাইকেলে নায়ক-নায়িকার দৃশ্য মানেই বাঙালিকে উত্তম-সুচিত্রার ‘সপ্তপদী’র কথা মনে করিয়ে দেয়। দাদাও বাদ নন,’’ হাসির রেশ টোটার মুখে।
বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতে কাজ করার পরে বলিউড এখন টোটার পরিচিত পরিসর। কিন্তু তাঁর মতে, ‘হেলিকপ্টার ইলা’ কেরিয়ারের একটা বেঞ্চমার্ক। বেশ কয়েক বছর আগে টোটার হিন্দি ছবিতে ফিতে কাটার কথা ছিল প্রদীর সরকারের ছবি দিয়েই। কিন্তু চুক্তিপত্রে সই করার আগে চরিত্রটির বয়স বদলে যাওয়ায় করা হয়নি। কিন্তু পরিচালক কথা দিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে টোটার সঙ্গে কাজ করবেন। পরিচালকের উপরে রাগ হয়নি? ‘‘আমি মানানসই কাস্ট ছিলাম না। সুতরাং সেটা নিয়ে দুঃখ নেই। কিন্তু দাদা কথা রেখেছেন।’’ আপনি যে কাজলের বিগ ফ্যান, সেটা ওঁকে বলতে পেরেছিলেন? ‘‘বলেছিলাম, তবে একদম শেষ দিনে। আগে বললে হয়তো হ্যাংলা ভাবত,’’ হাসতে হাসতে তিনি আরও বললেন, ‘‘কাজলের ব্যক্তিত্ব, মেজাজ সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল ছিলাম। তাই একটু দূরত্ব রেখেই চলতাম। ও দশ ঘণ্টার বেশি সেটে থাকত না। স্বামীর প্রোডাকশন বলে রেয়াত করেনি। কিন্তু যখন প্রয়োজন হয়েছে দু’-এক ঘণ্টা অতিরিক্ত থেকেছে। আমার কিউ কাজল দিত আর কাজলেরটা আমি। এটা ও প্রথম দিনেই আমাকে বলেছিল। এতে নাকি অভিব্যক্তি ভাল ফুটে ওঠে। কাজল এক কথায় ওয়র্ক ফ্রেন্ডলি। আর সেটা খুব সুবিধে হয়েছিল। শেষ দিন যখন বলেছিলাম ওর তামিল ছবিও আমি দেখেছি, বেশ অবাক হয়ে বলেছিল, তুমি আমার সব ছবি দেখেছ?’’
‘হেলিকপ্টার ইলা’র দৃশ্য
প্রদীপ সরকারের ছবি বা বিজ্ঞাপনের শুটিং মানেই বাঙালিদের সমাবেশ। ‘‘হ্যাঁ ঠিকই। আমি তো ঋদ্ধিকে বলতাম, ‘ছোট ভাই, বাংলার সম্মান কিন্তু আমাদের হাতে। ছবির রাফ কাট দেখে অজয় দেবগণ পরিচালককে বলেছিলেন, আপনার দুই ক্যান্ডিডেট (আমি ও ঋদ্ধি) পাশ করে গিয়েছে,’’ বললেন টোটা।